দূতাবাসের সহায়তায় ২৯ প্রবাসি ঢুকলেন আমিরাতে

নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক

বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ২:৩১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২০ 1,837 views
শেয়ার করুন

অবশেষে আনন্দের সংবাদ আমিরাত প্রবাসীদের জন্য। আবুধাবি বিমান বন্দরে আটকে থাকা ২৯জন প্রবাসী আমিরাতে প্রবেশ করেছে। এ খবরটি নিশ্চিত করেছে আটকে থাকা আবুধাবি প্রবাসী মুহাম্মদ সোহেল চৌধুরী ও মুহাম্মদ এসকান্দর।

মুহাম্মদ সোহেল চৌধুরী জানান, সন্ধ্যা সাতটায় আমাদের করোনা পরীক্ষা করা হয়। এরপর আমাদেরকে আবুধাবি বিমান বন্দরের অভ্যন্তরে ২ জনকে একটি করে রুম দেওয়া হয়। সেখান রাতের খাবারসহ প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র দেওয়া হয়েছে। রাত ২টার পরে আমাদেরকে ইমিগ্রেশন থেকে তলব করেন এবং সবাইকে আমিরাত প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হয়।

ভুক্তভোগী আবুধাবি প্রবাসী মুহাম্মদ এসকান্দর বলেন, অবশেষে আমিরাত প্রবেশ করতে পেরে ভালো লাগছে। তিনি সব নিয়মকানুন মেনে দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের আমিরাতে আসার অনুরোধ করেন। তাদের সাথে বিমানের স্টেশন ম্যানেজার ইকবাল হোসেন উপস্থিত ছিলেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ বিমানের আঞ্চলিক পরিচালক নিধান চন্দ্র বড়ুয়া সাথে যোগাযোগ করে হলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন দূতাবাস প্রয়োজনীয় কাজ করেছে এবং আমাদের দিক থেকেও সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। শেষ পর্যন্ত সফল হতে পেরে ভালো লাগছে।

প্রবাসীরা আমিরাত প্রবেশের আগে (রাতে) বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আবু জাফরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন ২৯জন যাত্রীর করোনা পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের সাথে আবুধাবি প্রশাসনের কথা হয়েছে এবং তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছে রাতে আটকে থাকা যাত্রীদের আমিরাত প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে এবং ইনশাআল্লাহ্‌ আমি আশাবাদী। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রদূতের কথা সত্যি হওয়ায়, স্বস্তি ফিরেছে আটকে থাকা প্রবাসীদের মধ্যে।

উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার রাত ৩টায় আবুধাবি বিমান বন্দরে দেশ থেকে ৪১ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণ করেছিলো বিমানের একটি ফ্লাইট। সে সময় ১১ জন যাত্রী আবুধাবি প্রবেশের সুযোগ পেলেও আটকা পড়েছিলেন ২৯ জন যাত্রী।

এদিকে ১৮ আগস্ট বিভিন্ন দেশ থেকে আগত অভিবাসীদের জন্য একটি নিয়মাবলী প্রকাশ করেছে আমিরাতের জনপ্রিয় দৈনিক খালিজ টাইমস।
তাতে উল্লেখ করা হয়, সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসীদের দেশে বিমান টিকেট বুকিংয়ের আগে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাগুলি পুরোপুরি মানার পরামর্শ দিয়েছে আমিরাত। এর মধ্যে কোভিড -১৯ পিসিআর পরীক্ষার নেগেটিভ ফলাফল পাওয়া এবং ফেডারেল কর্তৃপক্ষের পরিচয় এবং নাগরিকত্বের আইসিএ (https://uaeentry.ica.gov.ae) ওয়েবসাইটে ভ্রমণের বৈধতা পরীক্ষা করতে হবে।

সোমবার আবুধাবি ও শারজাহ বিমানবন্দরে কিছু প্রবাসী আটকে থাকার পরে এই পরামর্শগুলো এলো। ১২ আগস্ট, জাতীয় জরুরি অবস্থা সংকট ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনসিইএমএ) ঘোষণা করেছিল অভিবাসীদের আমিরাত ফিরতে আইসিএর প্রাক-ভ্রমণ অনুমোদনের দরকার নেই। পরিবর্তে তাদের আইসিএ ওয়েবসাইটে অভিবাসীদের নথির বৈধতা যাচাই করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। বেশিরভাগ অভিবাসী তাদের ভ্রমণের জন্য একটি সবুজ বার্তা পেয়েছিলেন। অন্যরা একটি লাল বার্তা পেয়েছিলেন। যেখানে বলা হয়, আপনার সুরক্ষার জন্য আমরা ৬০ দিন পর আপনার ভ্রমণের তারিখ পুনরায় নির্ধারণের সম্ভাবনা বিবেচনা করব। কিন্তু এই লাল বার্তাটি পাওয়ার পর যারা এসেছেন তারা বিমানবন্দরে আটকা পড়েছেন।

ভ্রমণ গাইড স্মার্ট ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফি আহমেদ বলেছেন, যাত্রীদের টিকিট বুক করার আগে ধাপে ধাপে নিচের প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করতে হবে।
পদক্ষেপঃ ১/ দুবাই ব্যতীত সমস্ত আমিরাত ভ্রমণকারী যাত্রীদের তাদের নথিগুলির বৈধতা uaeentry.ica.gov.ae এ অবশ্যই পরীক্ষা করতে হবে। তাদের অবশ্যই আমিরাতের আইডি নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, পাসপোর্টের ধরণ এবং জাতীয়তা ইনপুট করতে হবে। দুবাইয়ের বাসিন্দাদের অবশ্যই রেসিডেন্সি ও বিদেশ বিষয়ক অধিদফতরের (জিডিআরএফএ) প্রাক ভ্রমণ ভ্রমণের অনুমোদন পেতে হবে।

২. আমিরাতের ৬টি প্রদেশের অভিবাসীরা একবার আইসিএর কাছ থেকে ‘সবুজ’ স্ট্যাটাস পেয়ে গেলে আর দুবাই অভিবাসীরা জিডিআরএফএর কাছ থেকে অনুমোদন পেলে টিকেট বুকিং করতে পারবে। যাদের ‘লাল’ আইসিএ বার্তা রয়েছে তাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে।
৩.যাত্রীকে নিজ দেশ কর্তৃক নির্ধারিত কোনও প্রাক-ভ্রমণ অনুমোদন রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
৪. সংযুক্ত আরব আমিরাত অনুমোদিত ল্যাব থেকে কোভিাড-১৯ পরীক্ষা করতে হবে।
৫. কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ হতে হবে।
৬. ভ্রমণের দিন স্বাস্থ্য ঘোষণা ফর্মটিতে স্বাক্ষর করতে হবে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের যোগাযোগের ট্রেসিং অ্যাপ আলহসন ডাউনলোড করুন। দুবাই অভিবাসীদের অবশ্যই ডিএক্সবি স্মার্ট অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে।
৭. মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং ভ্রমণের জন্য অন্যান্য সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সাথে রাখতে হবে। প্রয়োজনীয় সময় হাতে রেখে বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হবে।

আর ভিজিট ভিসাধারীদের কোভিড-১৯ এর বীমা থাকতে হবে।