
সেবার মান বেড়েছে মৌলভীবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে, তবে দালালের খপ্পরে না পড়ার অনুরোধ জানালেন সহকারী পরিচালক মোঃ আইয়ুব আলী।
পাসপোর্ট অফিসের সেবা নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা কমবেশী রয়েছে সেবাপ্রার্থীদের। প্রায়ই দালালদের দৌরাত্মসহ অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায় পাসপোর্ট অফিসে।
তবে বর্তমানে মৌলভীবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের চিত্র যেন অনেকটা ভিন্ন। এখানে হেল্প ডেক্স রুমের সামনে নেই দীর্ঘ লাইনের সারি। আবার ভুল আবেদনপত্র সংশোধনসহ আবেদন যাচাই বাছাই করে ফরম জমা নেয়ার ব্যবস্থা করতে তৎপর হেল্প ডেক্স।
একইসঙ্গে যেকোনো গুরুত্বর সমস্য সমাধানও মিলছে এই আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্বে থাকা পরিচালকের কক্ষে। ফলে এখানে পাসপোর্ট করতে এসে কেউ আর বিরক্তি নিয়ে ফিরে যান না বলে জানিয়েছেন সেবাপ্রার্থীরা।
বড়লেখা থেকে আসেন ছাব্বির আহমদ তিনি গত কয়েক দিন আগেও পাসপোর্ট অফিসে এসে ভিড় দেখে ফিরে যান…… । প্রায় সপ্তাহ দুয়েক পর আবারও মৌলভীবাজার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আসেন তিনি। এবার কিছুটা অবাক হন এই সেবা গ্রাহীতা।
বায়ান্ন টিভি’র অবজারভার প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘যেখানে কয়েক দিন আগেও ফিঙ্গার ও ছবি তুলতে লম্বা লাইন ছিল এখন আর সেটি নেই। ছবি তোলার জন্য দেয়া হচ্ছে ইলেকট্রনিক্স নম্বর। রয়েছে পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা।’
ফখরুল ইসলাম বড়লেখা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছেন….তিনি বলেন, ‘ফরম জমা ও ছবি তুলতে টোকেন ব্যবস্থাটি ভালো উদ্যোগ। আর বসার ব্যবস্থা থাকায় একটু দেরি হলেও সেটি আর বিরক্তির কারণ হয়নি। শুনেছিলাম পাসপোর্ট করতে অনেক ভোগান্তি হয়। এত সহজে সব কাজ শেষ হবে যাবে ভাবতেও পারিনি।’
বড়লেখার শাহবাজপুর থেকে পাসপোর্ট করতে এসে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, পাসপোর্ট অফিসে দালানের আনা গোনা অনেকাংশে কমে গেছে, বয়স নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে পাসপোর্ট অফিসের বাহিরে একজন এর সাথে কন্ট্রাক ছিল ২৫ হাজার টাকা, প্রায় ৩ মাস ভোগান্তি পোহাতে হয়েছিল , অবশেষে সরজমিনে তাৎক্ষণিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত প্রধান আইয়ুব স্যারের রুমে গিয়ে উনার সঙ্গে দেখা করে সব কাগজপত্র জমা দেয়ার পর সমস্যার সমাধান হয়েছে।
এদিকে সেবা গ্রহণ করতে আসা একাধিক নাগরিক জানান, সেবা মান আরও বাড়াতে পাসপোর্ট অফিসের জনবল বাড়ানো প্রয়োজন। তাহলে আরও দ্রুত সময়ের মধ্যে কাঙ্খিত সেবা পাওয়া যাবে।
পাসপোর্ট অফিস ঘুরে দেখা যায়, পাসপোর্ট ভবনের সামনে বড় পরিসরে সেবাপ্রার্থীদের জন্য ঝোলানো রয়েছে বিশেষ বার্তা। পাসপোর্ট করতে এসে কোন সেবা গ্রহীতা যেনো দালানের খপ্পরে যেনো না পড়েন পাসপোর্ট করতে এসে কোন ধরনের সমস্যায় পড়লে সরাসরি ভোগান্তিতে না পড়েন সে জন্য ২০১ নম্বর কক্ষে সার্বক্ষণিক খোলা রয়েছে হেল্প ডেক্স। এছাড়াও প্রতিদিন নানা ধরনের সমস্যা নিয়ে সহকারী -পরিচালকের কক্ষে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রায় শতাধিক সেবাপ্রার্থী সেবা নিচ্ছেন। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) তথ্যগত ভুলের কারণে অনেক আবেদনকারী কিছুটা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, এনআইডির ভুলের কারণে অনেকেই যথা সময়ে পাচ্ছে না পাসপোর্ট। সেই সঙ্গে কখনো কখনো পুলিশ ভেরিফিকেশনে দেরিতে রিপোর্ট দিলেও ঘটছে বিড়ম্বনা। যা সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তির অন্যতম কারণ। শুরু থেকেই যে বিষয় নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছি সেটা হলো জনগণের আস্থা অর্জন করা আমাদের মূল লক্ষ্য, এই জনগণের টাকা থেকেই আমাদের বেতন হয়, জনগণের সেবা নিশ্চিত করাই আমাদের দায়িত্ব।