এখনো ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষত বয়ে চলছেন ব্যবসায়ী সুরুজ আলী

প্রকাশিত: ১২:০৬ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১০, ২০২৪ 134 views
শেয়ার করুন

৩১ মার্চ রাতে প্রলয়ঙ্কারী ঘুর্ণিঝড়ে তছনছ করে দিয়েছে পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নসহ শান্তিগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম। পাগলার রায়পুর, চন্দ্রপুর, ইনাতনগর, রসুলপুর, শত্রুমর্দন (হাজিপাড়া-বাঘেরকোনা অংশ), পাগলা বাজার, কান্দিগাঁও ও নবীনগর গ্রামের কয়েক শ’ ঘরবাড়ি এবং প্রায় অর্ধশত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়েছে এই ঘুর্ণিঝড়ে। গ্রামগুলোর অসহায় মানুষেরা যেমন তৈরি করতে পারছেন না তাদের বসত ঘর তেমনি ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরাও। তাদের মধ্য থেকে যারা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছিলেন সেসব  প্রতিষ্ঠান মালিকরা পড়েছেন চরম বিপাকে।

 

এমনই একজন স’ মিল ব্যবসায়ীর নাম সুরুজ আলী। পাগলায় সবচেয়ে ক্ষতি হওয়া গ্রামগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি গ্রাম হচ্ছে নবীনগর। এ গ্রামেই সুরুজ আলীর স’ মিলের অবস্থান। প্রলয়ঙ্কারী ঘুর্ণিঝড়ে গুড়িয়ে গিয়েছে সুরুজ আলীর আধাপাকা স’ মিলটি। এতে ঘরের ভিতরে থাকা তৈরি করা ফার্নিচার, মূল্যবান কাঠ, মেশিনারিজ জিনিসপত্র, টিনের চাল, সবগুলো দেয়ালের ইট ও ঘরের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এতে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে স’ মিল মালিক সুরুজ আলীর। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ঘুর্ণিঝড়ের দশ দিন পেড়িয়ে গেলেও এখনো ধ্বংসস্তুপের মতো পড়ে আছে সুরুজ আলীর স’ মিল। জরুরিভিত্তিতে জেনেরেটর মাধ্যমে কাঠ ছিঁড়ানোর কাজ শুরু করলেও ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে স’ মিলের প্রায় সবক’টি দেয়াল। ঘরের রড-সিমেন্টে তৈরি খুঁটিগুলো ফার্নিচারের উপড়ে পরে যাওয়ার কারণে গুড়িয়ে গিয়েছে সব ফার্নিচার। বিশাল ঘরের অন্যান্য কাঠ ভেঙে এখন শুধু লাকড়ি। চালের একটি টিনও খুঁজে পাননি মিল মালিক। বৈদ্যুতিক তাড় ছিঁড়ে যাওয়ায় মিলে এখনো বন্ধ রয়েছে বিদ্যুত চলাচল। এজন্য মিল মালিককে গুনতে হচ্ছে লোকসানের উপর লোকসান।
মিল মালিক সুরুজ আলী জানিয়েছেন, স’ মিলের ঘরে নূন্যতম ৫ লক্ষ টাকার তৈরি করা ফার্নিচার ছিলো। ছিঁড়ানো মূল্যবান কাঠ ছিলো। যে ঘর ধ্বংস হয়েছে তার নির্মাণ ব্যয় ১০/১২ লক্ষ টাকা। একটি টিনও খুঁজে পাননি তিনি৷ রড-সিমেন্টের পিলার পর্যন্ত ভেঙে ফেলেছে। ঘরের ভিতরে যা ছিলো সবকিছু নষ্ট হয়েছে৷ মোট ক্ষতির পরিমান প্রায় পনেরো লক্ষ টাকা হবে।

সুরুজ আলী বলেন, শুধু স’ মিল নয়, আমার বাড়িও শেষ। সবদিকে আমার ক্ষতি। আমি কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবো বুঝে উঠতে পারছি না। এখনো ধ্বংসস্তুপ গুছাচ্ছি। বিভিন্ন ব্যাংকে লোন আছে, কীভাবে যে এসব পরিশোধ করবো তা-ই ভেবে পাচ্ছি না। সরকারি বা বেসরকারি যেভাবেই হোক আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের (যাদের ক্ষতি হয়েছে) ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া উচিত।
শত্রুমর্দন বাঘেরকোনা গ্রামের বাসিন্দা সেলিম আহমদ বলেন, আমাদের চোখের সামনে একজন মানুষকে শেষ হতে দেখছি৷ ঘুর্ণিঝড়ে  তার আর কিচ্ছু রইলো না। স’ মিলের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে৷ সরকারি, বেসরকারি বা ব্যাংক লোনের মাধ্যমে হলেও তাকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দেওয়া দরকার।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত সাহা বলেন, এ বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখবো। বিভিন্ন ব্যাংকের সাথে কথা বলে করণীয় নির্ধারণ করবো।