মহাসিং নদীতে ৫০ কোটি টাকার সেতুর অনুমোদন
◾ পশ্চিম পাগলায় আনন্দের বন্যা ◾ তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল, মিষ্টি বিতরণ
ইয়াকুব শাহরিয়ার, ইয়াকুব শাহরিয়ার,
শান্তিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের হাত ধরে অবশেষে স্বপ্নের সেতু হতে যাচ্ছে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের মহাসিং নদীর উপর। রায়পুর থেকে কাদিপুর গ্রামকে সংযুক্ত করবে শান্তিগঞ্জ উপজেলার সবচেয়ে দীর্ঘ এ সেতুটি। এটি নির্মাণ করতে ব্যয় করা হবে ৫০ কোটি টাকা। আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি। মঙ্গলবার দুপুরে সেতুর অনুমোদন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের খবর নিশ্চিত করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসেন। পরিকল্পনামন্ত্রীর সফর সূচিতেও এ সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের বিষয়টি উল্লেখ আছে।
এদিকে, মহাসিং নদীর উপর ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে রায়পুর-কাদিপুর সেতুর অনুমোদন হয়েছে শুনে আনন্দের বন্যা বইছে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নে। এ উপলক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে পাগলা বাজারে একটি আনন্দ মিছিল ও মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত আনন্দ সভা করেছে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ। মিছিলটি পাগলা বাজার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন আওয়ামীলীগের অস্থায়ী কার্যালয় (হক মার্কেট) থেকে বের হয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ মার্কেটের সামনে এসে শেষ হয়। পরে এখানেই সংক্ষিপ্ত আনন্দ সভা করে দলটি। পরে উপস্থিত সকলের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
আনন্দ সভায় সভাপতিত্ব করেন পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. নুরুর হক। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল ইসলাম লালন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তালুকদারের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন- শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিতাংশু শেখর ধর সিতু, পরিকল্পনা মন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব ও শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসনাত হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ও সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম শিপন।
এসময় দরগাপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক নিজাম উদ্দিন, আওয়ামীলীগ নেতা মকবুল হোসেন, শ্রমিকলীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মনসুর আলম সুজন, যুবলীগ নেতা আফিজুর রহমান, পশ্চিম পাগলা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনসহ আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিকলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মহাসিং নদীতে সেতু হওয়া আপ্লুত এবং খুশি আসামপুর, শরীয়তপুর, উত্তর ও দক্ষিণ কাদিপুরসহ নদীর উত্তরাঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তারাও।
মহাসিং নদীর উত্তরপাড়ে শরীয়তপুরের বাসিন্দা দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহমিদা আক্তার, কাদিপুরের সোয়াহিদ মিয়া, আসামপুরের শিক্ষার্থী রহিমা আক্তার, মিতা আক্তার, বাছির আহমদ বলেন, আমরা খুবই খুশি। মহাসিং নদীর উপর সেতু হলে আমরা গাড়িতে করে দ্রুত চরাফেরা করতে পারবো৷ স্কুল কলেজে যেতে অসুবিধা হবে না। নৌকার জন্য দীর্ঘসময় আর ঘাটে অপেক্ষা করতে হবে না। ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনা মন্ত্রীকে।
কাদিপুর গ্রামের মেম্বার (পশ্চিম পাগলা ইউপির ৩ নং ওয়ার্ডের মেম্বার) মো. আজাদুল হক আজাদ সংবাদটি শুনে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তার সাথে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন কাদিপুর ও আসামপুর গ্রামের আবদুর বাছির, শিবলী মিয়া, আবদুস সমাদ, বুলাই মিয়া, লালন মিয়া, ফকির মিয়া ও মুহিবুর মিয়াসহ অর্ধশতাধিক মানুষ। তারা বলেন, সংবাদটি শুনে আনন্দে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এ আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা মহাসিং নদীর উপর সেতুর স্বপ্ন দেখতেন। আমরা তার বাস্তবায় দেখতে চলেছি। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান না হলে হয় তো তা বাস্তবায়ন হতো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এম এ মান্নান স্যারের হাত দিয়ে আমাদেরকে সেতু দিচ্ছেন। আমরা আওয়ামীলীগ সরকার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান মহোদয়ের কাছে চির ঋণী হয়ে রইলাম।