সড়কে ডিজেল ছাড়াই চলছে কাঠের জিপগাড়ি

লুৎফুর রহমান লুৎফুর রহমান

সম্পাদক ও সিইও, বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ১:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৪, ২০২২ 398 views
শেয়ার করুন

 

সম্প্রতি দেশে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে বাস ভাড়াসহ বিভিন্ন পণ্যের দামও বেড়েছে। তবে এরমধ্যেই ডিজেল ও কেরোসিন ছাড়াই এক নতুন উদ্ভাবনী জিপগাড়ি তৈরি করেছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার বাসিন্দা এনামুল হক বুলবুল ও ইমরানুল হক ইমরান। পরিবেশবান্ধব কাঠের তৈরি জিপগাড়ি সৌর বিদ্যুতের সাহায্যে চালানো হচ্ছে। নতুন এই উদ্ভাবনী ভাবনার বিশেষ স্বীকৃতি পাওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন কিশোরগঞ্জের এলাকাবাসী।

পরিবেশবান্ধব কাঠের জিপগাড়ি তৈরিতে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। কম ভাড়ায় শব্দ, ধোঁয়া ও জ্বালানিবিহীন গাড়িটি সড়কে যাত্রী নিয়ে চলছে। চারজন যাত্রী ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জিপগাড়ি তৈরি করে স্বল্প পরিসরে চলাচল শুরু করেছে। এতে যাত্রীরাও খুশি।

জ্বালানিবিহীন জিপগাড়ি তৈরি ও রপ্তানি করতে সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন দুই ভাই।

জানা গেছে, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পৌর সদরের হাপানিয়া গ্রামের বাসিন্দা সহোদর দুই ভাই এনামুল হক বুলবুল ও ইমরানুল হক ইমরান ‘এমবিআই ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ওই প্রতিষ্ঠানে স্বল্প ব্যয়ে কাঠের তৈরি জিপগাড়ি তৈরি করেন। এজন্য তারা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা নেন।

মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পাকুন্দিয়া উপজেলা সদরে কাঠের তৈরি জিপগাড়িতে যাত্রী নিয়ে চলাচল করছেন। দূরে থেকে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবেন না গাড়িটি কাঠের তৈরি। গাড়িতে কয়েকজন যাত্রী নিয়ে এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যাচ্ছে।

জিপগাড়িতে চলাচল করা মোয়াজ্জেম হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, গাড়িটি কাঠের তৈরি হলেও বোঝার কোনো উপায় নেই। অন্যান্য গাড়ির মতো এটির শব্দ নেই বললেই চলে। এছাড়া স্বল্প ভাড়া থাকায় আমার মতো অনেকে যাত্রী আগ্রহ নিয়ে জিপগাড়িতে চলাচল করছেন। মোয়াজ্জেমের মতো আরও কয়েকজন যাত্রী বলেন, গাড়িটি সবদিক বিবেচনায় ‘ঝুঁকিমুক্ত’ ।

কাঠের জিপগাড়ি তৈরির কারিগর এনামুল হক ও ইমরানুল হক বলেন, গাড়িটি সোলার প্যানেলের পাশাপাশি বিদ্যুৎচালিত ব্যাটারি দিয়েও চালানো যায়। তবে ডিজেল ও কেরোসিনের প্রয়োজন হয় না। মাত্র দুই ইউনিট বিদ্যুতে ১২০ কিলোমিটার এবং সোলার প্যানেল চার্জে ১৮০ কিলোমিটার চালানো যায়।

পাকুন্দিয়া উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবদুল আজিজ আকন্দ জানান, সহোদর দুই ভাই যুব উন্নয়ন থেকে প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা নিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। আমাদের সবাইকে চমক দেখিয়েছেন।

এ ব্যাপারে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোজলিন শহীদ চৌধুরী জানান, এনামুল হক বুলবুল ও ইমরানুল হক ইমরান কাঠের জিপগাড়ি তৈরি নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে। তিনি তাদের সহযোগিতার আশ্বাসের পাশাপাশি কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ক্রেস্ট দিয়েছেন।