ঘুমের ঔষধ খাইয়ে প্রেমিকের সহযোগিতায় স্বামীকে ৬ টুকরো

মাহবুব জয়নুল মাহবুব জয়নুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ১, ২০২১ 828 views
শেয়ার করুন

 

এক যুবকের স্ত্রীর সঙ্গে পরকিয়ার জেরে মারধরের প্রতিশোধ নিতেই স্ত্রী ও তার প্রেমিক মিলে স্বামীকে হত্যার পর তার লাশ খন্ড-বিখন্ড করে গুম করেছে। ভিক্টিম সুমন মোল্লা (৩২) বাগের হাটের চিতলমারী গোলা বরননী এলাকার মো. জাফর মোল্লার ছেলে। তিনি মহানগরীর কাশিমপুরের সারদাগঞ্জ এলাকায় স্ব-স্ত্রীক ভাড়া থাকতেন। রোববার দুপুরে মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে উপ-কমিশনার জাকির হাসান ওই তথ্য জানান।

 

সংবাদ সম্মেলনে জানা যায়, সুমনের স্ত্রী আরিফা ও তনয় সরকারের মধ্যে পরকিয়া সম্পর্ক ছিল। এনিয়ে সুমন তনয় সরকারকে কয়েকবার মারধর করেছিল।

 

এর প্রতিশোধ নিতেই তারা সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরে ১৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্বামীকে দুধের সঙ্গে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে দেয়। সুমন ঘুমিয়ে পড়লে আরিফা ফোন করে তনয়কে ডেকে আনে। পরে বালিশ চাপা দিয়ে সুমনকে হত্যার পর তার লাশ বসত ঘরের ভেতর রেখে দেয়। পরদিন করাত দিয়ে সুমনের লাশের মাথা, দুই হাত ও দুই পা বিচ্ছিন্ন করে চাপাতি দিয়ে পেট কেটে দেয়। পরে হাত-পা বিহীন দেহটি কাঁথায় মুড়িয়ে জামাল উদ্দিনের বাড়ির পাশে উন্মুক্ত সেপটিক ট্যাঙ্কে/নদর্মায় ফেলে দেয় এবং দেহের অবশিষ্টাংশ (পাঁচটি খন্ড) পলিথিনে মুড়িয়ে চক্রবর্তী তেতুইবাড়ি এলাকার মোজা তৈরির কারখানার পাশে থাকা ময়লার ভাগাড়ে ফেলে রাখে।

 

গত ২১ এপ্রিল দুপুরে এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কাশিমপুরের সারদারগঞ্জের হাজী মার্কেট পুকুর পাড় এলাকার থেকে মাথা ও হাত-পা বিহীন অবস্থায় অজ্ঞাত হিসেবে সুমনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে পুলিশ লাশটি শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর অজ্ঞাত লাশ হিসেবে গাজীপুর সিটি কবরস্থানে দাফন করা হয়।

 

পরদিন ২২এপ্রিল অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে কাশিমপুর থানার এস আই মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরিফা ও তার প্রেমিক তনয় সরকারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদকালে তারা সুমনকে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে। পরে ১৬৪ধারায় জবানবন্দি দেয়ার জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।

 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার স্ত্রী দিনাজপুরের চিরির বন্দর থানার নারায়নপুর এলাকার মৃত আশরাফ আলীর মেয়ে মোসা. আরিফা (২৩) ও তার প্রেমিক ফরিদপুরের মধুখালী থানার নরকোনা এলাকার আদিত্য সরকারের ছেলে তন্ময় সরকার (২৫) পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তনয় সরকারও সারদাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন।