বিয়ানীবাজার কলেজের প্রথম ভিপি বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুল মুছব্বির এঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলী

প্রকাশিত: ১২:০৬ অপরাহ্ণ, জুন ৬, ২০২০ 575 views
শেয়ার করুন

বীর মুক্তিযুদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার ও প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মোঃ আব্দুল মছব্বির। ১৯৪৬ সালের ৫ জানুয়ারি সিলেট জেলার বিয়ানীবাজারা থানার মাথিউড়া ইউনিয়নের পুরুষপাল গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন আব্দুল মছব্বির। তারঁ পিতার নাম হাজী ফরিজ আলী। বংশের দিক থেকে হাজী ফরিজ আলী ছিলেন উচ্চ বংশীয় উচ্চ শিক্ষিত এবং প্রচুর অর্থ সম্পদের অধিকারী। আব্দুল মছব্বির এর মাতার নাম মোছাঃ কুলছুমা খাতুন। তিনি একজন সম্ভান্ত্য বংশের রুপবতী, পূন্যবতী, সর্বগুন সম্পন্ন মহিলা ছিলেন। আব্দুল মছব্বির ছোটবেলা থেকেই খুব দুরন্ত ছিলেন। তাঁর শরীর ও স্বাস্থ্য ও ছিল মোটামুটি ভালো। তাঁর বাড়ির পাশেই ছিল বড় পুকুর, মা- বাবার অজান্তে সুযোগ পেলে পুকুরে সাতাঁর কাটতেন বন্ধুদের সাথে পাল্লা দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা। ছেলেবেলা থেকেই তিনি বন্ধুদের সাথে একত্রে মিলিত হয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন। ছেলেবেলা থেকে নানা গুণের অধিকারী ছিলেন আব্দুল মছব্বির। শিক্ষা জীবন শুরু হয়েছিল পাঁচ বছর বয়স থেকে। তিনি পারিবারিক ভাবে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন বাড়ির পাশের পুরুষপাল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাইমারির গন্ডি পেরিয়ে বড়লেখা পি.সি হাই স্কুলে ভর্তি হন তিনি। স্মরন শক্তি ও মনোযোগ ছিল প্রচুর লেখাপড়ায়। সর্বদা ভালো রিজাল্ট করতেন তিনি। ছেলেবেলা থেকেই আব্বার মতই শারিরিক গঠন ছিল আব্দুল মছব্বিরের, হাটি হাটি পা পা করে হাই স্কুলের গান্ডি পেরিয়ে আসেন তিনি। ১৯৬২ হতে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত আব্দুল মছব্বির মার্শাল ল এবং শিক্ষা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন ১৯৬৯ সালে বিয়ানী বাজার কলেজের প্রথম ছাত্রসংসদ এ তিনি সর্ব সম্মতিক্রমে বিনা ভোটে প্রথম ভিপি মনোনীত হন ।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাঁজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁর বীরত্ব ও বিচক্ষণ নেতৃত্বসুলভ আচরণে মুগ্ধ হয়ে সেক্টর কমান্ডার তাঁকে এক কোম্পনীর দায়িত্ব দিলে তিনি কোম্পানী কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যুদ্ধ জয়ী বীর কোম্পানী কমান্ডার স্বাধীন দেশে ফিরে আসেন ।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি ও তাঁর কোম্পানী অস্ত্র সমর্পন করেন । পরবর্তীতে তিনি বিয়ানী বাজার কলেজ রোডে ব্যবসা করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করেন আমার স্মৃতি রয়েছে এই বীর সেনা ও প্রিয় নেতা মুছব্বির ভাইয়ের সাথে আমরা তখন ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় এবং বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনে ও অপ্রয়োজনে উনার মালিকানাধীন ” পলাশ কাঠ বিতান ” এ গেলে উনি খুবই স্বাদরে গ্রহণ করতেন আপ্যায়ন করতেন সলা পরামর্শ ও দিতেন তাঁর আদর্শিক কথাগুলো এখনো কানে বাঁজে । সম্মেলন বা নবীন বরণ কিংবা কোন আচার অনুষ্ঠান হলে মুছব্বির ভাই যে বড় ধরনের চাঁদা দিবেন এটি আমাদের সমসাময়িক ছাত্রনেতাদের জানাই থাকতো । অমায়িক ও আদর্শিক এক নেতা এক বীর মুক্তিযুদ্ধা মুছব্বির ভাই ছিলেন নীতি ও নৈতিকতায় পরিপূর্ন এক পাহাড় সম ব্যক্তিত্ব.. ।
৯০ এর দশকের প্রথম দিকে তিনি আমেরিকায় পাড়ি দেন এবং সেখানে ও তিনি রাজনৈতিক ও সামাজিক কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ।

 ছুটে চলে আসেন প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সেই সবুজ গ্রাম পুরুষপালে ।
তিনি তাঁর প্রিয় দেশের মাটিতে নিজ মাতৃভূমিতে ৫ জুন ২০১৯ইং তারিখে বুধবার দিবাগত রাত ৩.৩০ মিনিটে ইন্তেকাল করেন ।
পৃথিবীর সৃষ্টি থেকে আল্লাহ প্রদত্ত কিছু কিছু মানুষ দেশে ও জাতির কল্যাণে কাজ করে নিজেকে পুড়িয়ে সমাজকে আলোকিত করেন। এই এক দৃষ্টান্ত ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণ অক্ষরে লেখা থাকবে আব্দুল মছব্বিরে নাম। জাতির বুকে লাল সবুজের পতাকায় অমর হয়ে থাকবে বীর মুক্তিযোদ্ধা কোম্পানি কমান্ডার শ্রদ্ধেয় আব্দুল মছব্বির। যার ঋণ কখনোই পরিশোধের নয়। তিনি চির ভাস্কর আজ তাঁর মৃত্যু বার্ষিকীতে আমরা বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই এই বীর মুক্তিযুদ্ধার প্রতি ।