অঘোষিত সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান

আমিনুল হক আমিনুল হক

বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ১:৩৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৫ 52 views
শেয়ার করুন

এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতায় ফাইনালের পথে বাংলাদেশের বাধা পাকিস্তান। সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজিত এশিয়া কাপ ২০২৫ এর ফাইনালে যেতে হলে পাকিস্তানকে হারানো ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই বাংলাদেশের সামনে।

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুবাইয়ে রাত সাড়ে আটটায় মুখোমুখি হবে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দল।

চলতি এশিয়া কাপের ফাইনাল অবশ্য নিশ্চিত করেছে ভারত। সুরিয়াকুমারের নেতৃত্বে এশিয়া কাপে দুর্দান্ত ছন্দে আছে ভারত। শিরোপার দাবিদার মনে করা হচ্ছে তাদেরকে। আসরে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ হারেনি দলটি। গ্রুপ পর্বের পর সুপার ফোরেও পাকিস্তান ও বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিয়েছে তারা।

গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে হারার পর সুপার ফোর পর্বের প্রথম ম্যাচেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বির কাছে হেরে যায় পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল তাদের অস্তিত্বের লড়াই। আবুধাবিতে সেই লড়াইয়ে লঙ্কানদের ৫ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের সম্ভাবনা টিকিয়ে রেখেছে পাকিস্তান। ওই এক ম্যাচের জয়ে যেন আত্মবিশ্বাসে টগবগ করে ফুটছে পাকিস্তান। সুপার ফোর থেকে বিদায়ের দুয়ারে থাকা সালমান আলি আগার দল এখন আঁকছে ট্রফির ছবি।

এখন ভারতের সাথে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান কাগজের হিসাব অনুযায়ী ফাইনালে ওঠার সুযোগ ধরে রেখেছে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের শিরোপা লড়াইয়ের আগে যা তৈরি করেছে টানটান উত্তেজনা।

বাংলাদেশের জন্য সমীকরণ কঠিন, পাকিস্তানের বিপক্ষে সুপার ফোরে নিজেদের শেষ ম্যাচে জটিল অঙ্কে ঝুলে আছে ফাইনালের স্বপ্ন। বাংলাদেশের জন্য বৃহস্পতিবারের ম্যাচ হয়ে উঠেছে টুর্নামেন্টের মোড় ঘোরানো লড়াই। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ইতোমধ্যেই দুই পয়েন্টে আছে দুই দলের। তবে ফাইনাল যেতে হলে পাকিস্তানকে হারিয়ে জয় পেতেই হবে। ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরে যাওয়ায় পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প নেই।

এদিকে পাকিস্তানের সমীকরণ তুলনামূলক সহজ। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারাতে পারলে ফাইনালে আবারো ভারতের মুখোমুখি হবে তারা।

বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের জয়ের ফলে শ্রীলঙ্কাকে ধরতে হচ্ছে দেশের পথ। শেষ ম্যাচে ভারতকে বড় ব্যবধানে হারালেও ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের খেলায় বিজয়ী দল ভারতের বিপক্ষে খেলবে এবারের এশিয়া কাপের ফাইনাল।

ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের একাদশ সাজানো নিয়ে প্রবাসীদের মনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ৪ পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজানো হয়। নিয়মিত অধিনায়ক লিটন কুমার দাস, অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী, পেশার তাসকিন আহমেদ ও শরিফুলের জায়গায় একাদশে ফিরেন পারভেজ হোসাইন ইমন, অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, স্পিনার রিশাদ হোসাইন ও পেশার তানজিম সাকিব।

ভারতের বিপক্ষে পেসার তানজিম সাকিব ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বল হাতে ৩ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ১ উইকেট ও ব্যাট হাতে ৭ বলে ৪ রান করেন। এছাড়া পারভেজ হোসাইন ইমন ব্যাট হাতে ১৯ বলে ১ ছক্কা ও ২ চারের সাহায্যে ২১ রান করে কুলদীপ যাদবের বলে অভিষেক শর্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। স্পিন অলরাউন্ডার রিশাদ হোসাইন বল হাতে ৩ ওভারে ২৭ রানের বিনিময়ে দুই উইকেট ও ব্যাট হাতে ৩ বলে ২ রান কুলদীপ যাদবের বলে তিলক বার্মার হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন।

অধিনায়ক ও উইকেটকিপার লিটন কুমার দাসের অনুপস্থিতে দায়িত্ব দেওয়া হয় জাকের আলী অনিকের কাধে। এবারের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের একাদশে ব্যর্থতার অপর নাম জাকের আলী। ভারতের বিপক্ষে দায়িত্ব পেয়েও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। এশিয়া কাপে ৫ ম্যাচ খেলে এখনো একটি ছক্কাও মারতে পারেননি! ৫ ইনিংসে করেছেন ৬৬ রান, স্ট্রাইক রেট ১১৮। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে অপরাজিত ৪১ রানের ইনিংসই তার সেরা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তো ইনিংসের শেষ ১১ বলেই খেলেছেন চারটি ডট। অপরাজিত থেকেছেন ১৩ বলে ১২ রানে। সেই ব্যাটিং নিয়েই হয়েছে প্রবল সমালোচনা। সুপার ফোরে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৪ বলে ৯ রান করলেও বাজে শটে স্টাম্প আউট হয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে চাপের ম্যাচে আবার খোলস ছেড়ে বেরোতে পারেননি। ৫ বলে ৪ রান করে রান আউটের ফাদে পরে সাজঘরের পথ ধরেন।

এশিয়া কাপের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ঘোষিত ১৬ সদস্যের দলে ৩ বছর পর নুরুল হাসান সোহানকে জাতীয় দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। এশিয়া কাপে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের ৫ ম্যাচের মধ্যে গ্রুপ পর্বে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে ইনিংসের শেষদিকে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ বলে ১২ রানে অপরাজিত থাকেন নুরুল হাসান সোহান। তার অবদানে ১৫৪ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। টানটান উত্তেজনার পর বাঁচা-মরার ম্যাচে ৮ রানের জয় তুলে নেয় লিটন দাসের দল। সেই ম্যাচে দলের সেরা ফিল্ডার ও ছিলেন তিনি। ১২ রানের ছোট ক্যামিও বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল সোহানের ইনিংসটি। এরপরও সুপার ফোরে শ্রীলঙ্কা ও ভারতের বিপক্ষে একাদশে জায়গা হয়নি তার।

প্রবাসীরা বলছেন, বাংলাদেশের বর্তমান স্কোয়াডে ফিনিশারের ভূমিকায় সোহানের চেয়ে বিকল্প কেউ নেই। অধিনায়কত্ব বা উইকেটকিপার দুই দিকেই সোহান অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ। সোহানের প্রতি বার বার অবিচার করা হচ্ছে। ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে সোহান নিজেকে মেলে ধরতে পারবেন এটাই প্রত্যাশা।

ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দেখতে আসা প্রবাসী শাহ আলম বলেন, প্রায় ৫ হাজার টাকা দিয়ে টিকেট নিয়ে খেলা দেখতে এসে হতাশ হয়েই ফিরছি। তবুও আশাবাদী, শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে খেলতে চাই। পাকিস্তানের বিপক্ষে জিততে হলে বাংলাদেশ সেরা একাদশ নিয়ে মাঠে নামতে হবে।