শান্তিগঞ্জ উপজেলার ঘোড়াডুম্বুর গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনায় মিথ্যাচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন হাজিবাড়ির আলী হোসেন পক্ষ। মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় উপজেলার পূর্ব পাগলা ইউনিয়নের একটি বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন আলী হোসেনের ছোট ভাই আদনান হোসেন।
লিখিত বক্তব্যে আদনান বলেন, আমার মরহুম বাবা, পূর্ব পাগলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার চমক আলী ২০০৪ সালে গণিপুর গ্রামের ইংল্যান্ড প্রবাসী গৌছ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীর কাছ থেকে ৪ একর ৩৯ শতক জায়গা ক্রয় করেন। তৎকালীন সময় বিভিন্ন কারণে রেজিস্ট্র করতে না পারলেও বায়নাপত্র করেছিলেন। পরবর্তীতে টাকা নেওয়ার সময় আনরেজিস্টারি দলিল করা হয়। যার সব ধরণের কাগজ আমাদের হাতে আছে। ২০১৬ সালে দেশে এসেও গৌছ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী আমাদেরকে জমি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। নাম জারি জটিলতায় ও অসুস্থতা জনিত কারণে তা তিনি করতে পারেননি। বিদেশে ফিরে গেলে ২০১৭ সালে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। পরে তার স্ত্রী মিসবাহ্ খাতুন চৌধুরীর সাথে আমরা যোগাযোগ করি। তিনিও আমাদেরকে জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে সম্মত হন। পরে অজ্ঞাত কারণে তিনি আর রেজিস্ট্রি করে দেন নি। এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত গৌছ উদ্দিন আহমেদের পরিবারের সাথে আমাদের একটি স্বত্ব মামলা- ২২৬ চলমান আছে। ২০০৪ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত পুরোটা সময় জমি আমাদের দখলে ছিলো৷ আমরা ধান রোপন করেছি, ধান কেটেছি। এতে কারো কোনো আপত্তি ছিলো না। গত দুই বছর ধরে ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের বাসিন্দা কাজি অদুদ মিয়া ১.৩৯ একর জায়গার স্বত্ব দাবি করে আমাদের উপর মামলা করলে মামলার রায় আমরা পাই। এরপর তারা একাধিক মামলা করলে সব মামলার রায় বিজ্ঞ আদালত আমাদের পক্ষেই দেন। জায়গা আত্মসাত করার জন্য বার বার অদুদ মিয়া মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে আমার ভাই আলী হোসেনকে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন। প্রতিটি মামলায় আমরা রায় পেয়েছি। সব দলিল দস্তাবেজ ও রায়ের কপি আমাদের কাছে আছে। গ্রামের মানুষজনও একাধিকবার এসব কাগজপত্র দেখতে চাইলে আমরা দেখিয়েছি, কিন্তু অদুদ মিয়ারা দেখাতে পারেন নি। এতো কিছুর পরেও তারা সম্পূর্ণ জায়াগার স্বত্ব দাবি করে পুনরায় আরেকটি মামলা করেন, এই মামলার রায়ও আমরা পেয়েছি। আমাদের কাছে রায়ের কাগজ আছে। এ সংক্রান্ত জটিলতায় আমাদের জায়গা জোর পূর্বক দখলের চেষ্টায় গ্রামের কিছু কুটচালী মানুষদের প্ররোচনায় পরে ১৫ ডিসেম্বর ঘোড়াডুম্বুর গ্রামের ছয়গোষ্ঠী এক হয়ে আমাদের উপর পরিকল্পিত হামলা চালায়। এ হামলায় নূর মিয়া, অদুদ মিয়া, আকিক মিয়াসহ আরো বেশ ক’জন বয়োজ্যেষ্ঠ লোক নেতৃত্ব দেন। যারা গ্রামের পঞ্চায়েতের লোক তারাই লাঠিসোটা, ইট পাটকেল নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। এসবের সব ভিডিও আমাদের কাছে আছে। এতে উভয় পক্ষের অনেক লোক আহত হয়েছেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে জুনু মিয়া নামের একজন নিরিহ লোক ঘটনার ছয়দিন পর মারা যান। আমি তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। এ লোকটিকে তারা চিকিৎসা করান নি। পরিকল্পিতভাবে তাকে তারা বিনা চিকিৎসায় আমাদের ফাঁসাতে হত্যা করেছেন। এখন তারা আমাদেরকে সামাজিকভাবে হেয় করতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে মিথ্যা, বানোয়াট বক্তব্য প্রদান করছেন। আমরা এসব বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কাজি শাখায়েত, বাদশা মিয়া ও শুকুর আলীসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।