সিলেটের মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর, বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজীউন)। করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে উনার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।
সোমবার দিবাগত (১৮ আগস্ট) রাত আড়াইটার দিকে তিনি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমানের ভাতিজা জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সজিব হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ আগস্ট আজিজুর রহমানের নমুনা পরীক্ষায় করোনা ‘পজিটিভ’ ধরা পড়ে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দ্রুত ব্যবস্থাপনা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সহযোগিতা ও স্বাস্থ্য বিভাগের তত্ত্বাবধানে আজিজুর রহমানকে রাত সাড়ে ১২টার দিকে মৌলভীবাজার থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁকে ভর্তি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে।
আজিজুর রহমান বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা ও অভিভাবক ছিলেন। গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবে দলের সীমানা ছাড়িয়ে সব মহলে তিনি শ্রদ্ধার একজন মানুষ ছিলেন। তিনি একাধিকবার সাংসদ ছিলেন। ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নির্যাতিত এই গণপরিষদ সদস্য এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন। আজিজুর রহমান অবিবাহিত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে মৌলভীবাজারবাসীর মধ্যে প্রিয়জন হারানোর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আজিজুর রহমান কর্মজীবনে সর্বশেষ মৌলভীবাজার জেলা পরিষদ ও রেডক্রিসেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
আজিজুর রহমান জেলার গুজারাই গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৪৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই সক্রিয় রাজনীতির সাথে জড়িত আজিজুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর সরাসরি নির্দেশনায় ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
তিনি ছিলেন সরাসরি বঙ্গবন্ধু প্রভাবিত রাজনীতিবিদ, এই অঞ্চলের অহিংস ও সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনৈতিক ও সামাজিক বটবৃক্ষ। চলতি বছরে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য আজিজুর রহমান।
তাঁর মরদেহ মৌলভীবাজার নিয়ে আসা হচ্ছে। মরদেহ আনার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো. ফজলুর রহমান।
