ছাগলকাণ্ডের বিচার শালিসে ‘স্টেইটম্যান্ট’ নিয়ে উত্তেজনা: হামলায় ২ মহিলাসহ আহত ৩

প্রকাশিত: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৮, ২০২৩ 279 views
শেয়ার করুন

শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের ঘোড়াডুম্বুর গ্রামে ছাগলকাণ্ডের ঘটনার নিষ্পত্তি করতে শালিসে বসে একজনের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে, এক পক্ষের হামলায় ২মহিলাসহ ৩জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ ঘটনাটি ঘটে। ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের আরিজ উল্লাহর ছেলে ছাত্তার মিয়ার পক্ষের আহতরা হলেন মানিক মিয়ার দুই মেয়ে আনছারুন বেগম (৩০) ও ইয়াছিরুন বেগম (২৬)। এর মধ্যে ইয়াছিরুন বেগম গর্ভবতী বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র। অপর আহত ব্যক্তি একই গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে আমিনুর রহমান পক্ষের গিয়াস উদ্দিন (৪৫)। তিনি বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন বলে জানিয়েছেন এই পক্ষের আলী হোসেন। গিয়াস উদ্দিন সম্পর্কে তার ভাই হন বলে জানান তিনি।

শালিস ব্যক্তিত্ব ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,
গত শুক্রবার ঘোড়াডুম্বুর গ্রামে ছাগলের গায়ে কাদা লেপে দেওয়াকে কেন্দ্র আমিনুর রহমান ও ছাত্তার মিয়ার পক্ষের মধ্যে সংষর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ৭জন আহত হয়েছিলেন। দু’পক্ষের মাঝে চলমান বিবেদ মিমাংসা করতে মঙ্গলবার উভয় পক্ষের সম্মতিতে একটি শালিস ডাকা হয়। শালিসে সব কিছুই ঠিকঠাক ছিলো। আগামীতে কেউ এমন ঘটনা ঘটালে অর্থদণ্ড করার হুশিয়ারিও দিয়েছিলেন শালিসি ব্যক্তিরা। শেষের দিকে দিকে ছাত্তার মিয়ার পক্ষের এক মহিলা স্বেচ্ছায় ‘স্টেইটমেন্ট’ বা ঘটনার বর্ণনা দিতে চাইলেন। তাকে সুযোগ দেওয়া হলে তিনি অপরপক্ষের লোকদেরকে বাজেভাবে সম্মোধন করতে থাকেন। অপমান জনক কথা বলেন। এতেই শালিসে উপস্থিত থাকা আমিনুর রহমান পক্ষের একদল তরুণ উত্তেজিত হয়ে শালিসস্থল ত্যাগ করে ছাত্তার মিয়ার পক্ষের মানুষের বাড়িতে হামলা চালায়। ইট, পাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় দু’জন মহিলা ও ১জন পরুষ আহত হয়েছেন। উপস্থিত শালিস ব্যক্তিরাই উভয়পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করে।

আমিনুর রহমানের পক্ষের লোক মো. আলী হোসেন বলেন, একজন মহিলা বাজেভাবে স্টেইটমেন্ট দেওয়া শুরু করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাদের লোক আহত হয়েছে। আমাদেরও একজন আহত হয়েছে। যারা মারামারি করেছে আমি তাদেরকে বখাবখি করেছি। শাসিয়েছি। আমাদের ও তাদের পক্ষের লোকজন হাসপাতালে আছেন। আগামী শনিবার আবার বিচার হবে। আপাতত তাদের চিকিৎসা করানো হচ্ছে। বিচারের জায়গায় মারামারি হয়নি, কিছু দূরে হয়েছে। বিচার চলাকালীর সময় এমন ঘটনা ঘটানো ঠিক হয়নি।

পূর্ব পাগলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা মজিদুর রহমান মধু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা বিচারে ছিলাম। সবকিছু ঠিকই ছিলো। একজন মহিলার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ছাত্তার মিয়ার পক্ষের লোকদের উপর চড়াও হয় আমিনুর রহমান পক্ষ। এটি কাম্য নয়। লজ্জার বিষয়।

উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাজি আবুল কালাম বলেন, যে মহিলা উগ্র বক্তব্য দিয়েছেন তার বক্তব্য আমরা কাউন্ট করিনি৷ তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে বক্তব্য দিতে বলেছি। বিচার প্রায় শেষ। পরে শুনি আমিনুর পক্ষের যুবকরা বিচারস্থল ত্যাগ করে একটু দূরে মারামারি লেগে যায়। আমরা আবার বিষয়টি বিচারে মানিয়েছি। দু’পক্ষ রাজি হয়েছেন। আগামী শনিবার আবার বসা হবে। আশা করি ভালভাবে শেষ হবে।

শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, আমি ফোর্স পাঠিয়ে ঘটনা নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।