ফোবানা উত্তর আমেরিকার শিল্পীদের প্লাটফর্ম

জুয়েল সাদত জুয়েল সাদত

সাংবাদিক, আমেরিকা

প্রকাশিত: ৮:৪৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২২ 398 views
শেয়ার করুন

নবদিগন্তের উ্যসব” Festival of New Horizons এই মটো কে সামনে রেখে ৩৬ তম ফোবানার তিনদিন ব্যাপী কনভেনশন এর শুভ সূচনা হল গতকাল শুক্রবার উইন্ডি সিটি খ্যাত শিকাগোতে তাউনটাউনের ডাবল ট্রীর কনভেনশন হলে। এবারের ফোবানার ১ ম দিনে কোন আলোচিত গেষ্ট উপস্থিত ছিলেন। স্বাগতিক হোষ্ট কমিটির কনভেনর মকবুল আলী আনুষ্ঠানিক ভাবে সকল হোষ্ট কমিটির সদস্যদের নিয়ে শুভ সুচনা করেন।

ফোবানাকে উত্তর আমেরিকার মধে সীমাবদ্ধকরণ এর জন্য এবারের ফোবানায় ছিল না আনুষ্ঠানিকতার কোন নীয়মনীতি। উদ্ভাধনী বক্তৃতায় কনভেনর মকবুল আলী ও ফোবানার চেয়ারম্যান রেহান রেজা বলেন, যে মটোকে সামনে রেখে ফোবানার গোড়াপত্তন আমরা দেরীতে হলেও সেই লক্ষ কে আগলে রাখব। উত্তর আমেরিকার স্থানীয়,শিল্পীরা ও আমাদের এন্টারপনোররা মুল্যায়িত হবে।

উদ্ভাধনী অনুস্টানের স্বল্প সময়ের আনুষ্ঠানিকতায় ফোবানরা ঐক্যবদ্ধ ভাবে এগিয়ে যাবে বলে সকলে মত প্রকাশ করেন। মেম্বার সেক্রেটারি মাদুদুল হক ও হোষ্ট সেক্রেটারি সৈয়দ এহসান বলেন, আমাদের চেষ্টা ছিল গতানুগতিকতার বাহিরে একটি ক্লাসিক ফোবানা উপহার দিব, যেখানে কথা থেকে কাজের পরিচয় মিলবে, সেটা আগামী তিনদিন আপনারা দেখবেন।

বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব শিকাগোল্যান্ড হোষ্ট হিসাবে ৩৬ তম ফোবানা আয়োজক BAC এর মাত্র ২০ জনের হোষ্ট কমিটি ৩৬ তম ফোবানার বিশাল আয়োজন করে। ছিল ছোট খাট সমন্বয়হীনতার অভাব। তবে সামগ্রিক বিচারে হোস্ট কমিটি সফলকাম বলা যায়। উদ্ভাধনী পর্বে বাংলাদেশি পতাকার আদলে লাল সবুজের বেলুন উড়িয়ে উদ্ভাধন করা হয়।

শুক্রবার সন্ধে ৭ টায় ব্লাক টাই ডিনারের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক শুভ সুচনা পায়। রাত সাড়ে আটটায় মুল মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বানী পড়ে শোনান মাসুদ রব চৌধুরী, চীফ গেষ্ট অসুস্থতাজনিত কারনে ১ম দিন আসতে না পারায় মন্ত্রী ইমরান আহমেদ এর বক্তব্য পড়ে শোনান সৈয়দ এহসান।

ডাবল ট্রি হিলটনের বলরুম, হেটেল লবি নানা শহরের ফোবানার সাথে সংশ্লিষ্ট দের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। ৩৬ তম ফোবানায় ৬০ টি সংগঠন এর শিল্পী রা উপস্থিত ছিলেন।

১ ম দিনের ছোট আকারের উদ্ভাধনী পর্ব এর পর রাসেল, রিয়া ও সোনিয়ার চম্যকার উপস্থাপনা ফোবানার কালচারাল অনুস্টানের শুভ সুচনা হয়। জাতীয় সংগিত এর পর ছোট বাচচাদের সম্মিলিত নাচের মাধ্যমে তিনদিন ব্যাপী কালারফুল কালচারাল অনুস্টানের সুচনা হয়।

বক্তৃতা পর্ব না থাকায় অনেকেই সাধুবাদ জানান। তবে চারজন আইকন স্পন্সর কে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়, তারা হলেন তামান্না রাব্বানী ( বাংলাদেশ), রেজা রহিম, গোলাম ফারুক ও আবু হানিফ। তারা ফোবানার হোষ্ট কমিটিকে শুভেচ্ছা জানান।

রাত ৯ টা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত চলে কালচারাল পর্ব। ফোবানার নানা কার্মকান্ড স্লাইড শোর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। ফোবানার মুল ভেনুতে নানান খাবারের স্টল ও নানা ভেন্ডার দের সরব উপস্থিতি ছিল গোছানো । রাত বাড়তে থাকে নানা শহরের বাংলাদেশীরা আসতে থাকেন।

নাচ গান, কবিতা ও চম্যকার উপস্থাপনা ছিল টাইম মত। কখনও কোন ছন্দপতন ঘটেনি। বাচ্চাদের চম্যকার কিছু নাচের পর তিন জন মুল শিল্পী মঞ্চে পারফর্ম করেন। লাবনী দাস চম্যকার পারফর্ম করে মঞ্চ কাপিয়ে তুলেন। ব্যান্ড শিল্পী রাসেল খান ফিডব্যাকের ৬ টি গান পরিবেন করেন, সেই সময়টা ফোবানার শ্রোতারা ৯০ দশকে ফিরে যান।

শেষ দিকে আসেন সায়েরা রেজা, গড গিফটেড ভয়েস সায়েরা রাত ১১ টা থেকে সারে বারোটা পর্যন্ত ফোবাবার দর্শকমহল কে আনন্দিত করে তুলেন। কাটায় কাটায় রাত ১২.৩০ মিনিটে আনুষ্ঠানিক ১ ম দিনের সমাপ্তি ঘটে। শিকাগোতে ইসনা সম্মেলন হওয়ায় স্থানিয়দের উপস্থিতি কম ছিল ১ম দিন, তবে ১০ টি ষ্টেটের বাংলাদেশীরা মাতিয়ে রাখেন। মুসারাত জাবিন সেবার সম্পাদনায় চম্যকার একটি সুভেনীর সকলকে উপহার দেয়া হয়। এবারের ৩৬ ফোবানার একটি চম্যকার বিষয় হল, কোন আনুষ্ঠানিকতা নাই।

সুভেনীর নিয়ে ও কোন সময়ক্ষেপণ করা হয় নি। বক্তৃতা আলোচনা না থাকায় ফোবানায় কালচারাল অনুস্টানের গতিময়তা ছিল। ১ ম দিনের অনুস্টানের মুল অতিথি মন্ত্রী জনাব ইমরান আহমদ অসুস্থতাজনিত কারনে বাংলাদেশে ও মান্যবর রাষ্ট্রদুত শহিদুল ইসলাম বদলি জনিত কারনে বাংলাদেশে। তবে জর্জিয়ার সিনেটর শেখ রহমান আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিল ফোনানার ২ য় ৩ য় দিনে ১০ টি সেমিনার, ফোবানার ইসি মিটিং, ফোবানার নির্বচন অনুষ্টিত হয়,।

বেবী নাজনিন, ফাহমিদা নবী, শুভ্রতা দেব, লাবনী সহ মোট ৩০০ জন পারফর্ম করেন। ২০২৩ সালে ৩৭ তম ফোবানা ডালাসে ও ২০২৪ সালে ৩৮ তম ফোবানা ডিসি তে অনুস্টিত হবে। আনন্দ উ্যসবের ও প্রবাসী দের মিলনমেলা য় তিন দিনের ফোবানার সমাপ্তি ঘটে।।