সিলেটে টিকটক ও লাইকি ভিডিও তৈরির ফাঁদে ফেলে ১৬ বয়সী তরুণীকে ধর্ষণ

মাহবুব জয়নুল মাহবুব জয়নুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, জুন ২, ২০২১ 675 views
শেয়ার করুন

ইন্টারনেট আসক্তির ভয়াবহ নাম টিকটক, লাইকি। এসবকে কেন্দ্র করে ধারাবাহিকভাবে ঘটে চলেছে একের পর নির্মম ঘটনা। এতে আসক্ত কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে তরুণ সমাজ। শুটিং হচ্ছে রাস্তায়, ছাদে, যত্রতত্র। এমনকি বাসায়, বারান্দায় বসে মুহূর্তের মধ্যে তৈরি হচ্ছে ভিডিও। বিভিন্ন গানের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে নিজের অঙ্গভঙ্গি। ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপে আপলোড করা হচ্ছে। ভার্চুয়াল মাধ্যমে ছড়িয়ে যাচ্ছে সর্বত্র। অলস সময় কাটানো মানুষ তা দেখছেন।

মানহীন এসব ভিডিওতে বিপথগামীও হচ্ছেন অনেকে। রাতারাতি জনপ্রিয় হতে টিকটক, লাইকি বেছে নিচ্ছেন এক শ্রেণির মানুষ। টিকটককে কেন্দ্র করে সংসার ভাঙছে। আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। এমনকি ঘটেছে হত্যাকাণ্ডও। এই নেশা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাদকের চেয়ে ভয়াবহ। ভার্চ্যুয়াল এই নেশায় আক্রান্ত হয়ে অনেকেই নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাচ্ছেন।

সিলেটে টিকটক ও লাইকি ভিডিও তৈরির ফাঁদে ফেলে ১৬ বয়সী তরুণীকে ধর্ষণ এর ঘটনা ঘটেছে..

গত ১৯-০৫-২০২১ইং তারিখে ‌ টিকটক ও লাইকি ভিডিও তৈরির ফাঁদে ফেলে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে লাইকি ও টিকটক অভিনেতা জুবায়ের আহমেদ ফান্নি নামের এক যুবক এবং সহযোগিতা করেছেন লিজা নামের আরেক লাইকি অভিনেত্রী।

এ বিষয়ে কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে দুই জনের বিরুদ্ধে সিলেট এস এম পির শাহপরান (রহঃ) থানায় গতকাল একটি মামলা দায়ের করেছেন। উক্ত মামলা হতে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুরের সোনিয়া আক্তার ( ছদ্ম নাম) বেশ কিছুদিন যাবৎ লাইকি টিক টক এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে।

গত প্রায় মাসখানেক আগে সিলেট টিলাগড়ে বসবাসরত লাইকি অভিনেতা লিজা নামক এক মেয়ের সাথে সোনিয়ার পরিচয় হয়। পরিচয় থেকে তাদের মধ্যেও বেশ বন্ধুত্বও জমে ওঠে। লিজার মাধ্যমে সিলেট শিবগঞ্জ লামাপাড়া মোহিনী ৮৩/এ এর বাসিন্দা আব্দুল লতীফ এর ছেলে ধর্ষক জুবায়ের আহমেদ ফান্নির সাথে সোনিয়ার পরিচয় ঘটে। গত ঈদের পরবর্তী সময়ে জাফলংয়ে লাইকিতে শুটিংয়ের জন্য লিজা সোনিয়াকে প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি সোনিয়া তার বাবার সাথে শেয়ার করলেন সোনিয়ার বাবা লিজার সাথে ফোনে কথা বলে মেয়েকে অভিনয়ের জন্য যাওয়ার অনুমতি দেয়।

গত ১৯-০৫-২০২১ ইং তারিখ সোনিয়ার এক আত্মীয়র বিশ্বনাথের বাসা হতে ধর্ষক ফান্নি ও লিজা তাকে একটি সিএনজি করে নিয়ে আসে। সিলেটে আসার পরে শাহপরান থানাধীন লামাপাড়া এলাকায় মহিনি ৮৩/এ বাসার সামনে সিএনজি ব্রেক করে। ফান্নি ও লিজা সোনিয়াকে সাথে নিয়ে ওই বাসায় প্রবেশ করে। লিজা সোনিয়াকে ওই বাসায় রেখে পোশাক পরিবর্তন করার কথা বলে সে চলে যায়। এরপর ফান্নি সোনিয়াকে নাস্তা ও কোল্ড ড্রিংকস খেতে দেয়। সরল বিশ্বাসে এটা সোনিয়া খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

সে বান্ধবী লিজা ও তার বাবাকে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করলে ধর্ষক তার ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে প্রচুর পরিমাণে মারধর করে। এতে করে সনিয়া নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ধর্ষক ফান্নি সোনিয়ার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং সারারাত তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়। পরবর্তী দিন সকালে সোনিয়া উক্ত ঘটনা কারো কাছে যাতে না বলে সেই বিষয়ে ধর্ষক ফান্নি সতর্ক করে হুমকি ধামকি দিয়ে অসুস্থ অবস্থায় সোনিয়াকে হোটেলে নিয়ে নাস্তা করে এবং পরবর্তীতে সিএনজি করে বিশ্বনাথ সেই আত্মীয়র বাসায় সামনে নামিয়ে দিয়ে আসে ।

 

সোনিয়ার আত্মীয় তাকে অসুস্থ অবস্থায় দেখে সোনিয়ার বাবাকে ফোন করলে তার বাবা দ্রুত তাকে নিয়ে বাড়িতে যেতে বলে। সোনিয়া বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।রিক্সা চালক বাবা সারাদিন কাজ করে বাসায় এসে মেয়ের জ্ঞান ফেরার পর বিস্তারিত জেনে প্রথমে রেব

পরবর্তীতে শাহপরান থানার সহায়তা নেন। অতঃপর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, আসক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতা ও সহায়তায় সোনিয়াকে ওসমানী মেডিকেলের ওসিসি ডিপার্টমেন্টে ভর্তি করে চিকিৎসা চিকিৎসা শেষে শাহরান (রহঃ) থানায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই অঞ্জন সিংহ এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে থানায় তিনি মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন অত্র থানায় মামলা রেকর্ড হয়েছে। মামলা নং- ০১। তারিখ ০১-০৬-২০২১ইং। পুলিশের পক্ষ হতে আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে সকল ধরনের তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

 

আমাদের প্রতিনিধি ধর্ষক ফান্নির মুঠোফোন ০১৭৮৫৯৫৪৮৩৭ মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে প্রথমবার খোলা পেলেও পরবর্তীতে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। যাহা বারবার চেষ্টা করার পরও আর তার ফোন খোলা পাওয়া যায় নাই।