জামাত শিবির আর কমিউনিস্ট একটি মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ 

প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২০ 1,308 views
শেয়ার করুন

কিছু কমিউনিস্ট আছে সরকারের ভিতরে তারা ভালো আছে এখানে দিব্বি আরামে বসে ছাত্রলীগ কে বাদ দিয়ে খুঁজে খুঁজে কমিউনিস্ট বের করে সুবিধা গুলো দিচ্ছে ৷ ভাব টা এমন যে , ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগের নিবেদিতপ্রাণ ত্যাগী নেতা কর্মীদের আওয়ামীলীগ থেকে বের করে দিতে পারলে তারা আরামে বসে রাজত্ব করতে পারবে তাই ইতিমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় অনেক ছাত্রলীগ করে আসা ত্যাগী ও প্রকৃত আওয়ামীলীগ নেতাদের ক্ষমতা কাটিয়ে আওয়ামীলীগ থেকে বহিস্কার করেছে সরকারে থাকা প্রাক্তন কমিউনিস্ট ৷

আর যারা এখন ও কমিউনিস্ট করে পড়ে রয়েছে এরা সরকারের সমালোচনায় এতটা নতজানু যে রাজাকার যুদ্ধাপরাধীর চেয়ে ও বেশী জগন্য ভাষায় অনবরত সমালোচনা করেই যাচ্ছে ৷

সরকারের এত উন্নয়ন দেশের এত অগ্রগতি কিছুই তাদের নজরে আসছে না চুন থেকে পান কষলেই প্রথম সমালোচনা করতে দেখি কমিউনিস্ট কে ৷ ভাব টা এমন যে তারা অপেক্ষায় রয়েছে কখন কোথায় কি হলো আর এটাকে সমালোচনায় নিয়ে ঘা দেওয়া ৷ যেমন ক্রিকেটে ব্যাটসম্যান ব্যাট হাতে প্রস্তুত হয়ে দাড়িয়ে থাকেন বল আসলে মেরে দেয়ার জন্যে ৷ ইদানিং অত্যন্ত দুঃখজনক ভাবে উপলব্ধি করছি তাদের এ সব কর্ম ৷ আর সরকারের ভিতরে থাকা কমিউনিস্টরা অত্যন্ত দাপটের সঙ্গে ত্যাগী ছাত্রলীগ আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদের শুধু মাত্র সুবিধা বঞ্চিতই করছে না তাদের ন্যায় সঙ্গত অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে এবং তাদের কে দল থেকে স্বমূলে উপড়ে ফেলার হীন প্রয়াসে লিপ্ত ৷ আর যদি প্রকৃত মুজিব সৈনিকদের সরিয়ে ফেলে তাদের মনমত তল্পি বাহক দের বসানো যায় তবে তাদের আসন পাকাপোক্ত হবে , ক্ষমতার সাধ দীর্ঘস্থায়ী হবে ৷

এখন আলোচনায় আসা যাক জামাত শিবির আর কমিউনিস্টদের মধ্যে পার্থক্য কি ? সরল উত্তর আমার কাছে – ” জামাত শিবির আর কমিউনিস্ট একটি মুদ্রার এপিট আর ওপিট ৷ ” জামাত আওয়ামীলীগের শত্রু স্বাধীনতার শত্রু যুদ্ধাপরাধী ও মানবতার শত্রু এটা পরিস্কার তাই আওয়ামীলীগ ও শত্রু কে চিনে সাবধানে শত্রু ভেবেই চলে , ক্ষতির কারণ ভেবে সাবধান থাকে শত্রু মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকে ৷ আর কমিউনিস্ট কে আওয়ামীলীগের বন্ধু ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে মনে করে কিন্তু বাস্তবে তারা মোটেও নয় ,কমিউনিস্ট আওয়ামীলীগের বন্ধু নয় শত্রুর চেয়ে ও ভয়ঙ্কর ৷ জামাত শিবির শত্রু থেকে আওয়ামীলীগ সাবধান থাকে আর পিছন থেকে বন্ধু ভাবা কমিউনিস্ট ছোরা মারে যা কল্পনায় ও নেয়না আওয়ামীলীগ ৷ তাই কমিউনিস্ট থেকে আওয়ামীলীগ সাবধান থাকে না সতর্ক থাকে না আর আওয়ামীলীগের এই অসতর্কতার সুযোগ নিয়ে কমিউনিস্ট তার স্বার্থ সিদ্ধি করে থাকে ৷

কমিউনিস্ট আওয়ামীলীগের বা দেশের কি কাজে আসছে , কি উপকারে আসছে ? এ প্রশ্নের উত্তর খুজতে একটু ইতিহাসের পাতা উল্টাতে হয় স্বীকার করতে হয় মহান স্বাধীনতার আন্দোলনে কমিউনিস্টের ভূমিকা রয়েছে ৷ পরবর্তিতে ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তাদের ভূমিকা রয়েছে এটা সত্য ৷

দেশ যখন গভীর ষড়যন্ত্রের চড়াই উৎরাই পেরিয়ে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধীদের আস্ফালন বেড়ে যায় তখন কমিউনিস্ট নিরব ৷

অন্যান্য নির্বাচনে কমিউনিস্ট কখনো আওয়ামীলীগ কে বা নৌকায় ভোট দেয় না তারা তাদের মার্কা কাস্তে নিয়ে নির্বাচন করে জামানত হারায় হাজার দুয়েক ভোট পায় আর ও দিকে দেখা যায় মাত্র পাঁচ শত অথবা হাজার ভোটের ব্যবধানে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হেরে যায় এমন উদাহরণ রয়েছে ভুরি ভুরি ৷ আওয়ামীলীগের জন্যে ক্ষতির কারণ কমিউনিস্ট এমন ঘটনা অহরহ রয়েছে যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে এমতাবস্থায় আসে ৫ ই জানুয়ারীর নির্বাচন ৷

এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের খুবই প্রয়োজন ছিলো মিত্রের কিন্তু তখন এই কমিউনিস্ট শত্রুর সাথে হাত মিলিয়ে নির্বাচনে আসেনি ,আসেনি জামাত বিএনপি ও ৷ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্য দেখাতে ব্যস্ত থাকে কমিউনিস্ট আর অন্যদিকে যদি এ নির্বাচন না হত তা হলে কি হতো ? অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়তো স্বাধীনতা বিরোধীরা ক্ষমতা নিতো আর যুদ্ধাপরাধীরা জেল থেকে ছাড়া পেত আর আফগানিস্থানের মত বিরান হতো আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ ৷ কমিউনিস্ট এই ৫ ই জানুয়ারীর সঙ্কটাপন্ন মুহুর্থে কার পক্ষে অবস্থান নিলো স্বাধীনতা বিরোধী জামাত বিএনপি নির্বাচনে এলো না কমিউনিস্ট ও নির্বাচনে না এসে প্রকারান্তরে জামাত বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করে ৷ তাই যে কমিউনিস্ট স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরোধীতা করতে গিয়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের সহায়তা করে তাহলে তাকে কি বলবো পাঠক আপনারাই বলুন ৷

আর এই মুহুর্থে বাংলার দুঃখী মানুষের নেত্রী যখন বিশ্ব নেত্রী হলেন এবং খাদ্য, অর্থ সম্মান সবই যখন আমাদের আছে তখন মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বহির্বিশ্বে সম্মানীত হচ্ছেন বিভিন্ন মহল তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ তখন কমিউনিস্ট যারা এখন ও কমিউনিস্ট নামে জামাত বিএনপির পক্ষে অবস্থান করছে তারা এত সরকারের বিরুদ্ধে বিষধ্গার সমালোচনা করছে এমন ভাষা তারা প্রয়োগ করছে যা জামাত বিএনপি ও সাহস করে না ৷

তাই জামাত বিএনপির পক্ষ নিয়ে কমিউনিস্ট প্রমাণ করেছে তারা আর স্বাধীনতা বিরোধীদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই আর যেহেতু স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির প্রয়োজনে কমিউনিস্ট কে আর পাওয়া যায় না তাই তাদেরকে আর স্বাধীনতার পক্ষের তালিকায় রেখে কি লাভ ? কারণ তারা বিপক্ষ তালিকায় তাদের নাম লিখিয়ে ওদের চেয়ে ও ভয়ঙ্কর ,আক্রমনাত্বক ও হিংসাত্বক ভাষায় সরকার ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির বিরোধীতা করছে ৷ তারা না পাওয়ার বেদনায় কাতর হচ্ছে তাই হয় যারা সরকারের বাহিরে কমিউনিস্ট রয়েছে তারা অনবরত ঘেউ ঘেউ করছে তাদের কে ও সরকারে নিয়ে সুবিধা দিয়ে দিলে তাদের বিরুদ্ধে কলম যুদ্ধ চালিয়ে তাদের স্বরূপ উন্মোচন করা জরুরী ৷

লেখক: সাংবাদিক-কলামিস্ট ও রাজনীতিক- লন্ডন।