কোভিড-১৯এ ব্রিটেনে এক ব্যতিক্রমী ঈদ

প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২০ 485 views
শেয়ার করুন

বিশ্বজুড়ে করোনা আতঙ্কের মধ্যেই এবার ব্রিটেনে পালন করলাম এক ব্যতিক্রমী পবিত্র ঈদুল ফিতর। ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো মুসলমানরা মসজিদ কিংবা খুলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারেন নি। যেতে পারেন নি আত্মীয়-স্বজনের ঘরে। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা শেষে সারা বিশ্বের মতো ব্রিটেনের মুসলিমদের জীবনেও ঈদ উল ফিতর আনন্দ আর খুশি বয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) কারনে এবারের ঈদের আনন্দ ছিলো অন্যান্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম। এবার ব্রিটেনের মুসলিমদের ছিলো না দল বেঁধে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়া, ছিলো না নামাজ শেষে মুসলিম ঐতিহ্য অনুযায়ী একে অপরের সাথে কুলাকুলি, ছিলোনা পরিবার পরিজন নিয়ে একে ওপরের বাসায় গিয়ে আমুদ ফুর্তি করা, খাওয়া দাওয়া করা, নেই সেই আনন্দ উল্লাস। ঈদের নামাজ এবং খাবারের বিশেষ আয়োজন হলেও সবই ছিলো চার দেয়ালের ভেতর, পারিবারিক গন্ডিতেই।

ব্রিটেন সরকার, মুসলিমদের অন্যতম আমব্রেলা সংগঠন মুসলিম কাউন্সিল অফ ব্রিটেন এর সেক্রেটারি জেনারেল হারুন খান, মসজিদ ভিত্তিক সংগঠন কাউন্সিল অফ মস্ক টাওয়ার হ্যামলেটস এর চেয়ারম্যান মাওলানা শামসুল হক, ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও লন্ডন মুসলিম সেন্টার এর চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ও বিভিন্ন ইসলামিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দর পক্ষ থেকে করোনা বিস্তার ঠেকাতে জনগণকে ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের নির্দেশনা মেনে দেশটির মুসলমানরা এ বছর ঘরেই ঈদের নামাজ পড়েছে ৷ করোনা ভাইরাস এবার অন্যরকম এক ঈদ উদযাপন করছে ব্রিটেনের মুসলিম সম্প্রদায়। এখানে উল্লেখ মহামারী করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় মার্চের ১৯ তারিখ থেকেই লন্ডনে মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র স্থান মসজিদগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। ব্রিটিশ সরকার দেশটির মুসলমানদের এ বছর ঘরেই ঈদের নামাজ পড়ার আহ্বান জানিয়েছে৷ দেশটিতে এই প্রথম ঈদের জামাত হচ্ছে না বলে অনেক দুঃখ ও ব্যাতিথ হয়েছেন ধর্মীয়প্রাণ মানুষ । রবিবার ২৪ মে ব্রিটেনসহ ইউরোপে উদযাপিত হয়েছে অন্যরকম এক ঈদ। এই ঈদে যেন কোন প্রাণ ছিল না, ছিলোনা আমুদ ফুর্তি, উল্লাস।সবার সতর্কতার জন্য যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঘরে থেকে নিজ নিজ পরিবারের সাথে নিরাপদে এবারের ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন।পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে যুক্তরাজ্য প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য দেয়া এক শুভেচ্ছা বাণীতে এই অহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,“এই ঈদুল ফিতরে আমি প্রত্যাশা করি,আপনারা সবাই ঘরে বসে এবার ঈদের নামজ আদায় করবেন এবং মহান আল্লাহ তা’লার কাছে প্রার্থনা করবেন তিনি যেন বিশ্বকে খুব তাড়াতাড়ি ভয়াল করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত করেন যাতে আমরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরত যেতে পারি।”

প্রায় দুই হাজার মসজিদ অধ্যুষিত ব্রিটেনে প্রায় ৪৫ লাখ মুসলিমের বাস।বাংলাদেশীদের অধ্যুষিত বাংলা পাড়া খ্যাত পূর্ব লন্ডনের শুধু টাওয়ার হ্যামলেটসে প্রায় অর্ধ শত মসজিদ ও প্রায় তিন লক্ষ দশ হাজার মুসলিম বসবাস করেন এবং এই টাওয়ার হ্যামলেটসে সবচেয়ে বেশি ঈদ উৎসব পালন করা হয়, এ ছাড়াও রাজধানী লন্ডন, বার্মিংহাম, ওল্ডহ্যাম, লুটন, ব্র্যাডফোর্ড, বল্টন, প্রোস্টমাউথ, ব্রাইটন, সোয়ানসিসহ কয়েকটি শহর মুসলিম অধ্যুষিত। আর সেসব শহরে তুলনামুলক বেশি মসজিদ থাকায় ঈদের নামাজ শেষে ওসব এলাকায় তৈরী হতো এক ভিন্ন পরিবেশের। বিশেষ করি লন্ডনে বাংলাদেশী মুসলিমদের সব চেয়ে বড় ঈদের জামাত হয় ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও লন্ডন মুসলিম সেন্টার, ব্রিকলেন জামে মসজিদ, মাইল্ড এন্ড স্টেডিয়াম, রেডব্রীজের ভেলেনটেন্ট পার্ক ও বার্মিংহাম এর একটি পার্কে l সারা বিশ্বের মতো ব্রিটেনেও করোনার করুন থাবায় প্রায় দুই মাস লকডাউনে আটকে আছে এখানকার মানুষ। একারনে এখানকার মুসলমানরা এবারের ঈদে এবং রমজানেও যেতে পারেনি মসজিদে l

মানুষের আঁকড়ে পড়া ভিড়ের কারণে প্রতি বছর ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও লন্ডন মুসলিম সেন্টারে প্রায় পাঁচটি ঈদ জামাতের আয়োজন করা হয় । একসাথে ৮-১০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান নামাজ আদায় করতেন। সেখানে থাকতো আলাদা সরগরম l বাঙালি, সুমালী, এরাবিয়ান, পাকিস্তানি, মরক্ষণ, আলজেরিয়ান, আফ্রিকান প্রভৃতি মুসলমানদের সমাগমে ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও লন্ডন মুসলিম সেন্টারের আঁশেপাশের এলাকা অন্য এক ভিন্ন রূপে রূপান্তিত হয়, কিছু সময়ের জন্য মনে হতো সৌদিআরব অথবা অন্য কুনো মুসলিম দেশের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, কাবা শরীফের আমেজ পাওয়া যেত । ভিন্ন স্বাদের খাবার স্টল ও শিশুদের বিনোদনের জন্য অনেক আয়োজন হয় মসজিদের বাইরে l প্রতিবছর আমি ও ভোর থেকে জোহর পর্যন্ত সেখানে থাকতে বাধ্য হই মসজিদের পক্ষ থেকে কিছু দায়িত্ব পালন করার জন্য l ইস্ট লন্ডন মসজিদের সাথে বিভিন্ন ভাবে আমরা জড়িত, আমার আব্বা একসময় মসজিদ কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন, আমার ভাই বোনেরা মসজিদের মক্তবে লেখাপড়া করেছে, আমিও সেই ১৯৮৫ সালের ১২ জুলাই শুক্রবার ( নতুন ইস্ট লন্ডন মসজিদ উদ্ভোধন করেন কাবা শরীফের ঈমাম ) থেকে ভিবিন্ন ভাবে জড়িত মসজিদের একজন খাদিম হিসাবে l যদিও এই মসজিদের ইতিহাস প্রায় ১১০ বছরের পুরাতন l ১৯৮৫ সাল থেকে এই মসজিদের একজন খাদিম ( ভলান্টিয়ার ) হিসাবে বহুমুখী দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি, কিন্তু এবার সকল প্রকার দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত মসজিদ বন্ধ থাকার কারণে l আমার মতো আরো অনেকের সেই আফসুস রয়ে যাবে, ভয়াল করোনা ভাইরাসে আমরা সবাই এবারের ব্যতিক্রমধর্মী ঈদ পালনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এক ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলাম। গত ১১ বছর যাবৎ সর্বশেষ ঈদের জামাত শেষে ইস্ট লন্ডন মসজিদের পাশেই ঐতিহাসিক ক্যাসাব্লান্কা ও আলাউদ্দিনে লন্ডনের প্রিয় সাংবাদিকদের উপস্থিতে ঈদ উৎসব ও ঈদের কেক কাঁটা একটি ব্যতিক্রমী অনুষ্টানের আয়োজন করা হতো, যেখানে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের প্রেসিডেন্টসহ অনেক সদস্যরা স্বশরীরে উপস্থিত থেকে অনেক আমোদ ফুর্তি করতেন, যার যার ইচ্ছেমতো চলতো সেলফি ও ফোট তোলা, টেলিভিশনে ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সাক্ষাৎ দিয়ে সবাই মন ভরে আনন্দ উল্লাস করতেন, সে এক অন্যরকম ঈদ উৎসব l এবার ঈদ অনুষ্ঠানের কথা কল্পনাও করা যায় নি, সবকিছু মিস করছি, বিরাট পরিবর্তন এবারের ঈদ l তবে দুপুরে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সদস্য, তরুণ সাংবাদিক ছোট ভাই তানিম, ফটো সাংবাদিক পাক্কু ও খালেদের আমন্ত্রণে সোসিয়াল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রেস ক্লাবের সদস্যদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে অনেকটা আনন্দ ফুর্তি করে কিছুটা হলেও তৃপ্তি মিঠিয়েছি l

এছাড়াও আমাদের আরেকটি ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি গ্রুপ আছে, যাদের সাথে দীর্ঘ ত্রিশ/পঁয়ত্রিশ বছর যাবৎ গভীর সম্পর্ক গড়েছে নিজের পরিবারের মতো, তাদের অনেকের সাথেই ব্রিটেনের প্রথম জামানার বন্ধুত্ব, তারা আমার আত্নার আত্নীয় l সেই থেকেই আমরা একে অন্যকে গ্রহণ করেছি নিখুঁত ভালোবাসা দিয়ে, তাদের মধ্যে অন্যতম সেলিম উদ্দিন, ফারুক আহমেদ রনি, আবু তাহের, শামসুল হক এহিয়া, হেলাল উদ্দিন, শাহেদ চৌধুরী, সৈয়দা তুহিন চৌধুরী, সৈয়দা নাজমিন হক, নজরুল আলম আনাই, নোমান চৌধুরী, হাসান তছদীক রুহেল, ফারুক আহমেদ, নজমুল হোসেন প্রমুখ l এবার প্রিয় হেলাল ভাই সেই প্রিয়জনদের সাথে ও ডিজিটাল ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে আনন্দ ফুর্তি করার সুযোগ করে দিলেন l

কয়েকজন দ্বীনি ভাইদের নিয়ে “ম্যাড এন্ড কো:” নামে একটি গ্রুপ আছে, যাদের সাথে দীর্ঘ তিন যুগ যাবৎ ইয়ং মুসলিম অৰ্গেনাইজেশন ইউ কে, ইসলামিক ফোরাম ইউরোপসহ বিভিন্ন দাওয়াতী সংগঠনের মাধ্যমে দ্বীনের দাওয়াতী কাজ করে যাচ্ছি এবং ঈদের দিন ও অন্যান অকেশনে ইউরোপের সর্ববৃহৎ ইসলামিক প্রতিষ্টান ইস্ট লন্ডন মসজিদের ভিতর বিভিন্ন সেবামূলক কাজ ও অন্যান দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি, এছাড়াও মাঝে মধ্যে ডে আউটিং ও দেশের বাইরে কুথাও বেড়ানো ছিল আমাদের চিরাচরিত নিয়ম l এবার কোভিড-১৯এ ব্রিটেনে এক ব্যতিক্রমী ঈদে সেই “ম্যাড এন্ড কো:” গ্রূপের প্রিয় ভাই আব্দুল মালিক, নিজাম উদ্দিন, সাহার আলী, মুহিব রহমানী, কয়সর রহমান, সিরাজুল ইসলাম এর সাথে পবিত্র ঈদের কুলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় হয়নি, অথচ ঈদের দিন ইস্ট লন্ডন মসজিদে আমাদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ না হলে মনে হত যেন ঈদের খুশি অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে l

আমার একমাত্র সমনদিক ও শালিকা ( স্ত্রীর বড় ভাই ও বোন ) সারে গিলফোর্ড এলাকায় বস বাস করেন পরিবার নিয়ে। প্রায় দুই মাস লকডাউনের সময় বাসা থেকে বের হইনি এবং তাদের কারো সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়নি । স্ত্রীর অনুরোধে ঈদে তাদের দেখার জন্য বাসা থেকে সপরিবারে বেড়াতে গেলেও, প্রিয় সমনদিকের বাসায় প্রবেশ করিনি ! তাদের গার্ডেনে বসে ( বাহির থেকে গার্ডেনে ঢুকার রাস্তা আছে ) সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে দু’পরিবারের ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে ফিরে আসি নিজের বাসায়, এভাবে আরো অনেকেই লন্ডনে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আমার একমাত্র ভাই জাহেদ ও বোন রুহির সাথে ইতিমিধ্যে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে একাধিকবার দেখা সাক্ষাৎ হওয়ায় ঈদের দিন তেমন সমস্যা হয়নি l ভাগনি ফারজুও সুদূর কেমব্রিজ থেকে চলে আসে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে l সাধারণত প্রতি ঈদের দিন দুপুর শেষে মসজিদের দায়িত্ব পালন করার পর বাসায় ফিরে পরিবার নিয়ে একসাথে খাওয়া দাওয়া করে আমার জন্মদাতা পিতা মাতার শিখানো চিরাচরিত নিয়ম মাফিক আমার ১০/১২ জন মুরব্বি, চাচি, ফুফু, খালা, চাচাতো ভাই বোন, ফুফাতো ভাই বোনদের বাসায় বেড়াতে যাই এবং ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে তাদের দোয়া নেই, যা গত তিন যোগ ধরে পালন করে আসছি, কিন্তু এবার তা ও করা সম্ভব না হওয়ায় অবশেষে সোসিয়াল মিডিয়ার মাধ্যমে সেই প্রিয়জনদের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করে কিছুটা দায়মুক্ত হই l

ব্রিটেনের অনেকগুলি মসজিদে নারী পুরুষের নামাজের ব্যবস্থা আছে। তাই ঈদের দিন যখন ঐতিহ্যবাহী মুসলিম পোশাকে নারী -পুরুষ একসাথে ঈদ জামাতের উদ্দেশ্যে মসজিদে যেতো এবং নামাজ শেষে বাসায় ফিরতো তখন মনে হতো ওসব এলাকা মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ। অনেক শহরে খোলা মাঠে ও পার্কে ঈদের নামাজের ব্যবস্থা থাকায় সেসব এলাকা মুসলিম মিলনমেলায় পরিণত হতো। টিভি চ্যানেল ও মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা ঘুরপাক করতেন, ব্যস্থ থাকতেন স্থানীয় মন্ত্রী, এম পি, মেয়র, হাইকমিশনার, কাউন্সিলার, ব্যবসায়ী, ঈমাম, ইসলামিক স্কলার, রাজনীতিবিদ, বিভিন্ন পেশাদার ও কমিনিটি নেতাদের ঈদের শুভেচ্ছা ও আকর্ষণীয় ফুটেজ নেয়ার জন্য l এবার ছিলো না এইসব আয়োজন, ছিলোনা ‘ঈদ ইন দ্যা পার্ক’সেলিব্রেশন, ছিল না সেই চির পরিচিত ঈদ আলিঙ্গনের দৃশ্য, ছিলোনা হায়ারি গাড়ি নিয়ে রাস্তায় ঘোরাঘোরি, রং-বেরংয়ের পোশাক পড়ে রাস্তায় ছিল না ছোট্ট বাচ্চাদের চলাচল, তার পরিবর্তে কোনো কোনো বাড়িতে হয়েছে ‘ঈদ ইন দ্যা বেক গার্ডেন’। কেউ কেউ বাড়িতে নিজ পরিবার নিয়ে আদায় করেছেন ঈদের নামাজ। বিভিন্ন স্কলার ফতোয়া দিয়েছেন তিনজন পুরুষ ছাড়া বাড়িতে নিজ পরিবার নিয়ে ঈদের নামাজ আদায় হবে না! তাই আমরা বাপ্ বেটা দুইজন থাকায় জীবনের প্রথম ঈদের জামাত থেকে বঞ্চিত হলাম বা পড়া হলো না, আমার ভাই, বোন, সমনদিক ও ভাইরা ভাই তাদের সবার বাড়িতে তিনের অধিক পুরুষ থাকায় সবাই ঈদের জামাত পড়েছেন l এবারের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ের একমাত্র মাধ্যম ছিলো টেলিফোন কল, হোয়াটসঅ্যাপ, জুম, হাউস পার্টি নামের অ্যাপসহ সোশ্যাল মিডিয়া। পরিবারকেন্দ্রিক এই ঈদে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গেও ছিলো না কোনো সাক্ষাৎ বা আড্ডার সুযোগ। পারিবারিক আয়োজন ছাড়াও ঈদ উপলক্ষে দেশে বিদেশে, ইউরোপ আমেরিকা ও ব্রিটেনের বিভিন্ন কমিউনিটির, সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন ও বন্ধু মহল অনলাইনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ঈদ আড্ডার আয়োজন করে ডিজিটাল আনন্দ ফুর্তি করেছেন ।

পরিশেষে এবারের ঈদে মহান প্রভুর কাছে প্রার্থনা করি,
খুব তাড়াতাড়ি ভয়াল করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত করেন যাতে আমরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফেরত যেতে পারি। সেই সুন্দর সময়টি যেন আবার দ্রুত ফিরে আসে, আবারো ভালোবাসাময় – শান্তি, সমৃদ্ধির ভরপুর করে কোভিড-১৯ নামক ঘাতক শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করে সুন্দর আরেকটি নতুন পৃথিবীর প্রত্যাশা করি ।

লেখক : সাংবাদিক, সংগঠক ও সমাজকর্মী