বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরও গভীর করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র

লুৎফুর রহমান লুৎফুর রহমান

সম্পাদক ও সিইও, বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ৬:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৪, ২০২৪ 36 views
শেয়ার করুন

 

মার্কিন ভারপ্রাপ্ত উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্কট উরবম বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসাবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, গত ৫০ বছরে তারা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অন্যান্য খাতে বাংলাদেশে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছে।

তিনি আরও বলেন যুক্তরাষ্ট্র আগামী ৫০ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে এই অংশীদারিত্ব আরও দৃঢ় করতে আগ্রহী।

মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে এক অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে স্কট উরবম এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে সন্ধ্যায় দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, মার্কিন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্কট উরবম বলেন, মাতৃভাষা দিবস শুধু বাংলাদেশের জনগণের কাছে নয়, সমগ্র পৃথিবীর মানুষের হৃদয়ে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। যারা বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা ও বাংলা ভাষা রক্ষায় অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন; সেইসব বীরদের মহান আত্মত্যাগের কথাও শ্রদ্ধার সঙ্গে উল্লেখ করেন তিনি।

মার্কিন ভারপ্রাপ্ত উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজ ২৬৫ মিলিয়ন বাংলা ভাষাভাষী নিয়ে বাংলা বিশ্বের ৭ম সর্বাধিক উচ্চারিত ভাষা হিসেবে বিশ্বে স্থান করে নিয়েছে এবং এটি সারা বিশ্বে বাংলা ভাষার প্রভাব ও গুরুত্বের প্রমাণ বহন করে।

রাষ্ট্রদূত ইমরান তার বক্তব্যে মহান ভাষা আন্দোলনের সব শহিদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

তিনি মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে বাঙালি জাতির ‘বাতিঘর’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, ভাষা সৈনিকদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সমৃদ্ধ বাংলা ভাষা বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরার উপযুক্ত কূটনৈতিক মাধ্যম হতে পারে।

রাষ্ট্রদূত বলেন মহান ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সক্ষমতা নিয়ে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি নতুন প্রজন্মকে সমৃদ্ধ বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে আরও জানার জন্য উৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি অনুরোধ জানান।

পরে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে একটি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে দূতাবাস পরিবার, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ফরেন সার্ভিস ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা এবং ভারত, নেপাল, জাপান ও শ্রীলঙ্কার শিল্পীরা এবং একটি বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক দল সঙ্গীত ও দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে উপস্থিত দর্শকদের মুগ্ধ করেন।

এর আগে সকালে বঙ্গবন্ধু অডিটোরিয়ামে গৌরবোজ্জ্বল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ও ডিফেন্স অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহেদুল ইসলাম অংশ নেন।

রাত ১২ টা ১ মিনিটে দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে দূতাবাস প্রাঙ্গণে অবস্থিত শহিদ মিনারের পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং ‘প্রভাত ফেরি’ বের করার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।

দিনের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল দূতাবাসের প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রদূত কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ প্রতিকৃর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, তথ্যচিত্র প্রদর্শন, বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন এবং এ উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরষ্কার বিতরণ।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন মিনিস্টার (ইকনোমিক) ড. মো. ফজলে রাব্বি, মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মো. রাশেদুজ্জামান এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি অহিদুজ্জামান নূর।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি, ফার্স্ট সেক্রেটারি (পাসপোর্ট এবং ভিসা উইং) মুহাম্মদ আব্দুল হাই মিলটন এবং ফার্স্ট সেক্রেটারি মো. আতাউর রহমান।