২০২০-২১ প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় জনমনের আশার প্রতিফলন এবং সরকারী পদক্ষেপ

প্রকাশিত: ৮:১৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২০ 546 views
শেয়ার করুন

প্রথমে বলবো মানুষ বেঁচে থাকতে হলে কতগুলো মৌলিক অধিকার আছে।তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল চিকিৎসা।জনমনে স্বস্থি ফিরাতে নিশ্চিত চিকিৎসা ব্যবস্থার কোন বিকল্প নেই।আর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে থেকে জনগনের সামগ্ৰিক স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনগন তার আয়ের ১০ শতাংশ চিকিৎসার জন্য ব্যয় করে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশের জনগন তার আয়ের ২৫ শতাংশ চিকিৎসার জন্য ব্যয় করে থাকে।এরা হলো হত দরিদ্র থেকে মধ্যম আয়ের জনগন।তারা চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করতে ধারস্থ হতে হয় আত্মীয় স্বজন কিংবা মানবিক বীত্তবানদের।কোন মানুষ মানবিকভাবে আবদার রাখেন,আবার কেউ আবদার ফিরিয়েও দেন।স্বাস্থ্য বীমা নিশ্চিত হলে এ দুর্ভোগে পড়তে হতো না। এটি হলো বাংলাদেশের হতাশার মূল কারণ।এ চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে অনেক মধ্যম আয়ের জনগন দরিদ্র সীমার নিচে চলে আসে,বছর শেষে হিসাব করলে দেখা যায় প্রায় ৫০ লক্ষের ও কাছাকাছি। এতে আমাদের দরিদ্র বীমুচনের প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

আমাদের এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে হলে -শুধু প্রবাসী কে স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনলে সম্ভব নয়, আমাদের সামগ্ৰিক স্বাস্থ্য-ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।২০২০-২১ প্রস্তাবিত অর্থবছরের বাজেট প্রায় ৫ লক্ষ ২৩ হাজার কোটি টাকা,যা নিঃসন্দেহে একটি বড় বাজেট এসিয়ার দেশ গুলোর বিবেচনায়।তার মধ্যে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভাবে যে খ্যাত গুলো কে দেখা হয়েছে তা হচ্ছে- চিকিৎসা, কৃষি, শিক্ষা, পরিবহন খ্যাত।

আমার আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু হলো চিকিৎসা।এ স্বাস্থ্য খ্যাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার ২ শত ৪৬ কোটি টাকা। শুধু করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।যা বহৎ বাজেটের ৫.১ শতাংশ বরাদ্দ শুধুই স্বাস্থ্য খ্যাতে। করোনা কালের দৈনন্দিন ব্যবহারিক জিনিস পত্রের দাম ও কমবে।যেমন পি,পি,ই, আই সি ইউ সরঞ্জাম,পরিক্ষার কীট, সার্জিক্যাল ও ফেইস মাস্ক ইত্যাদির দাম।

অন্যদিকে যত বড় বাজেট স্বাস্থ্য খ্যাতে রাখা হউক না কেন -সেবা,আসবাবপত্র ক্রয়, নিয়োগ বাণিজ্য, পদায়ন, ঔষধ সরবরাহ এ সব ক্ষেত্রে,সচছতা, জবাবদিহিতা ,ও নিয়মিত মনিটর না থাকলে দূর্নীতি থেকে কোন অবস্থায় মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়,।তাতে জনগন সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবে।সাথে সাথে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতার বহুদিনের লালিত স্বপ্ন ও জননেত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্য জনগনের ভাগ্য উন্নয়নের পথরদ্ধ হবে।

বাংলাদেশে উপজেলা পর্যায় প্রায় ৫শত সরকারি হাসপাতাল আছে।১০ হাজার নতুন ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।আরো ১০ নতুন ডাক্তার নিয়োগ প্রক্রিয়া ধীন।তাই সমস্ত ডাক্তার ,নার্স ,হিসাব রক্ষক ও সরকারি হাসপাতাল -বেসরকারি হাসপাতাল একই সরকারী মনিটর নিয়মের ভিতরে আনতে হবে। তাছাড়া ইমারজেন্সিতে মান সম্পন্ন ডাক্তার নিশ্চিত করা ,সঠিক ডাক্তারি ব্যবস্থা প্রদান, বিভিন্ন ঔষধ কম্পানির উপঢৌকন গ্ৰহন,ডায়গনিষ্ট সেন্টারের কমিশন গ্ৰহন,এসব থেকে ডাক্তারদের নিঃউৎসাহ প্রদান করতে হবে।যাতে ডাক্তারদের কোন ধরনের শৈথিল্য ও অমানবিক আচরন কোন ভাবে মেনে না নেয়া হয়। সেজন্য প্রয়োজন নিয়মিত মনিটরিং দুদকের মাধ্যমে,যাতে চিকিৎসা খ্যাতটা বিশ্বমান সম্মত করা এবং সুচিকিৎসা ব্যবস্থা দ্রত জনগনের নাগালের মধ্যে চলে আসে।

২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত, গতানুগতিক বাজেটে এর বাহিরে এসে ২০১৯-২০ সালের বাজেটের নতুনত্ব হলো- আমার গ্ৰাম, আমার শহর, কৃষকের জন্য শস্য বীমা চালু, বেকারদের জন্য স্টাট আপ ফান্ড,প্রবাসী বীমা চালু।

তাই আমার গ্ৰাম, আমার শহর- এই স্লোগ্নান কে যতার্থ প্রমান করতে হলে, সরকার কে -শহরের ন্যায় গ্ৰামীন চিকিৎসার উন্নয়নের দিকে নজর দিতে হবে।যাতে শহরের মত গ্ৰামেও ডাক্তার উৎসাহের সাথে থাকতে পছন্দ করে।ডাক্তারের ভাল বাসস্থানের পাশাপাশি ছেলে-মেয়েদের মানসম্মত স্কুল-কলেজ লেখা-পড়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া,বেতন কাঠামোর বৈসম্য না থাকা, পোষ্টিং গ্ৰেজুয়েশন আরো একটি কারন।এই কারন গুলোর চিহ্নিত করে যতার্থ ব্যবস্থা গ্ৰহন করা সময়েরও দাবি।

সুতরাং হিসাব রক্ষক থেকে ডাক্তার পর্যন্ত মনিটর,বহু অযত্ন অবহেলায় হাসপাতালে জরুরী যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে পড়ে আছে, এগুলোর প্রতিও সঠিক তদারকি বাড়ানো দরকার,।করোনা মহামারি যা চিকিৎসা ব্যবস্থার অসংহ্নতি গুলো আমাদের চিহ্নিত করতে সহায়তা করেছে,না হয় আমাদের চোঁখের অগুচরে পড়ে থাকত হাজার ও অসংহ্নতি,শত ডাক্তারের অনিয়ম, দুর্নীতি আর অমানবিক আচরন, সরকারি হাসপাতালে সম্পদ বিনষ্টের মহাউৎসব।তাই আমার গ্ৰাম কে শহরের ন্যায় করতে নিশ্চিত সুচিকিৎসা জনগনের সময়ের দাবি।