২০১১ থেকে ২০২০ সালে ১০ বছরে ৫৯ লাখ ৮৪ হাজার ৯৪৩ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। সর্বোচ্চ ১০ লাখ ৮ হাজার ৫২৫ জন বিদেশে গেছেন ২০১০ সালে। সর্বনিম্ন ২ লাখ ১৭ হাজার ৬৬৯ জন কর্মী বিদেশে গেছেন ২০২০ সালে।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে প্রবাসী ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিনের সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
নোয়াখালী-২ আসনের সরকার দলীয় সাংসদ মোরশেদ আলমের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, করোনার মধ্যে বৈদেশিক শ্রমবাজার সম্পর্কে মিশনসমূহ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সৌদি আরব, ইউএই, বাহারাইন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ ২৫টি দেশের পরিবর্তিত কর্মসংস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া গেছে।
মন্ত্রী বলেন, সেই অনুসারে দক্ষ কর্মী তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুন করে পোল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, উজবেকিস্তানে শ্রমবাজারে লোক প্রেরণ শুরু হয়েছে। কম্বোডিয়া, সেসেলম ও চীনেও কর্মীরা যাচ্ছেন। এছাড়াও সম্ভাবনাময় দেশসমূহের সাথে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমঝোতা স্মারক সইয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ফেরত আসা কর্মীদের রিইন্টিগ্রেশনের জন্য ওয়েজ অনার্স কল্যাণ বোর্ড একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এতে প্রত্যাগত কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রবাসীদের সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়াও রিটার্নিং ডাটাবেইজ প্রণয়ন করা হচ্ছে। এ জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাতে আইএলও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে।
মন্ত্রী জানান, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ করা হবে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। গত ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারি ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা হয়েছে। বিদেশে গমনেচ্ছু শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য উপজেলা পর্যায়ে আরও ৭১টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী জানান, করোনায় চাকরিচ্যুত কিংবা প্রবাসে করোনায় মৃতের পরিবার, বিদেশ থেকে ফেরত আসা কর্মীদের জন্য জন্য প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিনিয়োগ ঋণ প্রদানের জন্য ওয়েজ অনার্স বোর্ডের তহবিল থেকে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ফেরত আসা কর্মীদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ২০০ কোটি টাকা থেকে ৪ শতাংশ সুদে গত ৮ জুন পর্যন্ত ২ হাজার ৮৫৩ জনকে ৭০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা এবং ৫০০ কোটি টাকা থেকে (পুরুষদের ৯ শতাংশ ও নারীদের ৭ শতাংশ সুদ) ৭ হাজার ২৭ জনকে ১৫৫ কোটি ৬১ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। সারাদেশের ৮২টি প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের শাখা থেকে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম-৪ আসনের সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে ইমরান আহমদ বলেন, ১৯৯১ সালে বিদেশে নারীকর্মী পাঠানো শুরু হয়। তখন থেকে চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত ৯ লাখ ৯৩ হাজার ২৩৯ জন নারীকর্মী বিদেশে গেছেন।
মন্ত্রী বলেন, নারীকর্মীদের পক্ষে নিয়োগকর্তা বা অন্যকোনো ব্যক্তি ব্যাংকে রেমিটেন্স প্রদান করতে পারেন। তাই তাদের পাঠানো রেমিটেন্সের তথ্য আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়নি।