‘’সিলেট জেলার বন্যা প্রতিরোধে প্রধানমন্ত্রীর নিকট কিছু প্রস্তাবনা

লুৎফুর রহমান লুৎফুর রহমান

সম্পাদক ও সিইও, বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ৬:৫৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২২ 345 views
শেয়ার করুন

সিলেট বাঁচাও, নদী বাঁচাও, টিলাকাটা বন্ধকর ইত্যাদি দাবীনিয়ে সিলেটবাসী সোচ্ছার হওয়া সময়ের দাবী। পরিবেশবাদী সংগঠন গুলোকে সোচ্ছার হতে হবে।অনাগত বিপদ থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজন কর্ম পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নে বলিষ্ট ভূমিকা পালন করতে হবে সিলেটবাসীকে। সহযোগীতা করতে হবে সরকারকে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয় তা বাস্তবায়নে হতে হবে সোচ্ছার।অনিয়মকে না বলুন।সিলেট বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চল কেন প্লাবিত হল? কারন চিহ্নিত করতে প্রয়োজনে বিদেশী দাতা সংস্থাগুলোকে সংযুক্ত করুন? চিহ্নিত করান প্রক্রিয়া শেষ হলে, খাল খনন নদী, খনন, পয়ঃ নিষ্কাশ স্থায়ীভাবে নিরসনে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্ধ করুন।

 

মন্ত্রনালয় অর্থ বরাদ্ধ দিলে তা বাস্তবায়ন দক্ষ ও অভিজ্ঞ বিদেশী যে কোন টিকাদারী প্রতিষ্টান কে দর পত্রের মাধ্যমে দিয়ে তা বাস্তবায়ন করুন। ছয় নয় কারী প্রতিষ্টন কে দিয়ে এ কঠিন সমস্যা সমাধান সম্ভব নহে।শুধু অর্থের অপচয় ছাড়া আর কি? অতীথ অভিজ্ঞতা বলে, এ সব ঠিকাদারী প্রতিষ্টান পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট অসাধু কর্মকর্তা গনের সহযোগীতায় রাষ্ট্রের বরাদ্ধকৃত টাকা উত্তোলান এর মাধ্যমে তছনছ করে ফেলে। প্রধানমন্ত্রী ‘’দুর্গত মানুষের’’ বাস্তব অবস্থা দেখেছেন। সভা করেছেন। নিশ্চয়েই বড় ধরনের ভানবাসী মানুষের কল্যানে বরাদ্ধ আসবে। দর্যোগ এবং দুর্ভোগ এক দিনে সৃষ্টি হয় না। এক দিনে নিরসন ও সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কাছে কিছু প্রস্তাবনা তুলে ধরছি:

১ম: ১৯৭৮ সালে খাল খনন, নদী খনন, নদী শাসন, কর্মসূচী অবাহত ভাবে চালু রাখতে হবে।

২য়: সরকার ভূমি মন্ত্রনালয়ের নিকট থেকে পুরাতন খাল, নদী, এসবের তালিকা নিয়ে এগোতে হবে। কঠোর হস্তে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সহযোগীতায় যে সব খাল বা নদীর শ্রেনী পরিবর্তন করা হয়েছে, তাদেরকে জবাব দিহির আত্ততায় আনেতে হবে।

৩য়: বৃটিশ আমলে যে ভাবে সীমানাপ্রাচীর স্থাপন করা হয়েছিল, তার আদলে সীমানা প্রাচীর নির্ধারন করতে হবে। নদী শাসন আইন যথাযথভাবে রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থে বাস্তবায়ন করতে হবে।দেখভালের দায়িত্ব সরকারকেই গ্রহন করতে হবে।প্রতি বত্সর উপজেলা ভিত্তিক প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে দাখিল করতে হবে সরকারকে প্রয়োজনীয় প্রতিবেদনের আলোকে ফলোআপ জনগনকে জানাতে হবে ।

৪র্থ: ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যা জনগনকে ভাবিয়ে তুলেছে। ইতিহাসের পাতায় বিশ্বব্যাপী সিলেট কে নতুন ভাবে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বৈষ্যিক পরিবর্তনের কারন দীর্ঘ দিন নদী খনন না করা, ভূমি খেকো গন অবৈধভাবে নদী ভরাট করে, বিভিন্ন স্থাপনা নির্মান করা, নদীর শ্রেণী পরিবর্তন করে বাড়ী ঘর নির্মান, সর্বোপরি পানি নিষ্কাসনের সকল পথ বন্ধ করে জন দুর্ভোগ তৈরী করেছে যেমন সিলেটের বিয়ানীবাজারস্থ জমাদার খাল ভরাট করে বাড়ীঘর নির্মানের করা হয়েছে।সুনাই নদী, সুরমা নদী, কুশিয়ারা নদী, কুশিটিকি নদী ইত্যাদি খনন করা সময়ের দাবি।
৫ম: যথাযথভাবে পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা থাকলে গ্রামীন অবকাটামো নষ্ট হত না। জলাবদ্ধতার কারনে রাস্তাঘাট ভেংগে ব্যাপক ক্ষতিগস্থ হত না। রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকায় পুনঃরায় এসব রাস্তা পুনঃ নির্মান করতে হাজার ও কোটি টাকা ব্যয় হত না।

৬ষ্ট: খাল, নদী, হাওর-বিলের পানি, যথাযথভাবে নিষ্কাসনের দেখভালের ভার কিন্তু সরকারের। সরকার কটোর হলে এবং এসব খাল বিলের পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা অভ্যাহত থাকলে বন্যা ও দোর্যোগ নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব।পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা থাকলে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে। জলাবদ্ধতার কারনে পরিবেশের উপর ব্যাপক রোগ ব্যাধির সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বিদ্ধমান।জরুরী ভিত্তিতে মাট প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে ক্ষয়ক্ষতি চিহ্নিত করা।

৭ম: খাল, নদী নালা চিহ্নিত হওয়ার পর তা খনন করে সরকারী ব্যবস্থাপনায় খননকৃত মাটির উপর পরিবেশ বান্ধব গাছপালা রোপনও তদারকি জোরদার করা।এসব বাস্তনায়নের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা।

এসবের কিছুই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, সরকারের স্বদিচ্ছা না থাকলে।সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে সর্বাগ্রে।

 

লেখক, সভাপতি-সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)বিয়ানীবাজার, সিলেট।