লন্ডনে আন্দোলনের মুখে অপসারণ করা হলো মিলিগানের ভাস্কর্য

এম এ জামান এম এ জামান

বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ৬:২৯ অপরাহ্ণ, জুন ১০, ২০২০ 548 views
শেয়ার করুন

ইস্ট লন্ডনের ক্যানারি ওয়ার্ফ এলাকার ডকল্যান্ড মিউজিয়ামের সামনে স্থাপিত ক্রীতদাস ব্যবসায়ী রবার্ট মিলিগানের ভাস্কর্য অপসারণের দাবি উঠেছিল ৮ জুন সোমবার। লন্ডন বারা অব টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কাউন্সিলার এহতেশাম হক একটি পিটিশন অপেন করে সাইন-আপ করার আহ্বান জানান। সাথে সাথে ভাস্কর্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার প্রত্যয় ঘোষণা করেন। এরই অংশ হিসেবে ৯ জুন সাড়ে ৬ টায় মিউজিয়াম অব লন্ডন ডকল্যান্ডের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

আহ্বানের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইস্ট-এন্ডের প্রায় পাঁচ হাজার জনগণ পিটিশনে স্বাক্ষর করেন। সাথে মেয়র জন বিগস প্রপার্টির স্বত্বাধিকারীদের চাপ অব্যাহত রাখলে “ক্যানেল এন্ড রিভার ট্রাস্ট” নড়েচড়ে বসে এবং ভাস্কর্যটি দ্রুত অপসারণের সিদ্ধান্ত নেয়।
ধারণা করা হয়েছিল মুর্তিটি ১০ জুন অথবা পরে নিরাপদে অপসারণ করা হবে। কিন্তু  সোস্যাল মিডিয়ায় ৯ জুনের প্রতিবাদ সমাবেশের প্রতি জনগণের সমর্থনের ফলে কর্তৃপক্ষ সোমবার সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার পর সোমবার সকাল থেকে মিউজিয়ামের সামনে ও ভাস্কর্যের আশেপাশে ছিলো পুলিশের উপস্থিতি। দুপুরের পর থেকে শুরু হয় অপসারণের প্রস্তুতি, ব্যরিকেড দেয়া হয় ও কাপড় দিয়ে মুর্তির মুখ ঢেকে রাখা হয়।

অপরদিকে সাড়ে ছয়টা বাজার আগেই প্রতিবাদী ও উৎসুক জনতা মুর্তির সামনে জড়ো হতে থাকেন। বিকাল সাড়ে ছয়টায় উপস্থিত জনতা “ব্লাক লাইভ ম্যাটার” ও “নো জাস্টিস – নো পিস” স্লোগান দিতে থাকেন। এরই মধ্যে চলতে থাকে অপসারণের কাজ।

ঘড়ির কাটা যখন সন্ধ্যা ৭ টা ১২ মিনিট মুহুর্মুহু করতালির মাধ্যমে নামানো হয় রবার্ট মিলিগানের ভাস্কর্য। সফল হয় মানবতাবাদীদের একটি আন্দোলন। উল্লেখ্য রবার্ট মিলিগানের জন্ম ১৭৪৬ সালে আর মৃত্যু  ১৮০৯ সালে। ছিলেন ব্যবসায়ী (আমদানী কারক)। মৃত্যুর সময় তার ছিলো ৫ শতাধিক ক্রীতদাস । ১৮১৩ সালে নির্মিত মিলিগানের এই ভাস্কর্যটি মিউজিয়াম অব লন্ডন ডকল্যান্ডস এ স্থাপিত হয় ১৯৯৭ সালে।

প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মেয়র জন বিগস, ডেপুটি মেয়র আসমা বেগম, স্পীকার ভিক্টোরিয়া অবাজি, ডেপুটি স্পীকার আহবাব হোসেন সহ ক্যাবিনেট মেম্বার, কাউন্সিলার্স, রাজনৈতিক, শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি, সাংবাদিক, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট সহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।