শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার ঘটনায় আনন্দ মিছিলে উত্তাল শান্তিগঞ্জ
ইয়াকুব শাহরিয়ার, ইয়াকুব শাহরিয়ার,
নিজস্ব প্রতিবেদক
কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে এক দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার ঘটনায় বিকাল থেকে আনন্দ মিছিলে উত্তাল ছিলো শান্তিগঞ্জ উপজেলা। বিশেষ করে উপজেলার পাগলা বাজার ছিলো বেশ সরগরম। এছাড়াও উপজেলা শান্তিগঞ্জ বাজার, আক্তাপাড়া মিনাবাজার, দরগাপাশা পয়েন্ট, ছয়হাড়া মৌগাঁও পয়েন্ট ও ভমবমি বাজারেও হয়েছে আনন্দ মিছিল। কোনো কোনো জায়গায় মিষ্টি বিতরণ করেছেন বিক্ষুব্ধ জনতা। সাধারণ ছাত্র সমাজ, উপজেলা বিএনপি, জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবির, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ও সাধারণ জনতার উপস্থিতে এসব আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টায় উপজেলার পাগলা বাজারে প্রথম আনন্দ মিছিল বের করে উপজেলা বিএনপি। পরে এই মিছিলে যোগ দেন সাধারণ জনতা। মিছিলটিতে নেতৃত্ব দেন শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ। মিছিলটি বাজারের সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘুরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এসে শেষ হয়। এসময় একটি সংক্ষিপ্ত পথসভা করেন তারা। প্রবাসী জমিয়ত নেতা মাও. রেজওয়ান আহমদের পরিচালনায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন- শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, ওলামা দল নেতা সজীব আহমদ ও ছাত্রদল নেতা মানছুর আহমদ। ফারুক আহমদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন দেশে স্বৈরাচারী শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছেন। তিনি সাধারণ মানুষ, বিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের নেতাকর্মীদের সাথে, সর্বশেষ ছাত্রসমাজের সাথে খুবই অন্যায় করেছেন। ছাত্রসমাজ তা সহ্য করেনি৷ তারা কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলেছে। সারা দেশে স্বৈরাচারী হাসিনা অনেক মানুষ মেরেছে৷ ছাত্ররা তার প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। অবশেষে পেচনের দরজা দিয়ে তাকে পালাতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর সরকার আমরা চাই না। আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যে সকল ছাত্র ও নীরিহ মানুষ নিহত হয়েছেন প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ন্যায় বিচার চাই আমরা।
এসময় সাধারণ মানুষ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। ফারুক আহমদের বক্তব্য শেষ হতে না হতেই বাজার প্রধান গলি থেকে ব্যবসায়ী ময়না মিয়া, কামাল পারভেজ সাজনের নেতৃত্বে একটি মিছিল এসে জড়ো হয় বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। এসময় যুবদল নেতা সিজিল আহমদ, আলতা মিয়া, জয়েন উদ্দিন, ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি শাহিদ মিয়া ও ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেনসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়াও একই সময়ে উপজেলা জামাতে ইসলামামের আমীর হাফিজ আবু খালেদ, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও কাজী নূরুল হকের নেতৃত্বে জামাত-শিবিরের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে আছরের নামাজের পর শান্তিগঞ্জ বাজারেও আনন্দ মিছিল করে উপজেলা জামাতে ইসলাম।
এদিকে, বিকাল ৫টায় মাও. জাকারিয়া মাহবুব ও আবদুর রহমান জামীর যৌথ নেতৃত্বে উপজেলার ভমবমি বাজার এলাকায় আনন্দ মিছিল ও মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত পথসভা করেন তারা।
মাও. জাকারিয়া মাহবুব ও আবদুর রহমান জামী ছাড়াও পথসভায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন- মাও. আবদুল হামীদ, আবদুল হান্নান, ফিরোজ ইসলাম, হেলাল মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, বাদশাহ্ আকবর, মাও. ইউসুফ সিদ্দিকী, মাও. আজাদ হোসাইন, মাও. মতিউর রহমান, মাও. মিছবাহ্ উদ্দিন, মাও. মুকাররাম, মাও. সোয়াইব হোসাইন, মাও. আবদুল মঈন, মাও. সাজ্জাদ হোসাইন, মাও. মাহবুব, মাও. শরীফ উদ্দিন ও হাফিজ মুজাম্মিল প্রমুখ। এসময় সাধারণ মানুষসহ জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও বিএনপির আরো অনেক কর্মী-সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনের সব শেষে দোয়া পরিচালনা করেন মাও. ইলিয়াছ আলী।
অপরদিকে, দরগাপাশা ইউনিয়নের দরগাপাশা পয়েন্টেও আনন্দ মিছিল করেছেন সাধারণ জনতা ও বিএনপির অঙ্গসংগঠন। বিকাল ৪টায় এ মিছিল করেন তারা। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন- সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি মুরাদ আহমদ চৌধুরী, যুবদল নেতা ফরিদ গাজী, মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, জগলু আহমেদ, শ্যামল চৌধুরী, ইউনূছ খান, মিঠু আহমেদ, সারোয়ার হোসেন, আহাদ চৌধুরী, জাবেদ চৌধুরী ও শফিক আহমদ প্রমুখ। এছাড়াও বিকাল সাড়ে ৫টায় ছয়হাড়া মৌগাঁও পয়েন্টে মিষ্টি বিতরণ করেছেন সাধারণ মানুষ।