আসসালামু আলাইকুম ইয়া রাসুলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম।
হে রাসূলে আরাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তোমার থেকে চৌদ্দশতবছর পরে জন্ম নেওয়া একুশের কোঠায় দাঁড়ানো আমি এক অন্ধপ্রেমিক।
তোমাকে কেন এতটা ভালবাসি ইয়া রাসূলাল্লাহ! তোমাকে তো কখনোই দেখিনি, কোনোদিন তোমার প্রবিত্র সান্নিধ্যটুকু পাইনি, তবুও কেন তোমার প্রতি এতটা ভাল লাগা!
বিশ্বাস করো তুমি, আমার হৃদয়-হৃৎপিন্ডের চাইতেও অনেক গভীরে, রক্ত আর শিরা-উপশিরারও গহীনে, যে অস্পৃশ্য রুহ আছে; সেই রুহবিন্দু থেকেও তোমাকে বেশি ভালবাসি ইয়া রাসূলাল্লাহ!
যেদিন থেকে শুনেছি, তোমাকে ভাল না বাসলে মুমিন হতে পারবো না, তোমার দেখানো পথ ব্যাতিত দিশা পাবো না_বিশ্বাস করো; এরপর থেকে তোমাকে পাগলের মত ভালবাসি। শুধুমাত্র বিশ্বাসের পুঁজি দিয়ে তোমাকে এতটাই ভালবেসে ফেলেছি যে, আমার হৃৎপিন্ডের একটু উপরে, অল্প ডানপাশে, আমি যেন নতুন হৃৎস্পন্দন টের পাই। যে হৃৎস্পন্দনের জন্মই হয়েছে যেন তোমার জন্য।
তোমার কাছে কিছু চাওয়ার সাহস নেই আমার ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি তো বরং নিজেকেই তোমার কাছে সঁপে দিয়েছি। আমার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ-সম্পত্তি, দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ,প্রসন্নতা-বিষণ্ণতার প্রতিটি মুহূর্ত -সবকিছুর উপর কর্তৃত্ব থাকলো শুধু তোমার।
আমার সবকিছুই চলবে তোমার কথামতো!
হে প্রিয় হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! জানো? ‘শাহবাগে’ তোমার শানে বেয়াদবীর প্রতিবাদে যে রাতে আমি ‘শাপলাচত্বরে’ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম, সে রাতে ওরা আমাকে ভীষণ কষ্ট দিয়েছে। ওরা আমাকে বেধড়ক পিটিয়ে সে রাতে এতটাই জখমাক্ত করেছিলো যে, আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ি। আমার মুখবরাবর ছোড়ে মারা ওদের কাঁদানেগ্যাসের তীব্রতা দীর্ঘ আড়াইমাস অবধি তৃপ্তিসহকারে এক লোকমা খাবার খেতে দেয়নি আমায় !
বিষাক্ত গ্যাসের সেই উৎকট গন্ধে, মাঝেমধ্যে আমি অস্থির হয়ে উঠতাম। মনে হতো-এই বুঝি জীবনপ্রদীপ নিভে গেল। এতকিছুর পরেও কোন দুঃখ নেই আমার ইয়া রাসূলাল্লাহ! তোমার প্রণয়ে আমার বাহুযুগল তো সবসময়ের জন্যই অবিচল।তোমায় ভালবেসে দুর্নিবার সবকষ্ট বুকে চেপে ধরে, হাসি মুখে উড়িয়ে দিতে_বিশ্বাস করো, একটিবারের জন্যও আমি ব্যথিত নই।
তোমাকে যে বড় বেশিই ভালবাসি ইয়া রাসূলাল্লাহ!
তোমাকে যদি ভাল নাই বাসতাম, তবে কেন তোমার জন্য পুরো পৃথিবীর বিরুদ্ধে একা দাঁড়াতে দ্বিধা নেই আমার ? আমার মস্তিস্কে কেন শুধু তুমি ? আমার হৃদয় কেন অবিচল সবসময় তোমার জন্যে ?
তোমাকে যদি ভাল নাই বাসতাম,তবে কেন তোমার শানে দুর্বাচ্য প্রদর্শনকারীকে একমুহূর্তের জন্যও সইতে পারিনা আমি? কেনইবা তখন বেচে থাকার আকুতি থেকে মরণের অভিলাষ আমার কাছে প্রিয় হয়ে উঠে? কেন শাহাদাতের তামান্না আমার হৃদয়সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে তখন?
সত্যিই তোমাকে ভালবাসি ইয়া রাসূলাল্লাহ!
আর তোমাকে ভাল না বেসে পারিইবা কী করে? যার মাধ্যমে পেলাম ঈমান ও কুরআনের মত মহাসম্পদ, লাভ করলাম মুমিন হওয়ার মহাসৌভাগ্য, যিনি পথ দেখালেন ইহ-পারলৌকিক কল্যাণের -তাকে ভালবাসবোনা- তা হয় কী করে? তাইতো ইয়া রাসূলাল্লাহ, তুমি আমার পিতা-মাতা,স্ত্রী-পুত্র থেকেও বেশী শ্রদ্ধা ও সম্মানের। তোমাকে ভালবাসি ইয়া রাসূলাল্লাহ!
কোনকিছু ছাড়াই তোমাকে ভালবেসে যাবো মৃত্যু অবধি,এমনকি মৃত্যুর পরেও। হাওজে কাউছারের পাড়ে অপেক্ষায় থাকবো তোমার। তুমি নিজ হাতে আমাকে তৃপ্তি করো ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!
ইতি
মুহাম্মদ তানজীম
লেখক : মহিউদ্দীন খান তানজীম। শিক্ষার্থী : অনার্স ৩য়বর্ষ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বৃন্দাবন সরকারী কলেজ, হবিগঞ্জ।
আরআর/পাবলিক ভয়েস