সিলেটের বিয়ানীবাজারে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

প্রকাশিত: ২:২২ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২০ 790 views
শেয়ার করুন

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মোল্লাপুর -ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব রফিক উদ্দিন গত মধ্যরাতে করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান, গত রাত ১২ ঘটিকার সময় ঐ বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু হয়। এদিকে খবর পাওয়া মাএ, বিয়ানীবাজার উপজেলার করোনা দাফন কাফন টিমের সদস্যরা ভোর বেলা বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে অবস্থান করে, ৬টায়, গোসল ও কাফন এর কাজ সম্পুর্ন করেন স্বেচ্ছাসেবী টিম।

আজ ৭ জুলাই দুপুর ২ ঘটিকার সময় তার দাফনকাজ সম্পাদন করা হয়।করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) উপস্বগ নিয়ে মৃত্যু বরণ করা, বীর মুক্তিযোদ্ধা,জনাব রফিক উদ্দিন সাহেব এর লাশ দাফন কাজে সহায়তা করেছে , বিয়ানীবাজার উপজেলার করোনায় মৃত্যদের দাফন ও সৎকার স্বেচ্ছাসেবী পরিষদের সদস্যরা ।
এবং বীর মুক্তি যোদ্ধাকে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অফ অনার দিয়ে রাস্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করে। বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ। এমন দুর্যোগে স্বজনরা দূরে সরে গেলেও স্বেচ্ছাসেবকরা তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

ইতোমধ্যে ৬ টি জানাজা সম্পূর্ণ ) মৃতদেহ দাফন ও সৎকার করেছেন তারা। মৃতদের দাফনে সারাদেশে প্রায় ’ স্বেচ্ছাসেবী এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

বিয়ানীবাজার উপজেলার করোনায় মৃত্যদের দাফন ও সৎকার সেচ্চাসেবী পরিষদ দাফন কার্যক্রমের সমন্বয়ক ও দায়িত্বশীলরা জানান, করোনায় নিহতদের লাশ ফেলে স্বজনদের পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর, আমাদের বিয়ানীবাজার উপজেলার সেচ্চাসেবী টিম গঠন করা হয়, কওমী মাদ্রাসার অভিজ্ঞ আলেমগন ও মানবাধিকার কর্মী,ব্যাবসায়ী, সাংবাদিকদের , নিয়ে একটি সংগঠন করা হয় ওইসব মৃতদের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। করোনা পজিটিভ ও করোনায় মরদেহ দাফন ও সৎকারে স্বেচ্ছাসেবী পরিষদ গঠন করা হয়। গত এপ্রিল থেকে ওই স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ শুরু করেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিধি মেনে হাসপাতাল বা বাসায় গিয়ে মৃতদেহ গোসল করানো, কাফনের কাপড় পরানোসহ পুরো দাফন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন স্বেচ্ছাবেসকরা।

করোনায় মৃত্যদের দাফন ও সৎকার সেচ্চাসেবী পরিষদ এর যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন,, হাফিজ মাওলানা আবু সাঈদ, মাওলানা আবুল কালাম, মাওলানা রেদওয়ান আহমদ, হাফিজ জাহেদ আহমদ, মাওলানা সালাহ উদ্দিন, ,মরহুমের ছেলে হাফিজ মাহফুজ ,হাফিজ মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন,
এনায়েত হোসেন (এহসান), এম,এ জয়নুল চৌধুরী, রুহিন চৌধুরী ফরহাদ, কামরান আহমেদ, আবুল কাশেম চৌধুরী , পলাশ আফজল, সাজু আহমদ, গোলাম জাফর, এস.এম রুমেল সহ ইসলামি ফাউন্ডেশন এর মাওলানা আব্দুর রহমান ও বিয়ানীবাজার উপজেলার মসজিদের ইমাম – মাওলানা, নজরুল ইসলাম।

সেচ্চাসেবীরা আরো জানান, করোনায় মৃত্যদের দাফন ও সৎকার সেচ্চাসেবী পরিষদ এর পক্ষ থেকে শুধু মুসলিম নয়, হিন্দু ধর্মের মৃতদেহ সৎকারের জন্যেও আলাদা টিম কাজ করছে। মহিলা মৃতদেহের জন্যে আমাদের মহিলা স্বেচ্ছাসেবী দল রয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ জন সেচ্চাসেবী কাজ করছেন।

সেচ্চাসেবীরা জানান , কবরস্থানে মৃতের পরিবারের হাতেগোনা কয়েকজন থাকেন। কখনো কখনো কেউই থাকেন না। তবে পুরো প্রক্রিয়ায় স্বজনদের কাছে না পেলে খুব কষ্ট লাগে। পরিবারের যে মানুষটা এতোটা বছর একসঙ্গে ছিলেন সেই মানুষটার শেষযাত্রায় স্বজনদের অনুপস্থিতি সত্যিই কষ্টদায়ক বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সেচ্চাসেবী পরিষদ এর দাফন কার্যক্রমের সৎকার কাজের পুরো প্রক্রিয়ার ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক, সেফটি গ্লাস, ফেস শিল্ড, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, হেভি গ্লাভস, নেক কভার সবকিছুই উপজেলা প্রসাশন ও আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে সংগ্রহ করা হয়। মরদেহ বহনের জন্য বিশেষ বডি ব্যাগসহ সুরক্ষার জন্যে তিন ধরনের জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি মরদেহ সৎকারের পর সুরক্ষার জন্য পিপিইসহ পরিধেয় অন্যান্য সামগ্রী কবরস্থানেই পুড়িয়ে ফেলা হয়।