রাজশাহীতে অনুমোদনহীন ডায়াগনস্টিক, মালিক গ্রেপ্তার

প্রকাশিত: ১:৩৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০২০ 602 views
শেয়ার করুন
রাজশাহীতে অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে চলছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) দুপুরে জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে পুষ্প ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে তার মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
 
গ্রেপ্তারকৃত রবিউল ইসলাম তিন বছর ধরে অবৈধভাবে সেখানে ডায়াগনস্টিক চালিয়ে আসছিলেন। যেখানে গুরুতর রোগের অপারেশনের রোগী ভর্তি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি।
 
জানা গেছে, অপারেশন, রক্ত দেয়া-নেয়াসহ বিভিন্ন ধরণের সেবা দেয়ার কথা বলে গ্রাম থেকে সাধারণ মানুষদের ভর্তি হতে বলতেন। তবে সেখানে ছিলনা কোনো চিকিৎসক-নার্স। ভুতুড়ে পরিবেশে গড়ে তোলা এ প্রতিষ্ঠানে এসে সর্বস্ব হয়েছেন অনেকে। মঙ্গলবার অভিযানের সময় কোনো চিকিৎসক বা নার্সের দেখা পাওয়া যায়নি। তালাবদ্ধ রেখে চলত কার্যক্রম।
এদিন সকালে রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসের কর্মকর্তারা ডায়াগনস্টিকের মূল ফটকের দুপাশে ঘণ্টাখানেক অবস্থান করে গতিবিধি লক্ষ্য করেন। কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি আসেন। প্রথমে পরিচয় গোপন করলেও তিনিই সেটির মালিক বলে পরবর্তীতে স্বীকার করেন। দেখাতে পারেননি কোনো কাগজপত্র।
 
এরপর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা ডায়াগনস্টিকের ভেতরে দোতলায় গিয়ে ভর্তি হওয়া রোগী দেখতে পান। সেখানে অন্তত ৬ জন গুরুতর অপারেশনের রোগী ভর্তি ছিল। অথচ সেই ডায়াগনস্টিকের কোনো অনুমোদনই নেই।
 
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিককে ১ মাসের কারাদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে ভর্তিকৃত রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার নির্দেশনা দিয়ে ওই ডায়াগনস্টিক সিলগালা করে দেন।
 
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওলিউজ্জামান জানান, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কালে যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স ব্যতিরেকে ক্লিনিক স্থাপনের অপরাধে মেডিকেল প্রাকটিস এবং বেসরকারী ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরী (নিয়ন্ত্রণ) অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় পুষ্প ডায়াগনস্টিক সেন্টার এন্ড ক্লিনিকের মালিক রবিউল ইসলামকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয় এবং ক্লিনিকটি সীলগালা করা হয়।
 
সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক বায়ান্ন টিভিকে বলেন, কোনো ডাক্তার-নার্স কিচ্ছু নেই। বাইরে তালাবন্ধ রেখে, একটা গলির মধ্যে পিছন দিকে কার্যক্রম চালাচ্ছিল। আমরা কল্পনাই করতে পারিনি। এটা বিরাট প্রতারণা ছিল।
 
নগরীর লক্ষিপুরে গড়ে ওঠা ক্লিনিকগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার ক্লিনিকের বিপক্ষে না। আমরা ক্লিনিকের মানোন্নয়নের জন্য কাজ করি, পরিদর্শনে যাই। তবে এটা চলমান প্রক্রিয়া। রাজশাহীজুড়ে অনুসন্ধান চলছে। অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে।
 
সিভিল সার্জন বলেন, নতুন বা মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়া ক্লিনিকগুলোকে সরকারী নিয়মানুযায়ী বৈধতার জন্য আবেদন করতে হবে। উচ্চপর্যায় থেকে সেই আবেনকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা পেলে আমরা পরিদর্শনে যাব।