অনশন ও আন্দোলন ভিন্ন ব্যাপার: জাফর ইকবাল

মাহবুব জয়নুল মাহবুব জয়নুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩:৩৩ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৬, ২০২২ 385 views
শেয়ার করুন

অনশন ভাঙার পরও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের আন্দোলন চালিয়ে নিবেন কি-না সেটা তারাই নির্ধারণ করবেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

 

বুধবার সকাল ১০টার দিকে পানি পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙান ডক্টর জাফর ইকবাল এবং তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক।এর পরে গণমাধ্যমে এ কথা জানান তিনি।

 

এ সময় জাফর ইকবাল বলেন, অনশন ও আন্দোলনটাকে ভিন্নভাবে দেখি। তাদের যে উদ্দেশ্য, এই আন্দোলন করার জন্য অনশন করার প্রয়োজন নাই। কারণ, যে মানুষটার জন্য তারা অনশন করতে যাচ্ছে তার জন্য প্রাণ দেয়াটা সমীচিন না। তারা যদি আন্দোলন করতে চায়, সেটা তাদের সিদ্ধান্ত।

 

তারা আমাদের অনুরোধ রক্ষা করে আজকে সবাই মিলে অনশন ভেঙেছে। আমি আমার জীবনে এর থেকে বেশি আনন্দ কখনও পাই নাই। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এ সময় পাশে থাকা ইয়াসমীন হক বলেন, তারা (শিক্ষার্থীরা) ২৭ জন একসঙ্গে অনশন ভেঙেছে। এটা আমাদের জীবনের জন্য সবচেয়ে বড় পাওনা। প্রায় তিন বছর আমরা এখানে নাই।

 

অনুরোধে রাজি হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জাফর ইকবাল বলেন, যে পদ্ধতিতে আন্দোলন দমনের চেষ্টা হয়েছে, তা অমানবিক। চলমান আন্দোলন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই শিক্ষক দম্পতি।

 

আন্দোলনকারীরা জানান, অনশন ভাঙলেও উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। অনশন ভাঙার পর চিকিৎসার জন্য অনশনকারীদেরকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

 

এরআগে মঙ্গলবার রাত ৪ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌঁছান ডক্টর জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক। পরে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন তিনি। এক পর্যায়ে অনশন ভাঙতে রাজি হয় শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী।

 

এসময় জাফর ইকবাল বলেন, শোন তোমরা টের পাচ্ছ না, তোমরা কী করেছ? বাংলাদেশের ৩৪ জন ভাইস চ্যান্সেলর বলেছেন, এখানকার ভাইস চ্যান্সেলর পদত্যাগ করলে তারা পদত্যাগ করবেন। আমার খুবই শখ, এটা দেখতে। আমাদের দেশে এমন ভাইস চ্যান্সেলর আছে, যাদের আদর্শ এত বেশি যে উনারা অন্যর দেখে নিজেরপদত্যাগ করবেন। যদিও আমার ধারণা, এ শখ মিটবে না।

 

আমি শুধু এটা বলতে চাই, তোমরা যেটা করেছ, সেটার তুলনা নেই। তোমরা যে আন্দোলনটা তৈরি করেছ, বাংলাদেশের প্রতিটি ইয়াং ছেলেমেয়ে তোমাদের সঙ্গে আছে। বলেন জনপ্রিয় এই লেখক।

 

এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর একটা স্মারকগ্রন্থের জন্য আমার কাছে একটা লেখা চাওয়া হয়েছিল। সেই লেখাটার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে ১০ হাজার টাকা সম্মানী দেয়া হয়েছে। আমি এই সম্মানীর টাকাটা নিয়ে এসেছি। এই আন্দোলনের ফান্ডে টাকাটা দিচ্ছি। তোমরা রাখো। এবার পারলে আমাকে অ্যারেস্ট করুক।

 

এ সময় তিনি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি চরম অমানবিক বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি আর বলেন, আমার সঙ্গে অনেক বড় বড় মানুষ যোগাযোগ করেছেন। তারা আমাকে কথা দিয়েছেন। এজন্য আমি এখানে এসেছি।