প্রবাসী প্রসঙ্গ -২

প্রকাশিত: ৭:৪৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০২১ 1,265 views
শেয়ার করুন

পরপর দুটি ঘটনা, একটি সাম্প্রতিক সময়ের চলমান অন্যটি প্রবাসীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু নীরবে ঘটে গেছে, আমি জানলাম,অনেক পরে, তাও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট ঘাটতে গিয়ে পাওয়া। চলমান ইস্যুটি আটকে পড়া প্রবাসীদের টিকা প্রসঙ্গে। টিকা নিতে নিবন্ধন করতে হবে এবং এনআইডি ছাড়া নিবন্ধন করা যাবে না এতেই কর্তৃপক্ষ অনড় ছিলেন। প্রবাসীদের প্রবল বিক্ষোভ ও আন্দোলনে কর্তৃপক্ষ নমনীয় হন ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাথে দেনদরবার, আলাপ আলোচনার পর এনআইডি ছাড়া শুধু বিএমইটির সদস্যপদ ও পাসপোর্ট দিয়ে নিবন্ধন করার ব্যবস্থা করা হয়। তবে নিবন্ধন ছাড়া টিকা নয় এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ অনড় থাকেন। বিদেশের মতো walk-in ব্যবস্থার প্রস্তাবে কর্তৃপক্ষ সায় দেননি। এখন বিএমইটি কার্ড ও পাসপোর্ট দিয়ে নিবন্ধন হচ্ছে ঠিকই তবে এসএমএস নিয়ে এন্তার সমস্যা হচ্ছে। প্রবাসীরা এতো বিক্ষোভ আন্দোলনের পর যখন নিবন্ধন ও এসএমএস নিয়ে গলদঘর্ম ঠিক তখনই খবরে দেখলাম বিজিএমইএ-র সভাপতির নেতৃত্বে ও গাজীপুর জেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে কোন রকম নিবন্ধন ছাড়াই বিভিন্ন পোশাকশিল্পের কারখানায় পোশাককর্মীদের টিকা দেয়া হচ্ছে ! প্রথমদিনেই দশহাজার কর্মীকে টিকা দেয়া হয়! স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে পোশাকশিল্পের কর্মীদের নিবন্ধন ছাড়াই টিকা দেয়া গেলে প্রবাসীদের নয় কেন ? সবচাইতে পীড়াদায়ক হলো এই ব্যাপারটি নিয়ে কারো কোন মন্তব্য চোখে পড়েনি। কোন মিডিয়া, প্রবাসী নেতৃত্ব, সংগঠন কেউই কোন প্রশ্ন করেনি। আমরা শুধু অবাক হয়ে দেখলাম প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় যা করতে পারেনি বিজিএমইএ অনেকটা অনায়াসেই নিজেদের জন্য নিবন্ধন ছাড়াই টিকার ব্যবস্থা করতে পেরেছে। প্রবাসীদের প্রতিনিধিত্ব করার মতো যে কোন সংগঠন নেই তা অত্যন্ত প্রকট হয়ে ধরা পড়েছে।

দ্বিতীয়টি হলো প্রবাসী কল্যাণ বোর্ডে প্রবাসীদের প্রতিনিধির অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। বেশ কয়েকবছর আগে দুবাইয়ে কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের সাথে একটি মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলাম। তখন বোর্ডে প্রবাসীদের কোন প্রতিনিধি ছিলোনা। সেই সভায় আমাদের প্রতিনিধির অন্তর্ভুক্তির দাবি তুলেছিলাম। কয়েকদিন আগে কল্যাণ বোর্ডের ২০১৯-২০ সনের বার্ষিক প্রতিবেদন দেখছিলাম, বোর্ডে প্রবাসীদের তিনজন প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন দেখে যেমন আনন্দিত হয়েছি, তেমনি আশ্চর্য হয়েছি যে এনিয়ে কোন প্রজ্ঞাপন দেখিনি, কোন প্রক্রিয়ায় এই প্রতিনিধিদের মনোনীত করা হয়েছে তাও জানলাম না। যে তিনজন মনোনীত হয়েছেন উনাদের বিশদ পরিচয়ও জানিনা। যতটুকু জেনেছি প্রায় দু’বছর হলো উনারা বোর্ডে আছেন, অথচ প্রবাসীদের কি কি বিষয় উনারা বোর্ডে উত্থাপন করেছেন অথবা উত্থাপন করবেন আমাদের জানা নেই।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন খবর ও প্রজ্ঞাপন সাধারণ প্রবাসীদের বিশেষ করে শ্রমিক ভাইদের কাছে পৌঁছনোর একটি কার্যকর ব্যবস্থা প্রয়োজন। মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ বোর্ড, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এসবই করা হয়েছে প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য তাই সব খবরাখবর প্রবাসীদের কাছে পৌঁছনো জরুরি। এর নিরসনে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি অনলাইন পাক্ষিক নিউজ লেটার প্রকাশের প্রস্তাব করছি, যা ওয়েবসাইট ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের সাহায্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করা প্রবাসীদের কাছেও পৌঁছনো সম্ভব হবে। আশা করি প্রস্তাবটি যথাযথ কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়ে বিবেচনা করবেন।

আগের পর্ব পড়ুন