আমিরাতে জাতির পিতার জুলিও-কুরি শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকীতে প্রেস কনফারেন্স

লুৎফুর রহমান লুৎফুর রহমান

সম্পাদক ও সিইও, বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ৭:০৭ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২১ 433 views
শেয়ার করুন

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জুলিও-কুরি শান্তি পুরস্কার প্রাপ্তির ৪৮তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস আবুধাবি আজ মধ্যাহ্নে ইউএই এবং বাংলাদেশ ভিত্তিক বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহনে “মিট দ্যা প্রেস” এর আয়োজন করে। কভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে যারা সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেনটি তারা জুম প্লাটফর্মে এ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। দূতাবাস ও দুবাইস্থ কনস্যুলেট জেনারেল-এর কর্মকতাবৃন্দও এ সভায় অংশগ্রহন করেন।

মান্যবর রাষ্ট্রদূতের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর এ দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সৌজন্যে একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরবর্তীতে অংশগ্রহনকারী সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধিবৃন্দ তাদের মতামত ব্যক্ত করেন। তারা দূতাবাসের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।

রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতা আজীবন শান্তির জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি, মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত ছিলেন। তিনি বলেন, বংগবন্ধু ছিলেন বাংলাদেশ ও সারা বিশ্বের সব শান্তিপ্রিয় মানুষের কাছে শ্রদ্ধার পাত্র। তাঁর শান্তিকামী নীতি ও আদর্শের সুবাদে বিশ্বের কাছে গোটা বাংলাদেশই আজ শান্তিপ্রিয় দেশ হিসেবে পরিচিত হয়েছে । বঙ্গবন্ধুর এ শান্তিকামী নীতি ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তাঁর অবদানের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৭২ সালের অক্টোবরে জাতির পিতাকে ‘জুলিও-কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে এবং ১৯৭৩ সালের ২৩ মে ঢাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁকে এ পদক প্রদান করা হয়। এ অর্জন বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মাননা যা একদিকে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে বিশ্বসভায় উন্নত করেছে, অপরদিকে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি প্রাপ্তির গতিকে ত্বরান্বিত করেছে। এ পদক প্রাপ্তি জাতি হিসেবে আমাদের জন্য এক অনন্য ও কালজয়ী অর্জন।

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বংগবন্ধুর দেখানো শান্তির পথেই হাটছে বাংলাদেশ। প্রায় ১২ লক্ষ বাস্তুচ্যুত ও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দান ও মানবিক সহায়তা প্রদান, শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা, পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষার প্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ, জাতিসংঘে ’ঈঁষঃঁৎব ড়ভ চবধপব’ প্রস্তাবনা উপস্থাপন ইত্যাদি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশ্ব-শান্তি উদ্যোগের উজ্জ্বল উদহরণ। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শান্তি ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এছাড়া পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে উন্নয়নের মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করাও তাঁর শান্তি-উদ্যোগের গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচীকে সমর্থন ও সহায়তা করার আহবান জানান।

মান্যবর রাষ্ট্রদূত বলেন, বর্তমানে এ অশান্ত পৃথিবীতে বিশ্ববাসী যখন শান্তির সন্ধানে মরিয়া, তখন বংগবন্ধু শান্তি ও মানবতার আদর্শ আরো বেশী প্রাসঙ্গিক হয়ে আবির্ভূত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে বংগবন্ধুর জুলিও-কুরি শান্তি পুরস্কার অর্জনের বার্ষিকী পালনের মাধ্যমে তাঁর শান্তি দর্শন আলোচনা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় বাংলাদেশ সরকার বিশ্বের দরবারে বংগবন্ধুর শান্তি দর্শন নতুন করে তুলে ধরার যে উদ্যোগ নিয়েছে তার অংশ হিসেবে দূতাবাস এ সভার আয়োজন করেছে। তিনি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহনকারী সকল মিডিয়া প্রতিনিধিদের এ বিষয়টি যথাসম্ভব প্রচারের আহবান জানান।