
কিছু না লিখলে বা না দাগ দিলে যেমন সাদা কাগজের মূল্য থাকে না, ঠিক তেমনি ব্যক্তির জীবনে মনুষ্যত্ব কাজ বা গুন প্রকাশ না হলে প্রকৃত মানুষ তাকে বলে কি? আমরা এই কলমে এমন এক মানুষকে তুলে ধরতে চাই যার হৃদয, কাজ, চেহারা, ব্যক্তিত্ব অতুলনীয়। হৃদয়টা হচ্ছে শিশুতুল্য সহজসরল, স্নেহ-ভালোববাসায় পূর্ণ। স্বার্থ ছাড়া অতি পরিশ্রমী, অসহায়কে সাহায্য দানই হচ্ছে তাঁর কাজ । আর যদি চেহারার কথা বলি, তাহলে বলবো হাজারো লোকের মাঝেও আমি তাঁর মিল পাইনি । সাধারন পোশাক-আশাক পড়েই তিনি একজন সুন্দর ব্যক্তিত্বের অধিকারী।
বিভিন্ন জাগায় ছড়িয়ে আছেন বলেই হয়তো বা আপনারা জানেন না একটি স্বর্গ সুখের রাজ্য আছে । সবাই এখানে সুখী । আর কেনই বা সুখী তা জানানোর জন্যই এই লেখা ।শুধূ পরিবারের চোখেই নয়, আরো অনেকের চোখেই তিনি এক সাদা মনের মানুষ।পরিবারের খরচ মেটানোর পর আয়ের বাড়তি অংশ নিয়ে অনাথ শিশুর,দরিদ্র মানুষের পাশে এসে দাড়িয়েছেন। অনেক আগে থেকেই প্রানের ইচ্ছা ছিল সমাজের জন্য বা দেশের উপকারের জন্য কিছু করতে । যখন তাঁর এই সময়ে সেই সন্তানগুলো কিছু খাবার, ভালবাসার জন্য তাঁর সামনে কেঁদে উঠলো-তখনই তিনি মনোস্থির করলেন এদের জন্য কষ্ট হলেও কাজ করবেন । আর সেইদিন থেকেই শুরু করলেন এক নতুন জীবন । তার প্রতিষ্ঠানের অনেক সন্তাকে কর্ম নিশ্চিত করে তাদের মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলেছেন । দিন দিন তাঁর শিশু সন্তান বেড়েই চলেছে ।
নিজ সন্তানদের মতো সকলকেই তিনি বুকে তুলে নিলেন । খাবার ও জিনিস পত্রের অভাব সেই শিশু সন্তানদের ছিল ঠিকই কিন্তু বাবা মার স্নেহ ভালোবাসার অভাব তখনও বুঝতে দেননি সেই রক্ত বাধঁন ছাড়া, ঠিকানাহীন, অবহেলিত শিশুদের ।এ সমস্ত বাচ্চাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্যই তিনি অদম্য ভাবে কাজ করছেন। আর দিনের কর্মকান্ডের শেষে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা জানিয়েছেন চোখের জল দিয়ে । এরপর কিভাবে চলবেন! তাঁর একটাই বিশ্বাস ছিল যে সৃৃষ্টিকর্তা সব জানেন, তিনি কাউকে নিরাশ করেন না । আর এই প্রত্যয় নিয়ে কাজ করে চলছেন তিনি ।তাহলে তাদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করলো কে? তাদের মন। তাদের ব্যক্তিত্য আর তাদের মনই তাদের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে দিলো। সুন্দর মন আর ভালো ব্যক্তিত্য থাকার কারণে একজন মানুষদের কাছে আকর্ষনীয় হয়ে উঠছেন আরেকজন অনাকর্ষনীয় হয়ে উঠছেন। একটা মানুষ বাহ্যিকভাবে যতটা সুন্দরই হোক না কেন, ভেতরে ভেতরে ঠিক ততটাই কুৎসিত হতে পারে। আমরা সবাই বাহ্যিক সৌন্দর্যটাকেই দেখি। এটাকেই প্রতিনিয়ত বেশি বেশি করে মনোযোগ দেই, অথচ যে জিনিসটা আর দশটা মানুষের মনে দাগ কাটতে পারে সেই জিনিসটাকেই আমরা অবহেলা করি।
মানুষের ব্যক্তিত্য আর মন-মানসিকতায় মানুষকে জীবন্ত করে রাখে, তার সৌন্দর্য তা পারেনা। হয়তো সৌন্দর্য মানুষকে কাছে আনতে পারে, তবে সেটা নিতান্তই সাময়িক সময়ের জন্যে। কিন্তু চিরস্থায়ী দাগ কেটে যায় একমাত্র ভালো মনের মানুষই। আমাদের সকলকে চেষ্টা করতে হবে অভ্যন্তরীন সৌন্দর্য মানে মনকেও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার।গম্ভীর মানুষের চেয়ে হাসিখুশি মিশুক মানুষকেই সবাই প্রাধান্য দেয়। এমন কাউকেই সবাই পছন্দ করে যে কারো দুঃসময়ে দুহাত বাড়িয়ে দিতে কুণ্ঠাবোধ করে না, কোন রকম প্রাপ্তির আশা ছাড়াই সহায়তা করে। তাই চেষ্টা করুন মানুষকে সহায়তা করার, তাকে হাসাবার, তাহলেই অন্যের কাছে প্রিয় হয়ে উঠতে পারবেন।
শুরুর দিকে যে অবাস্তব ঘটনা তুলে ধরা হলো সেখানে সুন্দর মানুষটির চেয়ে কম সুন্দর মানুষটিই তার সুন্দর মন আর ভালো ব্যক্তিত্বের কারণে অন্যদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পেরেছিলো।জন্মের সময় আপনি একটি নির্দিষ্ট চেহারা আর দেহ নিয়ে আসেন। ঘষে-মেজে সেটার খানিকটা পরিবর্তন হয়তো করতে পারবেন, কিন্তু গায়ের রং কালো হলে সেটাকে একদম সাদা করে তুলতে পারবেন না, তেমনই সাদা হলে সেটাকে একদম কালো করে তুলতে পারবেন না । কিন্তু জন্মের পর যেমন নিষ্পাপ মন নিয়ে জন্মেছিলেন চাইলে যেকোনো সময় ঠিক তেমন করতে না পারলেও অনেকটাই ভালো করে তুলতে পারবেন।