____নাহিন মাহমুদ
আল্লাহ তায়ালা রোজহাশরের দিন পৃথিবীকে স্বীয় মুষ্টির মধ্যে ধারণ করবেন এবং সমগ্র আকাশ জগতকে স্বীয় ডান হাত দিয়ে ভাজ করে নেবেন।অতঃপর বলবেনঃ আমিই বাদশাহ-একচ্ছত্র অধিপতি, দুনিয়ার বাদশাহরা আজ কোথায়? বোখারী মুসলিম।
আজ দুঃখ হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের শাসকরা অন্ধ হয়ে সকল কিছু বুজে না বুজার ভান করে চলেছে। তাদের দুনিয়ার প্রভুদের আজ্ঞাবহ হয়ে থাকতে।ফ্রান্সে মহানবী (সঃ) এর প্রতি অবজ্ঞা করে ব্যাঙ্গ করে রাস্ট্রীয় ভাবে ছবি প্রদর্শন করা হচ্ছে? সরকারের এই ধৃস্টতার প্রতিবাদ জানানোর জন্য বিশ্বের তৌহিদি জনতা এবং কিছু রাষ্ট্রের সরকার প্রধানরা প্রতিবাদ জানাচ্ছে।বিভিন্ন দেশে তাদের পণ্য বর্জনের ডাক দিয়েছে।
ইতিমধ্যেই তাদের শেয়ার বাজারে ধস নেমে এসেছে। এই ধারা কিছুদিন অব্যাহত থাকিলে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে।
কিছু সংখ্যক পথ ভ্রষ্টরা বাক স্বাধীনতার নামে মানুষকে বুজাবার চেষ্টা চালাচ্ছেন,
লেখালেখি করতেছেন।মনে রাখবেন, বাকস্বাধীনতা মানে কাহাকেও গালাগালি কিংবা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা নয়।যেখানে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে স্বয়ং বলতেছেন,
ওয়ামা আরসালনা-কা ইল্লা রাহমাতাল লিল আ-লামীন।
অর্থঃ হে নবী আমি আপনাকে বিশ্ব জগতের জন্য রহমত স্বরূপ পাঠিয়েছি।
কিন্তুু আমরা দেখতেছি অসভ্যতার প্রবল চর্চা ফ্রান্স সরকার কতৃক সমর্থন করে আর্ট বা কার্টুনের মাধ্যমে আমাদের প্রিয় নবীজির চরিত্রে কালিমা লেপন করে যাচ্ছে।
আমাদের দেশের সরকারের প্রতি অনুরোধ, বিশ্ব নবীর সম্মানার্থে জরুরি পার্লামেন্ট ডেকে এবং তাদের রাস্ট্রদুতকে ডেকে এনে প্রতিবাদ জানানো। মুসলমান হিসাবে এটা হল সরকারের ওপর ঈমানী দায়িত্ব। তাওয়াক্কুল একমাত্র আল্লাহর ওপর রাখা উচিত।মনে রাখবেন,রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট হয়, প্রজারা কষ্ট পায়।আজ সকলকে মনযোগ দিয়ে নিম্নে প্রদও রাস্ট্রীয় ভাবে বিভিন্ন জাতী, বর্ণ, ধর্মের প্রতি আঈনের কার্যকরীতা গুলো পড়ার অনুরোধ রহিল।
কালো লোকদের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্নক কিছু বললে কিংবা লিখলে হবে রেসিজম!
জুইসদের বিরুদ্ধে বললে কিংবা লিখলে হবে এন্টিসেমিটিজম! মহিলাদের বিরুদ্ধে বললে সেক্সীজম! মুসলমানদের বিরুদ্ধে হলে ফ্রিডম অব স্পীচ??? কোন ধরণের আইন হবে না। এই হল তাদের বৈষম্য নীতি।
গত দুইদিন পূর্বে সাবেক ব্রিটিশ লেবার দলের বিরোধী দলীয় নেতা জনপ্রিয় এম,পি জেরেমী করবিনকে বর্তমান লেবার লিডার কিয়ার স্টারমার দলহতে বহিষ্কৃত করার নোটিশ জারী করেছেন।আমি একজন লেবার দলের সদস্য হিসাবে বলতেছি; এটা ছিল অত্যন্ত ভুল সিদ্ধান্ত।আমার মতন মিলিয়ন লেবার পার্টির সদস্য হয়ঃতবা মুখ খুলে বলতেছেন না। কিন্তুু সিদ্ধান্তটা ছিল অহেতুক, এটি সকলেই অনুধাবন করতে পারতেছেন? বহিঃষ্কারের কারণটা ছিল জেরেমী যখন লেবার লিডার ছিলেন, তিনি জুইশদের বিরুদ্ধে এন্টি সেমিটিজমকে পুরোপুরি জিরো টলারেন্স মাত্রায় স্টাম্প আউট করতে পারেন নাই। আমরা জেরেমি করবিনকে দেখেছি তিনির সমস্ত জীবন মানবতার পক্ষে ব্রিটিশ মিডিয়ার কিংবা নিজের দলের সরকারের বিপক্ষে পার্লামেন্ট হতে রাজপথে অবস্হান করেছেন। তিনি ইরাক যুদ্ধের বিরুদ্ধে , ফিলিস্তিনে ইসরাইলী আগ্রাসনের বিপক্ষে অবস্হান করেছেন। দেশের কিংবা বিদেশের মানবতা বিরুধি যে কোন অন্যায় অবিচারের বিপক্ষে সকল সময় জেরেমী করবিনের সোচ্চার অবস্হান ছিলো ।
কিন্তুু যখন মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিশ্ব মিডিয়া কিংবা পশ্চিমা সরকাররা প্রোপাগান্ডা চালিয়ে মিথ্যা আরোপ করে।যখন তাদের সব শিয়ালের এক ডাক; এই ডাকের বিরুদ্ধে জনাব করবিনকে সকল সময় অবস্হান করতে দেখেছি।তিনি দায়িত্বকালীন সময় এন্টিসেমিটিজম সু্স্পষ্ট প্রমানাদি প্রমাণিত হলে তিনির দলের অনেকের বিরুদ্ধে বলিষ্ট ভুমিকা নিয়েছেন।তিনিও আঈনী লড়াইয়ের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে এই অহেতুক অভিযোগ প্রমাণ করবেন বলে মিডিয়ার মাধ্যমে জানিয়েছেন।সকলে বিবেক দিয়ে বিবেচনা করেন।পশ্চিমা বিশ্বের এই বৈষম্য নীতি।
আনুমানিক ৪০০ হাজার জুইস জনগণ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে বসবাসরত।কিন্তুু তারা শিক্ষা-দীক্ষায় সমাজের গুরত্বপূর্ণ পদে অবস্হান করে নিয়েছে।আনুমানিক ৩ মিলিয়ন মুসলমান জনগণ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে বসবাসরত।
কিন্তুু ইদানীং মুসলমানরাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতার ছাপ রেখে চলেছে। কিন্তুু ব্রিটিশ রক্ষনশীল মিডিয়া, কট্রোর ইহুদি, কিংবা ব্রিটিশ বর্ণবাদী সাদা সুপ্রিমিষ্ট লোকেরা সকল সময়ই মুসলমানদের বিরুদ্ধে অবস্হান, কিংবা প্রোপাগান্ডায় যুক্ত রয়েছে ।তাদের মধ্যে ঐক্য রয়েছে।
আমাদের মধ্যে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে অনৈক্য থাকার দরুন আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ি। আমরা বিশেষকরে, প্রবাসে এসে ও বাংলাদেশের লোকেরা আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলের দ্বারা এত প্রভাবান্বিত।আমার মনে হয় বিশ্বের কোন দেশে এই চর্চা নেই।ইদানীং রাজনৈতিক দলের নেতাদের অবৈধ অনৈতিক কার্যকলাপে অনেকের মধ্যে অনীহা চলে আসতে দেখেছি।যেখানে সামাজিক সংগঠনে সকল দল-মতের ঐক্য থাকার কথা।সেখানেও আমরা অনেক সময়ই মিথ্যা কিংবা সত্যের পক্ষে অবস্হান না নিয়ে আমরা অন্ধ হয়ে দলের পক্ষে অবস্হান করে থাকি।বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতির প্রভাব সামাজিক সংগঠন গুলোর মধ্যে ও প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।যার দরুন অনেক সময় ঐক্যবদ্ধ হতে কিংবা ভাল কাজগুলোকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভবপর হয়ে উঠে না। ভাল-মন্দ বিবেচ্য না করে শিয়ালের মতন একই সুরে সুর তুলে থাকি।
মনে রাখবেন , সত্য পথের পথিকরা বেশীক্ষণ বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে পারে না, সত্যই তাদের একসুত্রে আবদ্ধ করে ফেলে। কেননা, সত্যের প্রকৃতিই হচ্ছে ঐক্য , সংহতি, ও একাত্নবোধের প্রেরণা দান করা। অনৈক্য ও বিবেদ কেবল তখনি দেখা দিতে পারে, যখন সত্যের সংগে কিছুটা অসত্যের সংমিশ্রণ ঘটে।অথবা উপরে সত্যের প্রদর্শনী থাকলে ও ভিতরে অসত্যই কাজ করে থাকে।
যাই হোক, বিশ্ববাসী অত্যন্ত দু্র্যোগপুর্ণ পরিস্হিতির মধ্যে দিনাতিপাত করিতেছেন। এটা আল্লাহর তরফ হতে সতর্কবাণী।আমাদের অন্যায়, অবিচার , জুলুম, নির্যাতন ইত্যাদির কারণে করনা নামের অতি ক্ষুদ্র ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেক লোক মারা গিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে লকডাউন চলতেছে। অনেক লোক করনার আত্রুমনে হাসপাতালে মুত্যুর সহিত পাজ্ঞা লড়তেছেন। এই রোগটির ভয়াবহতা চলিত শীত মওসুমে ব্যাপক রূপ ধারন করার সম্ভাবনতা জানিয়ে ব্রিটিশ সরকার নবেম্বরের ৫ তারিখ বৃহস্পতিবার হতে সমগ্র দেশটাকে ডিসেম্বরের ২তারিখ পর্যন্ত লকডাউনের জন্য ঘোষনা জারী করেছেন।
সকলে নিরাপদে থাকবেন। সরকারের সতর্কতা মুলক স্বাস্হ্যবিধির গাইড লাইন মেনে চলবেন। ভাল আছি, সকলের ভাল চাই।

নাহিন মাহমুদ
১লা নভেম্বর ২০২০
সেভেনকিংস, লন্ডন।


