করোনা ভাইরাস মৃত্যুর যমদূত, আক্রান্ত প্রায় ৪৭ লক্ষ

আমিনুল হক আমিনুল হক

বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ৪:১৭ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০২০ 976 views
শেয়ার করুন
করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারন করায় বিশ্ব আজ থমকে গেছে। আক্রান্তের সাথে সাথে থামছেই না মৃত্যুর মিছিল। গত ডিসেম্বরে চীন থেকে শুরু হওয়া এই মহামারি ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে দ্বিগুন হারে বাড়ছে এবং গাছের পাতার মতো ঝরছে প্রাণ। গত কয়েকদিনে প্রায় লাখের কাছাকাছি মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৪ লাখের বেশী মানুষ
 
আজ (শনিবার) এখন পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লক্ষ ৮ হাজার ৯৯৭ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪৬লাখ ৪২ হাজার ৯০৯ জন। অপরদিকে ১৭ লাখ ৬৮ হাজার ৩১৫ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
 
গত বছরের ডিসেম্বরে চীন থেকে এই মহামারি শুরু হলেও এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যায় সবার ওপরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ২৮৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৮৮ হাজার ৫০৭ জনের। শুরুর দিকে ইউরোপের দেশ ইতালি সবার উপরে থাকলেও এখন আক্রান্তের দিকে স্পেন ও মৃত্যুর দিকে যুক্তরাজ্য এগিয়ে।
 
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরপরই আক্রান্তের দিক দিয়ে এগিয়ে এসেছে ইউরোপের দেশ স্পেন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ইতালি। ইউরোপে আক্রান্তের দিকে স্পেন সবার উপরে থাকলেও মৃত্যুর দিক দিয়ে সবার ওপরে রয়েছে যুক্তরাজ্য। মহামারী করোনা ভাইরাসে এখন (নিউজ লেখা পর্যন্ত) পর্যন্ত স্পেনে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৩৬৭ জন। রাশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭২ হাজার ৪৩ জন। যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৭১১ জন, ইতালিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৫ জন। যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৩ হাজার ৯৯৮ জন, ইতালিতে মৃত্যু ৩১ হাজার ৬১০ জন এবং স্পেনে মৃত্যুর সংখ্যা ২৭ হাজার ৪৫৯ জন।
 
আর এসব তথ্য করোনাভাইরাস নিয়ে লাইভ আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।
 
চীনের উহান থেকে বিস্তার শুরু করে গত তিন মাসে বিশ্বের ২০০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। চীনে করোনার প্রভাব কমলেও বিশ্বের অন্য কয়েকটি দেশে মহামারি রূপ নিয়েছে। কিন্তু এই ভাইরাসে চীনের মূল ভূখণ্ডে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ৯৪১ জন। আর মারা গেছেন ৪ হাজার ৬৩৩ জন।
 
এদিকে বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৯৯৫ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সর্বমোট মৃতের সংখ্যা ৩১৪ জনে এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৪ হাজার ১১৭ জন।
 
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নেয়া হয়েছে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ। অধিকাংশ দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নিশ্চিত করতে মানুষের চলাফেরার ওপর বিভিন্ন মাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। কোনো কোনো দেশে আরোপ করা হয়েছে সম্পূর্ণ লকডাউন, কোথাও কোথাও আংশিকভাবে চলছে মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধেক মানুষ চলাফেরার ক্ষেত্রে কোনো না কোনো মাত্রায় নিষেধাজ্ঞার ওপর পড়েছেন।
 
স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ পড়ার কারণে কিছুদিনের মধ্যেই অনেক দেশেই স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সরঞ্জাম ও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণের ঘাটতি দেখা যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
 
২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। নিউমোনিয়ার মত লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
 
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।