বিয়ানীবাজারে সওজ’র ভূমিতে হর্কার পূর্ণবাসন প্রকল্প থেকে ফিরে আসলেন মেয়র

প্রকাশিত: ৪:৪১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২২ 301 views
শেয়ার করুন
বিয়ানীবাজার পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্র কলেজ রোড মোড় সংলগ্ন পাকা দেয়ালের বেস্টনি দেয়া সওজ এর ভূমিতে অস্থায়ী ভাবে হর্কার পূর্ণবাসন প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন করার পর প্রকল্প থেকে ফিরে আসলেন পৌর মেয়র ফারুকুল হক। সওজ কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কাজ শুরুর পর কর্তৃপক্ষের বাঁধায় তিনি এই প্রকল্প বন্ধ করে দিলেন। এ নিয়ে স্থানীয় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, বিয়ানীবাজার পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্র কলেজরোড মোড় সংলগ্ন পাকা দেয়ালের বেস্টনি দেয়া সওজ এর ভূমিতে অস্থায়ী ভাবে হর্কার পূর্ণবাসন প্রকল্পের  কাজ স¤প্রতি শুরু করেন পৌর মেয়র ফারুকুল হক। ইতিমধ্যে তিনি পড়ে থাকা ঐ ভূমির ময়লা আবর্জনা অপসারন করেন, ঐ স্থান ব্যবহার উপযোগী করার জন্য গত ২/৩দিন থেকে মাটি কাটা ও ভরাট কাজ শুরু করেন। এ অবস্থায় বিষয়টি সওজ কর্তৃপক্ষের নজরে আসে, সওজের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে স্থানীয় প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন বুধবার রাতে ঐ ভূমির গেইট বন্ধ করে একটি থালা ঝুলিয়ে দেন এবং অনুমতি ছাড়া প্রবেশ নিষেদ লিখা একটি সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দেন। সওজের স্থানীয় প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে গিয়ে দেখি আমাদের থালা ভাঙ্গা ও সাইনবোর্ড ফেলে দেয়া হয়েছে। ভিতরে পৌরসভার লোকজন কাজ করতেছে। আমি পৌর কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব প্রাপ্ত লোকদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, মেয়র মহোদয় সকালে নিজে এসে অর্ডার দিয়ে থালা ভেঙ্গে ফেলেছেন। মেয়র মহোদয়ের অর্ডারে তারা কাজ করছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। এ বিষয়ে সওজের এসও আতাউর রহমান বলেন, সওজের পূর্বানুমতি ছাড়া পৌর কর্তৃপক্ষ এখানে কাজ শুরু করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল আমাদের প্রতিনিধি থালা ও সাইন বোর্ড লাগিয়েছিল, জেনেছি মেয়র সাহেব থালা ভেঙ্গে দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। এ বিষয়ে অর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সওজ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা এই ধরণের কাজের জন্য কাউকে কোন অনুমতি দেই নাই, পূর্বানুমতি ছাড়া এ ধরনের কাজ করা বেআইনী, বিষয়টি জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। এখন তারা যদি কাজ বন্ধ না করে তাহলে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার পৌরসভার মেয়র ফারুকুল হক বলেন, কলেজ রোড মোড়সহ প্রধান সড়ক গুলোর পাশে ফুটপাতে সবজি ব্যবসায়ী ও হর্কাররা ব্যবসা করার কারণে সড়কে যানজট লাগছে, লোকজনের হাঁটা চলায়ও বিঘœ ঘটছে, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে অস্থায়ী ভাবে ঐ ভূমিতে তাদেরকে পূর্নবাসন করতে উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তিনি বলেন, যেহেতু ঐ জায়গাটি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে, এখান থেকে নোংরা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, ঐ জায়গাটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে এখানে ফুটপাতের ঐ সকল ব্যবসায়ীরা অস্থায়ী ভাবে স্থানান্তর হলে ক্ষতি কি ছিল? আমি জনমানুষের সার্বিক কল্যাণে ঐ কাজটি করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু স্থানীয় কিছু লোকের বাধায় সওজ কর্তৃপক্ষ নিষেধাঙ্গা দেয়ায় এই প্রকল্প নিয়ে আর এগুচ্ছি না, এই প্রকল্প এখানেই সমাপ্ত করে দিলাম। জায়গাটি পরিষ্কার করে দিছি, এখন থালা দিয়ে রেখে দেব, কর্তৃপক্ষ তাদের জায়গা তারা দেখভাল করবে। তবে সওজের করা থালা ও সাইনবোর্ড ভাঙ্গার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
এদিকে, বিগত ক’দিন থেকে ঐ ভূমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও মাটি কাটার কাজ করার পর প্রকল্প থেকে ফিরে আসার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, সরকারি পরিত্যক্ত ভূমি জনকল্যাণে অস্থায়ী ভাবে ব্যবহার করলে ক্ষতি কি হতো, মেয়রের এই উদ্যোগ সফল হলে জনগণ উপকৃত হতেন। আবার বিপরীত কথাও বলছেন অনেকে, তারা বলছেন পূর্বানুমতি ছাড়া অন্যের ভূমিতে প্রবেশ করা ও কাজ করানো বেআইনি, মেয়রের এই কাজ করা সঠিক হয়নি। উপরন্তু মেয়রের অপরিপক্ক এই সিদ্ধান্তে এই ক’দিন কাজ করে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে তা জলে গেলো, পাশাপাশি বিষয়টি মেয়র তথা পৌরবাসীর জন্য বিব্রতকর।