কক্সবাজারে করোনার ঝুঁকিতেও সর্বত্র চলছে ঈদের কেনাকাটা

শাহীন মাহমুদ শাহীন মাহমুদ

কক্সবাজার প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৬:০৮ অপরাহ্ণ, মে ১৮, ২০২০ 576 views
শেয়ার করুন
কক্সবাজার জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় শতাধিকের কাছাকাছি। তারপরও সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়টি অধিকাংশ লোকজন আমলেই নিচ্ছে না। স্বাভাবিকভাবে নিজের পরিবারের সদস্যদের জন্য ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার লোকজন।
 
এদিকে কক্সবাজারে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ক্রমে বাড়ছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মার্কেটমুখী মানুষের স্রোত। এতে সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কায় আজ থেকে জেলার সব ধরনের দোকানপাট ও শপিংমল আবারও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। একই সঙ্গে বিকেল চারটার পর সব ধরনের পরিবহণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তও হয়েছে।
 
সরেজমিন দেখা যায়, সামাজিক দূরত্ব মানছে না, নিজের জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছে, অন্যকেও ঝুঁকিতে ফেলছে। আর এভাবেই জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিপণিবিতানে ভিড় চোখে পরার মতো। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব, মার্কেটগুলোতে নেই কোন সুরক্ষার ব্যবস্থা। এর মাশুল কক্সবাজারবাসীকে চরম আকারে দিতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল।
 
এমন দৃশ্য চোখে পড়ে সদর, রামুসহ উখিয়া-কোট বাজারের পোশাকের দোকানগুলোতে। এছাড়াও টেকনাফ, চকরিয়ায়, পেকুয়াসহ বিভিন্ন সদর ইউনিয়নের বাজারেও এমন উপচেপড়া ভিড় দেখা যায় বলে অনেকে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছবিসহ পোষ্ট করে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। আবার অনেকেই কক্সবাজার শহরের দিকেও ঈদের কেনাকাটার জন্যও ছুটছেন বলে বিভিন্নভাবে জানা গেছে।
 
রামু উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এমনকি গ্রামের দোকানগুলোতেও কেনাকাটার কমতি নেই। দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ঈদকে সামনে রেখে বেশ ঝুঁকি নিয়েই কেউ কেউ খুলছে দোকান-মার্কেটগুলো। জেলা মার্কেটে ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এবং কক্সবাজার চেম্বার অফ কমার্স সবাইকে নিয়ে সভা করে জানিয়ে দিয়েছেন ঈদ পর্যন্ত কোন মার্কেট খোলা হবেনা নির্দেশনা দেয়া হলেও অধিকাংশ জায়গায় মানা হচ্ছে না। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। ছোট বড় কোন দোকানেই নেই হাত জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা। আর থাকলেও বেশিরভাগ দোকানেই মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব।
 
রামুর চৌমুহনীতে সন্তানের জন্য ঈদের নতুন পোশাক কিনতে আসা রাহেলা বেগম বলেন, করোনার ঝুঁকি থাকলেও কি করবো। ঈদে সন্তানের নতুন পোশাক না দিতে পারলে ভালো লাগবে না, তাই কেনাকাটা করতে আসা। তবে পুরো চেরাংঘাটা বাজারের কোন দোকানেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না।
 
সদরের খরুলিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা ফয়সাল মাহমুদ বলেন, ঈদে কেনাকাটা করবে তা আনন্দের। কিন্ত পরিবারের একজনের করোনা হলে সকল আনন্দ আর থাকবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যদি কেনাকাটা করা যায় তবে ঠিক আছে।
 
তিনি আরোও বলেন, তারা কেউ কেউ দোকান মালিক সমিতির নির্দেশনা অমান্য করে করোনা ঝুঁকি নিয়ে বেচা-বিক্রি চালিয়ে যাচ্ছে। কোন দোকানেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত নিজেকেই করতে হবে। কারণ নিজের উপর একটি পরিবার নির্ভরশীল।
 
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আফসার বলেন, সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা না জাগায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তারপরও আমাদের মৃত্যুর হার নেই বললে চলে। সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ হওয়ায় ইতোমধ্যে অর্ধশতাধিক সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকিরাও সুস্থ হওয়ার পথে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এটি আশা জাগানিয়া। তবুও সবার মাঝে সচেতনতাই কেবল করোনার প্রাদুর্ভাব কমাতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।