কোভিড ১৯ স্বাস্থ্য সামগ্রী নিয়ে ইকমার্সে কিছু ব্যবসায়ী দিনের পর দিন প্রতারণা করেই যাচ্ছেন। অন্যদিকে কিছু ইকমার্সে ব্যবসায়ী বর্তমান পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে সততার সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। এমন দুই অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি আপনাদের জন্য।
একঃ আমার নিজ গ্রামের বাড়ির এলাকার ইকমার্স ব্যবসায়ী। তিনি আবার দাড়ি টুপিধারী নামাজী ব্যক্তি। তিনি স্বল্প লাভে পন্য বিক্রয় করেন এবং পণ্য বিক্রিত লাভের টাকার একটি অংশ নাকি জনকল্যানে দান করেন। তার চটকদার ফেসবুক পোস্ট দেখে কোভিড ১৯ সময়ে এন ৯৫ মাস্ক এবং হ্যান্ড গ্লাভসের জন্য অর্ডার করলাম।
গ্লাভস
অর্ডার করলাম ব্লু গ্লাভস ডেলিভারী পাবার পর দেখি দিয়েছে সাদা গ্লাভস। অভিযোগ জানালাম কিন্তু আমাকে বললো কোয়ালিটি এক, স্টকে ব্লু গ্লাভস নাই। কি আর করা! সাদা গ্লাভস ব্যবহার শুরু করলাম। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম রিওয়াশেবল বলে বিক্রয় করা গ্লাভস পড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই হলদে রঙ হয়ে যায় আর একবার পড়লেই ছিড়ে যায়। পর পর কয়েকটি গ্লাভস ব্যবহারে পর বুঝলাম অত্যন্ত নিম্নমানের পন্য সরবরাহ করেছেন নামাজী হুজুর ব্যক্তিটি। এতো গেল হ্যান্ড গ্লাভসের বিষয়।
এন ৯৫ মাস্ক
এবার আসি এন ৯৫ মাস্কের বিষয়ে। মাস্ক এর কোয়ালিটি এতই খারাপ দুইবার ব্যবহারের পর মাস্কের ব্যালান্স পাতটি ভেঙ্গে গেছে, মাস্কও ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। অভিযোগ জানালাম, বললো দেখছি কি করা যায়। তারপর সব চুপচাপ। নামাজী হুজুর হয়ে যদি কোভিড ১৯ এর মধ্যেও এমন চিটারী বাটপারী করে তাহলে তিনি কোন কোয়ালিটির ব্যবসায়ী?
দুইঃ গ্লুকো মিটার
ইকমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইক্যাব) এর সদস্য একটি প্রতিষ্ঠানে ডায়াবেটিক গ্লুকো মিটার অর্ডার করলাম আমার এক আত্নীয়ের জন্য। প্রতিষ্ঠানটির মালিক আমার ফেসবুক বন্ধুও। অর্ডার করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে পন্যটি সরবরাহ করা হলো। শুধু তাই নয়, পণ্যের মূল্যটিও বাজার মূল্যের চেয়ে কম রাখা হলো। সবচেয়ে বড় কথা পণ্যটির কোয়ালিটি অনেক ভাল।
এবার আপনারা ঘটনা দুইটা বিশ্লেষণ করে বলুন কোন ব্যবসায়ীটি ভাল, সৎ? এক লাখ আশি হাজার ফেসবুক পেজ আছে যাদের কোন ট্রেড লাইসেন্স নাই, দোকান বা অফিস নাই এমনকি ইক্যাবের সদস্যপদও নাই। এসব প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলো দিনের পর দিন ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপন ও বুস্টিং বানিজ্য করে জনগণকে ঠকিয়ে যাচ্ছে। তাই সময় থাকতে সকলে সতর্ক ও সাবধান হোন। ইক্যাবের সদস্য না হলে পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকুন।
___________________
খন্দকার হাসান শাহরিয়ার
সাংবাদিক