বিবাহ-নামা: বহু-বিবাহ পর্ব-১

প্রকাশিত: ৯:৫৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৮, ২০২০ 549 views
শেয়ার করুন

এখনকার যুগে বিয়ে করা বেশ কঠিন ব্যাপার আমরা সবাই কম-বেশী জানি।তালাক টাও অনেক সোজা হয়ে গেছে..বহু বিবাহ ও বাড়ছে।মানুষ ৪বিয়ের হাদীস কপচায়..এসব ব্যাপারে ভুল ত্রুটি গুলা পর্যায়ক্রমে তুলে ধরবো কয়েকটা পর্বে।আজকের পর্বে তুলে ধরবো ৪ বিয়ের হাদীস সমর্থন কারী এবং যারা একাধিক বিয়ে করেন তাদের কথা..ইসলাম ৪বিয়ে সমর্থন করে।

৪বিয়ের অনেক কারণ ও আছে।তার অনেক রকম হাদীস ও আছে।হাদীস রেফারেন্সে না যাই।কিন্তু বহু বিবাহের পরবর্তীতে করনীয় কি কিংবা কি রকম আচার আচরণ হওয়া উচিত সেটা নিয়ে মানুষ ওয়াকিবহাল না।এখনকার যুগে স্ত্রীরা স্বামীর ২য় বিবাহ হলে স্বামীকে তালাক দেন।স্বামীরাও যদি একাধিক বিয়ে করে অনেক সময় ২স্ত্রী নিয়েই থাকেন।কিন্তু কয়জন স্বামী তাদের স্ত্রীদের সাথে ন্যায় আচরণ করতে পারেন?সাধারণত যা হয় ২স্ত্রীর একজন থাকে কষ্টে।অপরজন থাকে দুধে-ভাতে।এক স্ত্রীর বাচ্চারা পায় অবহেলা।অপরজন স্ত্রীর বাচ্চা পায় অনেক ভালোবাসা যত্ন!কেন এত বৈষম্য ?

২জন স্ত্রী থাকবে।২জন স্ত্রীর জন্য সমান সব কিছু।একই রং এর ২জনের জন্যই নিতে হবে।কিংবা ভিন্ন রং এর শাড়ি না হয় কিনেন।কিন্তু একজনের জন্য কিনলে অপরজনের জন্য ও নিতে হবে।২জনের প্রতিই কেয়ার নিতে হবে।একজনের প্রতি ভালোবাসা না থাকলেও দায়িত্ব-কর্তব্য অবশ্যই পালন করতে হবে।বাচ্চা তো আপনার ই।কিভাবে আপনি আপনার নিজ বংশধারার ক্ষেত্রে ভেদাভেদ করতে পারেন?ওদের শরীর কাটলে তো আপনার ই রক্ত বের হয়ে আসবে!

একজনের লাল পেন্সিল আনলে অপর জনের জন্য ও আনতে হবে।সমান হারে বন্টন থাকতে হবে।ভালোবাসা না থাকুক।সন্তানের ক্ষেত্রেও দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে হবে।কিছু উদাহরণ দেই।আমার ছোট খালার বিয়ে হয় মুক্তিযুদ্ধের সময়ে।বেশ সুন্দরী ছিলেন।পাকিস্তানি হায়েনাদের বদ নজর থেকে বাঁচানোর জন্য তার বিয়ে দেয়া হয় এক বিহারীর সাথে।শুরুতে কেউই জানতো না তার স্ত্রী আছে।যখন জানলো সবার ই মন বেশ খারাপ ছিলো।

বিয়ে যেহুতু হয়ে গেছে কি আর করা খালু দেশেই ছিলেন।খালুর ২স্ত্রী।২স্ত্রীর জন্য সমান ভাবে সব কিছু নিয়ে আসতেন।ফার্নিচার ও সেইম ছিলো ২বউ এর বাড়িতে!সন্তানদের ক্ষেত্রে সমানভাবে সম্পদ বন্টন করে দিয়ে যান।২স্ত্রী বান্ধবীর মতন মেলামেশা করতেন।তাদের সন্তানেরা একে অপরের বাসায় বেড়াতে যেতো।ছোটা খালাকে ছোট মা বলে ডাকতো।ছোট খালার সন্তান খালুর প্রথম স্ত্রীকে বড় মা বলে ডাকতো।খালু তো অনেক বছর আগেই মরে গেছে।তাদের মাঝে কিন্তু আত্মীয়তা এখনো আছে।আরব দেশে পুরুষরা মাশা আল্লাহ তারা তো একাধিক বিয়ে করেন সেটা সবার ই জানা কথা।তাদের অনেক উপ-পত্মী ও আছে।সবাইকে ঘর-বাড়ি, গাড়ি,অর্থ সম্পদ করে দিয়েছেন।স্ত্রীকে ভালো লাগে না।অন্য কোন স্ত্রীর সাথে সময় কাটাচ্ছেন।কিন্তু তাদের মৌলিক অধিকারগুলা পূরণ করে যাচ্ছেন।সন্তানদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করেন।

  • সব স্ত্রীদের সন্তানেরা সুন্দর মিলেমিশে খেলে, গল্প করে,সময় কাটায়।পুরুষরা আর যাই হোক স্ত্রীদের সাথে সময় না ই বা কাটালেন,কিন্তু নির্দিষ্ট একটি দিনে সব স্ত্রীদের সন্তানদের সাথে সময় কাটান।এখন অনেকে বলবে আরবিদের তো অনেক সম্পদ।বাংগালীদের ক্ষেত্রে এটা তো এভাবে পালন করা সম্ভব না।কিন্তু ব্যতিক্রম ও আছে অনেকে।অনেক বাংগালী আছেন আমিরাতে দেখেছি যার ২/৩টা স্ত্রী আছে।সবাইকে বাড়ি,ঘর প্রয়োজনীয় যা আছে তা দিয়ে দিয়েছেন।হয়তো স্ত্রীর কাছে যান না।তবে মৌলিক চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছেন।সন্তানদের হক আদায় করে যাচ্ছেন!আর ভালোবাসার মানুষটার সাথে সময় কাটাচ্ছেন।এভাবে হক আদায় করে চললে সমস্যা কি?স্বামী যদি ২য় বিয়ে করেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ২য় স্ত্রীকেই সবাই দোষারোপ করে!স্বামীকে কেন করে না?ভিতরের পারিপার্শ্বিক ব্যাপারটা কেউ কেন জানতে চায় না?

ভিতরে তো অনেক রকম গল্প থাকতে পারে!এখনকার স্ত্রীরা চায় তার স্বামী যেনা করুক।বিয়ে করে হালাল ভাবে কিছু করুক সেটাকে সমর্থন করেন না।অনেক ক্ষেত্রে নিজের দোষ,অক্ষমতা গুলোকে স্বীকার করেন না।একটা পুরুষ অনেক কারণেই ২য় বিয়ে করতে পারেন এই ব্যাপারে পরের পর্বে আলোচনা করবো।আরেকটা দুঃখের বিষয় প্রতিটা স্ত্রী তার স্বামীকে নিষ্পাপ মনে করেন।সব সময়ে অপর স্ত্রীকে দোষারোপ করেন।একজনের আরেকজনের উপর নেগেটিভ প্রভাব খাটান।হয় বড় স্ত্রী ছোট স্ত্রীর উপর জুলুম করেন নাহয় ছোট স্ত্রী বড় স্ত্রীর উপর জুলুম করেন।২জনেই তো মেয়ে।২জনের ব্যাথাই তো প্রায় একই।কিভাবে এক নারী আরেক নারীর উপরে জুলুমকারী হতে পারে?আর মানুষের আরেকটা প্রশ্ন আসবে উপমা তুমি তো তোমার এক্স স্বামীকে ছাড় দাও নাই।মজার ব্যাপার হলো এই যে আমি তাকে নিজেই ২য় বিয়ের অনুমতি দিয়েছিলাম।

আমাকে যেহুতু ভালো লাগে না ইটস ওকে।তুমি অন্য কারো সাথে নতুন জীবন শুরু করো।আমার আপত্তি নাই।কিন্তু আমি তালাক দিবো না।নিবো ও না।বাচ্চাদের হক শুধু আদায় করো।সেটা কোনটা না করেই তালাক দিয়ে চলে গেছে।অহ হ্যা যারা ৪বিয়ে সমর্থন করে এবং একাধিক বিয়ে বাস্তবায়ন করেন তাদের জন্য আবেদন একাধিক বিয়ে তখন ই একটা পুরুষ করতে পারবে যখন সে তার একাধিক স্ত্রী এবং তাদের সন্তানের ব্যয় ভার সুন্দর করে বহন করতে পারবে।নচেৎ একাধিক বিয়ে করে আরেকজনের প্রতি জুলুম অপরজনের প্রতি ভালোবাসা কর্তব্য পালন করে নিজের পাপের পাল্লা ভারী করার মানে হয় না।হাশরের ময়দান নামেও তো একটা কোর্ট আছে সেখানে তো আল্লাহকে আপনার জবাবদিহি করতে হবে তাই না!কেউ কি তা এড়িয়ে যেতে অক্ষম হবেন?