পটিয়ায় করোনায় মৃত ব্যাক্তিকে দাফন কাপন ও সৎকারের দায়িত্ব নিলেন আওয়ামীলীগ নেতা নাছির পটিয়া

কাউছার আলম কাউছার আলম

পটিয়া, দক্ষিণ চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ৩:০০ অপরাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২০ 631 views
শেয়ার করুন

 

দেশে বর্তমানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে কোনো রোগীর মৃত্যু হলে মরদেহের দাফনের ও সৎকারের দায়িত্ব নিতে ভয় পাচ্ছে পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনরা। সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় কোথাও কোথাও বাবার মরদেহের জানাজা বা দাফনের দায়িত্ব নিতে চাচ্ছেন না ছেলে। হাসপাতালে মরদেহ ফেলে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটছে।

এমনই এক প্রেক্ষাপটে পটিয়ায় করোনা আক্রান্ত কোনো রোগীর মৃত্যু ঘটলে সকল ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ও সম্প্রদায়ের লাশ নির্বিশেষে তাদের দাফন কাপন, সৎকার, মুসলিমদের জানাজা পড়ানো সহ যাবতীয় কর্ম সম্পাদন ও সুরক্ষা যতদিন পর্যন্ত করোনার প্রাদুর্ভাব থাকবে লাশ কবর খনন, গোসল করানো, জানাজা পড়ানো দাফন কাপনের কাজে গাউছিয়া কমিটির কর্মিরা কাজ করে যাবেন, ততদিন পর্যন্ত তাদের সমস্থ প্রকার সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের সমস্থ ব্যায়ভার বহন ও করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী রোগীর মরদেহ দাফন বা সৎকারের মতো ব্যতিক্রমধর্মী কাজে এগিয়ে এসেছেন বিজিএমইএ’র সাবেক সহ সভাপতি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ নাছির। অর্থনৈতিক মন্দাভাবের এই দুঃসময়ে তিনি করোনা আক্রান্ত রোগীদের পরিবহন ও মরদেহ দাফনে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ পটিয়া উপজেলা শাখাকে সব ধরনের সহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। এতে কাজ করেছেন ৫০ সদস্যের একদল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ আলেম ও স্বেচ্ছাসেবক দল। জানা যায় , বিগত দিন গুলোতে পটিয়ায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আলেম ও স্বেচ্ছাসেবক গাউসিয়া কমিটি দলটি এপর্যন্ত ১৫ টি মরদেহ দাফন করেছেন। সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে কার্যক্রম শুধু পটিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। পটিয়ার যেখানে প্রয়োজন হবে সেখানেই করোনারোগী পরিবহন এবং মৃতদেহ দাফন ও সৎকারের জন্য ছুটে যাবে। মুসলিম ছাড়া অন্যান্য ধর্মের মরদেহ হাসপাতাল থেকে শ্মশান বা সৎকারের স্থানে পৌঁছে দেয়া হবে। এ উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার পৌরসদরের গাউসিয়া কমিটির খানকা কার্যালয়ে আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ নাছিরের পক্ষে সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ পূর্বক স্বাস্থ্য বিধি মেনে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ পটিয়া উপজেলা কমিটির সেচ্ছাসেবক টিমের প্রধান আলহাজ্ব মাহবুবুল আলম এম কমের সভাপতিত্বে অংশ নেন পটিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, সদস্য সচিব মাওলানা ইসহাক আলকাদেরী, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মাঈন উদ্দীন, আলহাজ্ব মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন, মহিউদ্দিন মহি, তালুকদার নাজিম উদ্দীন, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা মো. রফিক, কায়সার হিরু, টিপু, তাহের, আব্বাস, আলহাজ্ব নুরুল আবসার, আইয়ুব আলী মিজান, মাওলানা আলী আহমদ কাসেমী প্রমুখ। এব্যাপারে রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ নাছির বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা আক্রান্ত মরদেহ দাফন ও সৎকারের ক্ষেত্রে সমস্যাটি আমার নজরে আসে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখতে পাই করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় পরিবারের লোকজনও অনেক ক্ষেত্রে মরদেহ ফেলে ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনা আমার মনকে নাড়া দেয়। একসময় আমার এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপকালে তিনি করোনারোগীদের পরিবহন ও মরদেহ দাফন ও সৎকারে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিতে উৎসাহিত ও পরামর্শ দেন। মোহাম্মদ নাছির আরো জানান, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ পটিয়া উপজেলা শাখার স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে পটিয়ার যে কোন লোক মারা গেলে মৃতদের দাফন কাপন ও সৎকার করতে যা যা প্রয়োজন হবে তা আমার ব্যাক্তিগত পক্ষ হতে দিয়ে পটিয়াবাসীর পাশে দাঁড়াতে চাই। গাউসিয়া কমিটির স্বেচ্ছাসেবকরা মরদেহ হাসপাতাল থেকে গ্রহণ করে গোসল দেয়া, কাফন পরানো, জানাজা পড়ে কবর ও সৎকার দেয়া এবং জানাজা পরবর্তী দোয়া ইত্যাদি করে থাকেন। তিনি আরো জানান, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি কেটে গেলে অদূর ভবিষ্যতে মাসুমা করিম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে তিনি পটিয়ায় দরিদ্রদের চিকিৎসাসেবা প্রদানের জন্য ক্লিনিক স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। গাউসিয়া কমিটির সেচ্ছাসেবক টিমের প্রধান আলহাজ্ব মাহবুবুল আলম এম কম বলেন, জাতির এ ক্রান্তিলগ্নে পটিয়ার কৃতি সন্তান আওয়ামীলীগ নেতা মোহাম্মদ নাছির গাউসিয়া কমিটির পাশে এসে দাঁড়িয়ে করোনায় মৃত ব্যাক্তিদের দাফন কাপন ও সৎকারের যে মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন তা সত্যিকারের মানবতার সেবক ও মানসিকতার পরিচয় দেওয়াতে পটিয়ার ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের হ্দয়ের মাঝে স্হান করে নিবে। তিনি আরো জানিয়েছেন মহামারী করোনা যতদিন পর্যন্ত থাকবে ততদিন অবধি আমাদের পাশে থেকে সব ধরনের সার্বিক সহযোগিতা করবেন।