ঈদুল আযহা’র দিনেও সিলেটের বিয়ানীবাজারে করোনায় মৃতের লাশ দাফনে ব্যস্ত ছিলেন সেচ্চাসেবীরা

লুৎফুর রহমান লুৎফুর রহমান

সম্পাদক ও সিইও, বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ১১:৫৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২১ 7,672 views
শেয়ার করুন

 

➪ যখন সবাই ঈদের আমেজে ব্যাস্ত তখন সেচ্ছাসেবিরা দাফনে ব্যস্ত।

➪যখন সবাই ঈদের দিনে বিভিন্ন জাতের নাস্তা করতেছে তখন সেচ্ছাসেবীরা লাশ গোসলে ব্যাস্ত।

➪যখন সবাই ঈদের নতুন কাপড় পড়তেছে তখন সেচ্ছাসেবীরা ইউনিফর্ম পরে প্রস্তুত।
➪যখন সবাই ঈদের নামাজের জন্য মসজিদে প্রস্তুত,তখন সেচ্ছাসেবীরা মসজিদের বাইরে মেঘে ভিজে ভিজে নামায আদায় করতেছে।
➪যখন অন্যরা পশু কোরবানিতে ব্যাস্ত তখন সেচ্ছাসেবীরা লাশের জানাজা আর দাফন নিয়ে ব্যস্ত।

জ্বি এতক্ষণ বলছিলাম সিলেটের  বিয়ানীবাজারে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের দাফন কাফনের কাজে নিয়োজিত  উপজেলার সেচ্ছাসেবী টিমের কিছু যুদ্ধার কথা, যারা ঈদের দিনেও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া লাশের দাফন কাফনে ব্যাস্ত ছিল।

অদৃশ্য এক মহামারির ছোবলে এলোমেলো হয়ে গেছে সব স্বাভাবিকতা। তবুও আজ বুধবার বিয়ানীবাজারসহ সারাদেশে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। সংকটময় এই সময়ে সকল প্রতিকূলতা ঠেলে ঈদের দিনেও সবাই যখন ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা, ঈদের নামাজ শেষে বাড়িতে বাড়িতে চলছে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দিচ্ছেন, ঠিক সেই মুহূর্তে বিয়ানীবাজারের একদল স্বেচ্ছাসেবীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন করোনায় মৃত একজন নারীর মরদেহ দাফনের।

বলছিলাম বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রশাসন নিয়ন্ত্রণাধীন করোনায় মৃতদের দাফন ও সৎকার স্বেচ্চাসেবী পরিষদের স্বেচ্ছাসেবীদের কথা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তিকে বুধবার ঈদের দিন সকালেও বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়া ইউনিয়নের বড়দেশ গ্রামের একজন নারীর মরদেহ দাফন করেছেন স্বেচ্চাসেবী পরিষদের সদস্যরা। ওই নারী মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে সিলেট নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

 

স্বেচ্ছাসেবী দলের সদস্যরা ওই বৃদ্ধার মরদেহ দাফনের জন্য মুঠোফোনে দলের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করে একত্রিত হন বিয়ানীবাজার উপজেলা ভূমি অফিসের মসজিদে। সেখানে ঈদের নামাজ আদায় করেই চলে যান বড়দেশ গ্রামের সেই বাড়িটিতে। পরে ঈদের দিন সকাল ৯টায় স্বেচ্ছাসেবী পরিষদের নারী সদস্যের মাধ্যমে গোসল এবং পুরুষ সদস্যদের মাধ্যমে ওই বৃদ্ধার মরদেহ দাফন করা হয়। স্বেচ্ছাসেবী দলে সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা রেদওয়ান আহমেদ, এনায়েত হোসেন এহসান,  মাহবুবুল আলম জয়নুল চৌধুরী , রায়হান আহমদ ও মোছা.তাবাসসুম।

মহান রবের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই তাঁরা এই কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে স্বেচ্ছাসেবী দলের সদস্য আবুল কালাম জানান, তাদের টিমে বিয়ানীবাজারের প্রায় ২০ জনের মতো নারী-পুরুষ কাজ করেন। কিন্তু ঈদের দিন হওয়ায় তারা একজন নারী সদস্যসহ ৬জন মিলে মরদেহ দাফন করেন। এর আগে দাফন কাজে অংশ নেয়া সকলেই বিয়ানীবাজার উপজেলা ভূমি অফিসের মসজিদ ঈদের নামাজ আদায় করেন।

 

উল্লেখ্য, করোনায় মৃতদের দাফন ও সৎকার স্বেচ্চাসেবী পরিষদের স্বেচ্ছাসেবীদের উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ আলাদাভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এছাড়া ধর্মীয় বিষয়াদির ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।