৫৩টি বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটি সংগঠনের সাথে বিবিসিভি ‘বিমান লুটিলার ক্যাম্পেইন’-এর মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

শাহ সোহেল আমিন শাহ সোহেল আমিন

বিশেষ প্রতিনিধি, যুক্তরাজ্য

প্রকাশিত: ৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২৩ 281 views
শেয়ার করুন

মঙ্গলবার ১১ জুলাই ২০২৩, ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটি ভয়েস, (বিবিসিভি), অন্যান্য ৫৩টি বাংলাদেশী কমিউনিটি সংগঠনের সাথে বিবিসিভি ‘বিমান লুটিলার ক্যাম্পেইন’-এর উপর একটি উন্মুক্ত আলোচনা ও সংলাপ সভা করেছে। ইস্ট লন্ডনের হার্কনেস হাউস কমিউনিটি সেন্টারে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘বিমান লুটিলার ক্যাম্পেইন’-এর বিস্তৃতি বাড়ানোর জন্য বিবিসিভির এই সভার মূল লক্ষ ও উদ্দেশ্য এবং এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বর প্রতিষ্ঠা করা, যা প্রত্যেক ব্রিটিশ বাংলাদেশি মানুষের মনের কথা। যেহেতু আমরা সবাই লন্ডন থেকে সিলেট পর্যন্ত বিমানের টিকিটের উচ্চ মূল্য দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত।

এই সভায় সভাপতিত্ব করেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটি ভয়েসের চেয়ারম্যান সেলিম উদ্দিন চাকলাদার এবং যৌথ ভাবে সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নাসের আল-আমিন ও ভাইস চেয়ারম্যান এবং মিডিয়া রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং সাবেক কাউন্সিলর শাহ সোহেল আমিন । সৈয়দ আহবাব হোসেনের পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে সভা শুরু হয়। বিবিসিভি সংস্থার পক্ষ থেকে ভাইস চেয়ারম্যান জামালুর রহমান ও মোহাম্মদ আলী রিংকু, সহকারী সেক্রেটারি তমিজুর রহমান রঞ্জু এবং কোষাধ্যক্ষ রহিম উদ্দিন প্রদত্ত মূল বক্তব্যের পর।

একইভাবে বিশেষ বক্তৃতা করেন রিলাক্স রেডিওর প্রতিনিধি হাফসা ইসলাম ও আমিনা বেগম, বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সৈয়দ আহবাব হুসাইন, ভয়েস ফর জাস্টিস ইউকে সাধারণ সম্পাদক কে এম আবু তাহের চৌধুরী, বিয়ানী বাজার থানা জনকল্লান সমিতি ইউকের সভাপতি মুজাহিদ ইসলাম ও সহ-সভাপতি আবেদুর রহমান, গোলাপগঞ্জ কালচার ট্রাস্ট ইউকের চেয়ারম্যান শামসুল হক, সাধারণ সম্পাদক দিলওয়ার হুসাইন, কোষাধ্যক্ষ মাসুদ জুয়ারদার এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক মিসবাহ মাসুম, গোলাপগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক জহির হোসেন গাউস,
বিশ্বনাথ এইডের সভাপতি আবদুল রহিম রঞ্জু, বিশ্বনাথ এইডের, আব্দুল বাসিত রফি, মৌলভীবাজার জেলা ইউনিয়ন পরিষদের প্রচার সম্পাদক রুখন চৌধুরী, সুনালী অথিত চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট ও আই অন টিভির সাংবাদিক মুরাদ আহমেদ চৌধুরী, হাওয়া টিভির সাংবাদিক রুমানা লিটন, গোলাপগঞ্জ সোশ্যাল ট্রাস্টের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান, সাবেক সভাপতি অ্যাড. রেহান উদ্দিন বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরও অনেকগুলো সংগঠনের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠনের কমিটির সদস্যরা বক্তব্যে রাখেন।

এই সভার মূল আলোচনার মধ্যে ছিল বিমান এয়ারলাইন্স লন্ডন থেকে সিলেট রুটের টিকিটের উচ্চমূল্য, মূল্য বৈষম্য, অবিচার এবং সিলেট যাত্রীদের প্রতি অন্যায় আচরণের আসল কারণ চিহ্নিত করা এবং সম্ভাব্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এতে ৫৩টি ব্রিটিশ বাংলাদেশি সংগঠনের কর্ণদার এবং সদস্যদের, মতামত, পরামর্শ, বিমান সম্পর্কে ধারনা, তাদের চাহিদা এবং অভিজ্ঞতার গল্প, বিভিন্ন টিপস এবং অ্যাকশন পয়েন্টগুলি লিপিবদ্ধ করা হয়।

এই মতবিন অনুষ্ঠানে অবিশ্বাস্যভাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি বিভিন্ন অর্গানাইজেশনের নেত্রীবৃন্দ।

যে সকল দাবি নিয়ে এই ক্যাম্পেইন টি শুরু হয়েছে, বিমান লুটিলার ক্যাম্পেইনর অ্যাকশন প্ল্যান অনুযায়ী এই ওয়ার্কিং গ্রুপ কাজ করবে এবং ক্যাম্পেইনকে এগিয়ে যাবে ।

নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তৃতায় আবেগ আপ্লূত কন্ঠে কথা বলেন, তারা এই সমস্যা সমাধানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এবং বাংলাদেশের অন্যান্য মন্ত্রী এবং মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের সাথে যোগাযোগ তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন।

ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটি ভয়েস বিশ্বাস করে যে এটি যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী ১ মিলিয়ন ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের বাংলাদেশেরদের জন্য সহজ যোগসূত্র স্থাপনের জন্য একটি কমিউনিটি ক্যাম্পেইন।যদি ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা বাংলাদেশে সহজে যাতায়াত করতে পারে তবে বাংলাদেশের ইকোনোমিতে তাদের কন্ট্রিবিউশন বাড়বে এবং বাংলাদেশে ইনভেস্ট করতে সাহস পাবে।

এই আন্দোলনকে আরও গতিশীল করতে বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহরে বসবাসকারী সকলের সাথে যোগাযোগ করে প্রচারণা জোরদার করতে তাদের যৌক্তিক দাবি তুলে ধরার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন। কোনো কারণে আমাদের দাবি পূরণ না হলেও বৈঠকে উপস্থিত সবাই বিমান বয়কট, যুক্তরাজ্যের সকল রেমিট্যান্স বন্ধ, বিক্ষোভ, যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মতো অন্যান্য কর্মকাণ্ডে আরও কঠোর হওয়ার অভিমত ব্যক্ত করেন।

বিমান আমাদের জাতীয় বাহক এয়ারলাইন, আমাদের গর্ব এবং সম্পদ এর থেকে আমরা আরও ভালো পরিষেবার দাবিদার এবং দাবি করাটা আমাদের ন্যায্য অধিকার।

অনেক চেষ্টা ও লেখালেখির পর ও আমরা বিমান ইউকে কান্ট্রি ম্যানেজারের সাথে দেখা করতে পারিনি অথবা কোন ভাল জবাব পাইনি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে আমাদের ৫টি মূল দাবি নিম্নরুপ:

১. লন্ডন থেকে সিলেট রুটে বিমানের টিকিটের মূল্য এবং লাভের স্বচ্ছতা প্রদান।
২. অন্যান্য আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের সাথে মিল রেখে লন্ডন থেকে সিলেট রুটে বিমানের টিকিটের দাম কমানো।
৩. বিমানের অনলাইন টিকিট কেনার সিস্টেম শুরু করা, যেখানে দাম এবং ফি আগেই দেখানো হয়।
৪. বিমানের টিকিট বিক্রির মূল্য নির্ধারণ এবং সিন্ডিকেট কেলেঙ্কারি বন্ধ করা।
৫. লন্ডন থেকে সিলেট রুটে অন্যান্য আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সগুলোকে সিলেট অবতরণের অনুমতি দেয়া এবং সিলেট ওসমানীকে প্রকৃত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিণত করা।

আমাদের দাবিগুলি স্পষ্ট এবং আলোচনাযোগ্য এবং যতক্ষণ না বিমান এয়ারলাইন্স ব্রিটিশ গ্রাহকদের লুটপাট বন্ধ না করবে এবং আমাদের দাবি পূরণ না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এই বিবিসিভি লুটিলার প্রচারাভিযান বিমানের এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে জোরালোভাবে লড়াই চালিয়ে যাবে।

এছাড়াও এই সভায় উপস্থিত ছিলেন অসংখ্য ব্রিটিশ বাংলাদেশি কমিউনিটির গণ্যমান্য নেতৃবৃন্দ।তারা সবাই বিমানের লুটিলার ক্যাম্পেইনের সাথে বিমানের এই দীর্ঘদিনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সংহতি ঘোষণা করেন। তারা আরো বলেন আমরা প্রয়োজনে টাকা লাগলে টাকা দিয়ে সহযোগিতা করব, ডেমোস্ট্রেশন করব, বিভিন্ন সিটিতে যেতে হলে তাও যাব, রাস্তায় যদি নামতে হয় নামবো, তবুও আমাদের এই ন্যায্য দাবি আদায় করে ছাড়বো।