শান্তিগঞ্জে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে উধাও রকেট-বাংলালিংকের এসআর

প্রকাশিত: ৮:২৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২৫ 794 views
শেয়ার করুন
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজারের চারটি মোবাইল ব্যাংকিং ও ফ্লেক্সিলোডের দোকান থেকে প্রায় চার লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন আরিফ হাসান লিটন ওরফে লিটন মিয়া নামের বাংলালিংক ও রকেটের এসআর। শুক্রবার সকালে দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি করেছেন বাজারের ভুক্তভোগী চার ব্যবসায়ী
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা অভিযোগ করেন, ২৭ জানুয়ারি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সময়ে পাগলা বাজারের বাসস্ট্যান্ড এলাকার আঁকি ডেকোরেটার্স থেকে ২ লক্ষ ২শ’ ৯০ টাকা, বাজারের প্রধান গলির (মধ্যবাজার) এমএস চয়েজ সু স্টোর থেকে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা  ও দেববাড়ি মোড়ের ঝিনুক প্রিন্টার্সের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে মোট তিন লক্ষ ৭০ হাজার ২শ’ ৯০ টাকা একটি এজেন্ট নাম্বারে (০১৯৫৫ ৩৯৯১৯৯ৎ) পাঠায় লিটন। বাসস্ট্যান্ড এলাকার সাব্বির লাইব্রেরি থেকে বাংলালিংক ফ্লেক্সিলোডের কথা বলে আরো ২৫ হাজার টাকা নেয় সে। মোট ৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ২শ’ ৯০ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দেওয়ার কথা বলে বিকালে আত্মগোপনে চলে যায় সে। এর পর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানান, লিটনের কর্মস্থল সুনামগঞ্জের জামাইপাড়াস্থ ডিলার পয়েন্টে যোগাযোগ করা হলে কোনো  আশা তারা পাননি। থানায় গেলেও সাধারণ ডায়রি না নিয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন ওসি।

অভিযোগকারী ব্যবসায়ীরা জানান, লিটন মিয়া অন্তত ৭ বছর ধরে পাগলা বাজার এলাকায় রকেট ও বাংলালিক মোবাইল ব্যাংকিং এর সেবা দিয়ে আসছে। ব্যবসার সুবাধে তার সাথে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে ছোট বড় সব ধরণের লেনদেন হয়। সব সময়ই সে বিশ্বস্ততার পরিচয়  দিয়েছে। ঘটনার দিন সে টাকা চাইলে আগের লেনদেনের পরিপ্রেক্ষিতে সরল বিশ্বাসে আমরা তার কথা মতো একটি এজেন্ট নাম্বারে আলাদাভাবে মোট ৩ লক্ষ ৭০ হাজার ২শ’ ৯০ টাকা পাঠাই। সাব্বির লাইব্রেরি থেকে বাংলালিংকের ফ্লেক্সিলোড দিবে বলে আরো ২৫ টাকা নিয়ে যায়। ব্যাংক থেকে তুলে এই টাকা দিচ্ছে বলে আমাদের জানায়। বিকালে তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়ার পর বুঝতে পারি সে টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছে।

তারা জানান, ডিলার পয়েন্ট থেকে আশাহত হয়ে আমরা তার বাড়ি ও শ^শুর বাড়ির লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে, তার বাড়ির লোকজন আমাদেরকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সাব্বির লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মানছুর আহমদ বলেছেন, আমার কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে সে। বলেছে বাংলালিংক ফ্লেক্সিলোড দিবে। কিন্তু এখন তার ফোন বন্ধ। সে পলাতক। অথচ আমরা তাকে কত বিশ^াস করতাম।

আঁকি ডেকোরেটার্সের স্বত্ত্বাধিকারী ও প্রাক্তন ইউপি সদস্য মো. মকবুল হোসেন বলেন, তাকে অবিশ্বাস করার মতো কোনো কিছু নাই। সে ৭/৮ বছর ধরে আমাদেরকে বাংলালিংক ও রকেটের সেবা দিয়ে আসছে। আমরা তার সাথে সব সময়ই ব্যবসায়ীক লেনদেন করি। ২৭ তারিখ আমাদের কাছে টাকা চেয়ে বলেছে বিকালের মধ্যে ব্যাংক থেকে তুলে সে টাকা পরিশোধ করে দেবে। একটি এজেন্ট নাম্বার দিয়ে বলে যে, এই নাম্বারে টাকা পাঠানোর জন্য। যেহেতু সে আমাদের পরিচিত তাই সরল বিশ্বাসে আমরা চারটি দোকানদার মোট ৩ লক্ষ ৯৫ হাজার ২শ’ ৯০ টাকা পাঠাই। তার  মধ্যে ফ্লেক্সিলোডের কথা বলে নেয় ২৫ হাজার। এখন তার ফোন বন্ধ। তার ডিলার পয়েন্টের মালিক এর দায় নিতে রাজি নন। শান্তিগঞ্জ থানার ওসি সাহেবও আমাদের জিডি না নিয়ে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আরিফ হাসান লিটন ওরফে লিটন মিয়ার ফোন নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী বলেন, এটা একটা দীর্ঘ মেয়াদি প্রসেস। কোর্টের আদেশের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের লেনদেনের কপি সংগ্রহ করতে হবে। এই আদেশ পেতে হলে একটি মামলা দায়ের করতে হবে। তাই তাদের বলেছি, জিডি না করে একবারে মামলা করতে। তাদের এবং  আমাদের জন্য খুব সহজ হবে। মামলা করলে আমরা আইনী প্রসেসের দিকে যেতে সহজ হয়।