আল্লাহ মানুষকে বিপদ কেন দেন?
মাহবুবুল আলম চৌধুরী (জয়নুল) মাহবুবুল আলম চৌধুরী (জয়নুল)
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঈমানের ছয় নাম্বার রোকন হলো “ওয়াল ক্বাদরি খাইরিহি ওয়া শাররিহি” – অর্থাৎ আমাদের জীবনে ভালো-মন্দ যাই ঘটুক না কেন তা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত।
একবার রাসুল (সাঃ) কে প্রশ্ন করা হয়েছিলো, মানুষের মধ্যে কারা সবচাইতে বেশি বিপদে পড়ে? উত্তরে তিনি বলেন, নবী-রাসুলরা, আর এরপরে আল্লাহ যাকে যত বেশি ভালোবাসেন তাকে তত বেশি পরীক্ষায় ফেলেন।
মানুষ ঈমানদার হোক আর কাফের হোক, নেককার হোক আর পাপী হোক, সবার জীবনে বিপদ-আপদ আসে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, যদিও আমরা অপছন্দ করি, তারপরেও কেনো আমাদের জীবনে এইরকম বিপদ-আপদ আসে বা আল্লাহ কেনো আমাদের পরীক্ষায় ফেলেন?
কোরান হাদিস থেকে এর যে কারণগুলো জানা যায় তার মধ্যে রয়েছে:
১। মানুষকে পরীক্ষা করা: প্রকৃতপক্ষে কে ঈমানদার কে মুনাফিক, কে সত্যবাদী আর কে মিথ্যাবাদী তা জেনে নেয়া।
মুনাফিক ও দুর্বল ঈমানদারেরা অনেক সময় সুখ–স্বাচ্ছন্দ্যের সময় আল্লাহকে মনে রাখে, তার প্রতি অনুগত ও সন্তুষ্ট থাকে। কিন্তু, যখন কোনো বিপদ-আপদ আসে তখন আল্লাহকে ভুলে যায়, কুফুরী করে বা তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়।
আবার অনেক সময় এর বিপরীতও হয়। যখন কোনো বিপদে পড়ে, তখন অনেক কাফের মুশরেককেও আল্লাহর কাছে মনে প্রাণে দুয়া করতে দেখা যায়।
আর যখন আল্লাহ তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করেন, তখন আল্লাহকে ভুলে যায়, তার নিয়ামতকে অস্বীকার করে অহংকার প্রদর্শন করে, বলে এতো আমার প্রাপ্য। আবার কখনো আল্লাহর সঙ্গে শরিক করে বসে, আল্লাহর পরিবর্তে অন্য কাউকে বিপদ-মুক্তির কারণ মনে করে।
এই বিষয়গুলো পরীক্ষা করার জন্য, অর্থাৎ একনিষ্ঠভাবে কে আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছে তা পরীক্ষা করার জন্য আল্লাহ তার বান্দাদের পরীক্ষা করেন। আল্লাহ বলেন,
“মানুষ কি মনে করে যে “আমরা ঈমান এনেছি” – এ কথা বলেই অব্যাহতি পেয়ে যাবে, আর তাদেরকে পরীক্ষা করা হবেনা? আমি অবশ্যই তাদের পূর্বে যারা ছিলো তাদেরকে পরীক্ষা করেছি। আর আল্লাহ অবশ্যই জেনে নিবেন কারা সত্যবাদী আর কারা মিথ্যাবাদী।”
সুরা আনকাবুত, আয়াত ২-৩। এছাড়া অন্য জায়গায় আল্লাহ বলেন,
“মানুষের মধ্যে কেউ কেউ দ্বিধা-দ্বন্দ্বে জড়িত হয়ে আল্লাহর ইবাদত করে। যদি সে কল্যানপ্রাপ্ত হয়, তাহলে ইবাদতের উপর কায়েম থাকে। আর যদি কোনো পরীক্ষায় পড়ে তাহলে সে পূর্বাবস্থায় (কুফুরিতে) ফিরে যায়। সে ইহকাল ও পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত, এটাই সুস্পষ্ট ক্ষতি।
সুরা হাজ্জ, আয়াত ১১।