সিলেটের বিয়ানীবাজার – নিদনপুর গ্রামে করোনার উপসর্গ নিয়ে একজন ৭০ বছরের ,বৃদ্ধা মৃত্যু বরণ করেন

প্রকাশিত: ১:০৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২০, ২০২০ 864 views
শেয়ার করুন

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার নিদনপুর গ্রামের মুন্সীবাড়ী, নিবাসী জনাব সওয়াব আলী সাহেবের স্ত্রী , কুতুবুন নেসা(৭০) আজ ১৯/৮/২০২০ ইং বেলা ০১ঃ৩৫ মিনিটের সময় সিলেটের একটি হাসপাতালে (কোভিড-১৯) উপস্বগ নিয়ে মৃত্যু বরণ করেন , লাশ দাফন কাজ করেছে , বিয়ানীবাজার উপজেলার করোনায় মৃত্যদের দাফন ও সৎকার স্বেচ্ছাসেবী পরিষদের সদস্যরা। এমন দুর্যোগে স্বজনরা দূরে সরে গেলেও স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

ইতোমধ্যে ৪ জন মহিলার দাফন সহ সর্বমোট ১৫ টি জানাজা সম্পূর্ণ ) সেচ্চাসেবীরা মৃতদেহ দাফনকাজ সম্পন্ন করে করেছেন । মৃতদের দাফনে সারাদেশে প্রায় ’ স্বেচ্ছাসেবীরা এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাক্বওয়া ফাউন্ডেশন সহ বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে এসেছেন দেশের এই ক্লান্তিলগ্নে।

বিয়ানীবাজার উপজেলার করোনায় মৃত্যদের দাফন ও সৎকার সেচ্চাসেবী পরিষদ – দাফন কার্যক্রমের সমন্বয়ক ও দায়িত্বশীলরা জানান, করোনায় নিহতদের লাশ ফেলে স্বজনদের পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর, আমাদের বিয়ানীবাজার উপজেলার সেচ্চাসেবী টিম গঠন করা হয়, কওমী মাদ্রাসার অভিজ্ঞ আলেমগন ও মানবাধিকার কর্মী,ব্যাবসায়ী, সংবাদ কর্মী , নিয়ে একটি টিম করা হয় ওইসব মৃতদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। করোনা পজিটিভ ও করোনায় মরদেহ দাফন ও সৎকারে স্বেচ্ছাসেবী পরিষদ গঠন করা হয়। বিয়ানীবাজার উপজেলার ইউ,এন,ও মহোদয়, ভূমি সহকারী কমিশনার ও বিয়ানীবাজার উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে গঠিত হয় একটি টিম। গত এপ্রিল থেকে ওই স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ শুরু করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিধি মেনে বাসায় গিয়ে মৃতদেহ গোসল করানো, কাফনের কাপড় পরানোসহ পুরো দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন স্বেচ্ছাবেসকরা। করোনায় মৃত্যদের দাফন ও সৎকার সেচ্চাসেবী পরিষদ এর যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন,

(১) ক্বারী মাওলানা আবুল কালাম (২) হাফিজ মাওলানা আবু- সাঈদ (৩) মাওলানা গোলাম রাব্বানী মাসুম (৪). হাফিজ মুফতি আব্দুল্লাহ (৫) এনায়েত হোসেন (এহসান) (৬) এম.এ জয়নুল চৌধুরী – (৭) ইসলামি ফাউন্ডেশন এর সম্বনয়ক – মাওলানা আব্দুর রহমান ও (৮) বিয়ানীবাজার উপজেলার মসজিদের ইমাম – মাওলানা – নজরুল ইসলাম সহ স্থানীয় জন প্রতিনিধি – ৯ং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, আব্দুর রহমান আফজাল।

সেচ্চাসেবীরা আরো জানান, দেশের যেকোনো খারাপ পরিস্থিতিতে সেচ্চায় দেশের ক্লান্তি লগ্নে সেচ্চাসেবীরা এগিয়ে আসবে। করোনায় মৃত্যদের দাফন ও সৎকার সেচ্চাসেবী পরিষদ এর পক্ষ থেকে শুধু মুসলিম নয়, হিন্দু ধর্মের মৃতদেহ সৎকারের জন্যেও আলাদা টিম কাজ করছে। মহিলা মৃতদেহের জন্যে আমাদের মহিলা স্বেচ্ছাসেবী দল রয়েছে।

সেচ্চাসেবীরা জানান , কবরস্থানে মৃতের পরিবারের হাতেগোনা কয়েকজন থাকেন। কখনো কখনো কেউই থাকেন না। তবে পুরো প্রক্রিয়ায় স্বজনদের কাছে না পেলে খুব কষ্ট লাগে। পরিবারের যে মানুষটা এতোটা বছর একসঙ্গে ছিলেন সেই মানুষটার শেষযাত্রায় স্বজনদের অনুপস্থিতি সত্যিই কষ্টদায়ক বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এবং বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (আর.এম.ও) ডাঃ ইছাক আযাদ – সেচ্চাসেবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন , জাতির এই ক্রান্তিকালে এই সম্মুখ যোদ্ধারা আমাদের সহযোগী হয়েছেন তাদের প্রতি অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও ভালবাসা জ্ঞাপন করছি ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সেচ্চাসেবী পরিষদ এর দাফন কার্যক্রম কাজের পুরো প্রক্রিয়ার ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক, সেফটি গ্লাস, ফেস শিল্ড, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস,ব্যাবহার করা হয়। মরদেহ বহনের জন্য বিশেষ বডি ব্যাগসহ সুরক্ষার জন্যে তিন ধরনের জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি মরদেহ দাফনকাজ এর পর সুরক্ষার জন্য পিপিইসহ পরিধেয় অন্যান্য সামগ্রী কবরস্থানের পাশে পুড়িয়ে ফেলা হয়।