নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে কক্সবাজারের ডেকোরেটর শ্রমিকের পরিবারে

শাহীন মাহমুদ শাহীন মাহমুদ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২০ 355 views
শেয়ার করুন
কক্সবাজারে ডেকোরেটর মালিক ও শ্রমিকের জীবন-জীবিকা করোনায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। জেলার প্রায় ২০০ ডেকোরেটর (এরমধ্যে সদরে ৪০টি) মালিক ও শ্রমিকের পরিবার চরম আর্থিক সংকটে দিনাতিপাত করছে।
করোনা ভাইরাসের কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে। কোনো কিছুই স্বাভাবিক ছন্দে চলছে না। বাদ পড়ার তালিকায় ঢুকে পড়েছে সব ধরনের অনুষ্ঠান। জমায়েত ছাড়া আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব নয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ডেকারেটর ব্যবসা। থমকে গেছে থমকে গেছে জীবনজীবিকা, পরিবারে চলছে নীরব দূর্ভিক্ষ।
অন্যসব ব্যবসায়ীদের মতো বিপাকে পড়েছেন ডেকারেটর মালিকরাও। এ কারনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা সরকারের নিকট প্রণোদনার আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, জেলায় প্রায় ২০০ জন ডেকোরেটর ব্যবসায়ী আছেন। করোনার ভয়াল থাবায় রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নানা আয়োজন বন্ধ হয়ে গেছে। চার মাস ধরে প্রতিষ্ঠান বন্ধ, নেই কোনো কার্যক্রম। অনেকেরই ডেকোরেটর মালামাল ভাড়া করা জায়গায় রাখার কারণে প্রতি মাসে টানতে হচ্ছে মাসিক ভাড়া। করোনার কারণে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশে সকল প্রকার ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ডেকোরেটরের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়।
ইতোমধ্যেই সরকারিভাবে অনেকেই প্রণোদনা পেলেও ডেকোরেটর ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের প্রণোদনা বা সহযোগিতা পাননি। বর্তমানে তাদের পক্ষে পরিবারের খরচ, দোকান ভাড়া, গোডাউন ভাড়া, শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে একদিকে পরিবার অপরদিকে গোডাউন ও দোকান ভাড়া সবকিছু মিলিয়ে তাদের জীবন নাজেহাল।
এ অবস্থায় প্রতিটি দোকানে পড়ে থাকা বিভিন্ন কাঠের পণ্য সামগ্রী নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ডেকোরেটর ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে কমপক্ষে দেড় হাজার মালিক শ্রমিক। কাজ না থাকায় এসব শ্রমিকদের পরিবারে চলছে চরম দুর্দিন।
কক্সবাজার জেলা ডেকোরেটর মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ জানান, একটি ডেকোরেটর দোকান চালু করতে কমপক্ষে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। কিন্তু ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদের ব্যাংক থেকে এ বাবদ কোনো ধরনের ঋণ বা সুবিধা দেওয়া হয় না। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তাদের সহযোগিতার মাধ্যমে এই সেবা খাতকে টিকিয়ে রাখতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তারা।
কক্সবাজার জেলা ডেকোরেটর মালিক সমিতির সভাপতি জামাল হোসেন মনু জানান, জেলার ২শ জন ডেকোরেটর মালিকের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পথ এই ব্যবসা। দীর্ঘদিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলো বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটে পড়েছেন। ফলে এসব পরিবারের লোকজন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এ কারণে সরকারের কাছে প্রনোদনা চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরের নিকট লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে সীমিত আকারে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আবারো শুরু করা গেলে কিছুটা হলেও এ পেশার মানুষদের মাঝে স্বস্তি ফিরবে। ডেকোরেটর মালিকদের দাবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে বিশেষ প্রণোদনা দিচ্ছেন এতে এ পেশার সঙ্গে জড়িতদের সম্পৃক্ত করলে বিশেষ উপকৃত হবেন তারা।