সিলেটে পাবজি-ফ্রি ফায়ারে মগ্ন শিশু-কিশোর, উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা!

মাহবুব জয়নুল মাহবুব জয়নুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, মার্চ ৬, ২০২১ 775 views
শেয়ার করুন
 
­মাঠে গিয়ে ধুলো-কাদা মাখা হয় না আর এখন, ঘেমে-নেয়ে বিকেলে খেলা শেষে বাড়ি ফেরার দৃশ্যটা আজকাল যেন হারিয়ে যাচ্ছে।
পাড়ায় পাড়ায় খেলার জায়গার অভাব, পড়ার চাপ, যেমন তেমন বাইরে গেলে খারাপ হবার ভয় – কতই না অভিযোগ অভিভাবকদের!
তার বদলে অভিভাবকরা বিনোদনের নামে যা তুলে দিচ্ছেন ছেলে-মেয়েদের হাতে, তার ক্ষতির পরিমাণটা তাদের ধারণারও বাইরে। বিশেষ করে প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের বিভিন্ন  উপজেলায়  চিত্র ক্রমেই মারাত্মক হয়ে উঠছে। 
 

সাম্প্রতিক বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল-কলেজসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। তাই নেই কোন পড়াশোনার চাপ। অধিকাংশ ছেলে-মেয়ে সময় পার করছে ঘরে বসে। সময় পার করতে অধিকাংশ শিশু-কিশোর বেঁচে নিয়েছে অনলাইন গেম। অনলাইন গেমের মধ্যে অন্যতম পাবজি এবং ফ্রী ফায়ার । এই অনলাইন ব্যবহার দিন দিন কেবল বেড়েই চলছে। শিশু থেকে কিশোর দিন থেকে রাত সারাক্ষণই এই গেমে মগ্ন। দিন দিন এই গেম নেশার চেয়ে ভয়ংকর হয়ে যাচ্ছে। ফলে ঘরের চার দেয়ালের ভেতরেই আটকা পড়ছে শিশুদের বর্ণিল শৈশব। এতে করেই খেলাধুলার আনন্দ খুঁজে ফিরছে মাউসের বাটন টিপে, কম্পিউটারের পর্দায় গেমস খেলে, কিংবা মোবাইল ফোনের স্ক্রিনে। অনেক সময় তাদের এ আকর্ষণটা চলে যাচ্ছে আসক্তির পর্যায়ে। ধীরে ধীরে তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে কম্পিউটার-মোবাইল-ট্যাব গেমসের ওপর। এসব ভিডিও গেমস শিশু-কিশোরদের প্রকৃত শৈশব-কৈশোর কেড়ে নিচ্ছে।

 
পশ্চিমা বিশ্বের মতো আমাদের অনেক পরিবারে বাবা-মা দুজনই কর্মব্যস্ত। উভয়েই ছুটছেন ‘ক্যারিয়ার ও সফলতা’ নামক সোনার হরিণের পিছনে। আবার গ্রামীণ এলাকায় বাবা-মায়ের কর্ম ও পারিবারিক ব্যস্ততায় একাকীত্বে থাকতে হচ্ছে সন্তানদের।  এতে সন্তান বড় হচ্ছে প্রায় একা একা। অনেক অপরিণামদর্শী মায়েরাই শিশুকে খাবার খাওয়াতে, তার কান্না থামাতে- টিভি, কম্পিউটার, মোবাইল ফোন ও ভিডিও গেমসের অভ্যাস করাচ্ছেন।
 
সচেতন মহল বলছে, এসব গেমসে আসক্তির কারণে শিশু-কিশোররা পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছে। খেলার এক পর্যায়ে এসে তারা ভায়োলেন্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি এটি আলোচিত আরেক ‘ব্লু হোয়েল’ গেমসের মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। লেখাপড়ায় ফাঁকি দিয়ে সারা রাত এই গেম খেলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আসক্তি তৈরি হয়েছে। পড়ালেখায় অনেকের মনোযোগ কমে গেছে। গেমটি খেলতে না পারলেই মানসিক যাতনা তৈরি হয়। এ কারণে এসব পাবজি ও ফ্রি ফায়ারের মতো খেলাগুলো নিয়ন্ত্রণে সরকারকে এগিয়ে আসা উচিত।