শুভ জন্মদিন বঙ্গকন্যা আপসানা বেগম এমপি

প্রকাশিত: ৬:০২ পূর্বাহ্ণ, মে ২৫, ২০২২ 385 views
শেয়ার করুন

” বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর ” বলে গেছেন আমাদের জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম ।

” লোকে বলে যারে নারী-পুরুষ,
আমি বলি তারে শুধুই মানুষ।
মানুষ ছিলো মোর মা, মানুষ ছিলো মোর বাপ।

জন্মেছি পরে মানুষ করেছে মোরে
দুজনেই তারা সমানে সমান।
মাঝ পথে মোর বাপ গিয়েছেন চলে
পর পারে তার মালিকের ডাকে,
মা আমার আগলে রেখেছেন মোরে
তার আঁচলে ঢেকে।

মা আমার যায়নি হাঁটে
মাঠেও যায়নি কাজে,
তব ক্লান্ত হয়েছে সে মোরে
মানুষ করতে গিয়ে, বেলা অবেলায়
অনাহারে অর্ধাহারে করেছেন দিনাতিপাত, মানুষ হইনি আমি।
মানুষ হইনি! তবে মানুষ হয়েছি,
শুধু আমি একা নই
সবকটা ভাই বোনে মিলে।

কোথায় নারী আর কোথায় পুরুষ
কই,
আমিতো কোনা ভেদাভেদ পাইনি
বাপ মায়ের মাঝে৷
মানুষ তারা দু’জনেই সমান
আর বিশ্বভরা আছে যত প্রাণ
তোমাদের ভাষায় তারা নারী পুরুষ
আমি বলি তারা সকলেই মানুষ “।

এইতো মাত্র কয়দিন আগে দেখা হয়েছিলো তর সাথে।টিক টিক করে চলা ঘড়ির কাঁটার পেছনে কতটা মিনিট ও কেটেছে তার সঙ্গে। কেউ একজন তাকে আগবাড়িয়ে একটা প্রশ্ন ও করেছিলেন।প্রশ্নের জবাবে সে বলে উঠলো আমি আপনাদের ছিলাম,আপনাদেরই আছি।আমি আগে যেমন ছিলাম এখনো ঠিক তেমনটাই আছি।দোয়া করবেন শুধু যেনো না বদলাই।

আমি তার কথাই বলছি।বাংলা ও বাঙ্গালীর অহংকার, হিজাবি বঙ্গকন্যা সাংসদ আপসানা বেগমের কথা বলছি।

” ইতিহাস মরে রক্ষা কর,আমি
না যেনো হই তুমার বলির পাঠা
তুমি যারে উত্তাল কর তুমার বুকে আবার
তারেই কর পাতাল তুমার গর্ভে।”

আমাদের সমাজের বহু মানুষ আছেন এখনো যারা ছেলেদের ছেলে আর মেয়েদের মেয়ে হিসেবে গণনা করেন।
তারা এখনো বুঝেন না স্রষ্টা মানুষকে নারী-পুরুষ দুটি আলাদা বৈশিষ্টে সৃষ্টি করেছেন আবার ক্ষেএ বিশেষে ইসলামে নারীকে উচ্চ সমমর্যাদা দিয়েছন।তবে আমি কেন তারে নারী পুরুষে ভেদাভেদ করতে যাব।

ইংল্যান্ডের জাতীয় রাজনীতির কথায় আসি।যদি আমি বিভেদ করে বলি বৃটেনে নারী রাজনীতির জয়জয়কার, তবে পুরুষেরা কোথায়।
আর তখন হয়তোবা বলতে হবে তারাও আছেন তবে সামনে নয়, ঐ পুরাতন জীর্ণ দালানের দেয়ালে গজা বটমূলের পেছনে।
বৃটিশ রাজনীতিতে বাঙ্গালী পুরুষদের অগ্রযাত্রা ততটা নয়,যতটানা নারীদের অগ্রযাত্রা হয়েছে।পুরুষেরা বাংলাদেশী মন মানষিকতা এবং দেশীও রাজনীতি নিয়ে যায় যায় বেলা।

বৃটিশ রাজনীতিতে বিচরণ করা কয়েকজন ছাড়া প্রায় সকল নারী রাজনৈতিকের জন্ম এবং বেড়েওঠা বৃটেনে।এখানকার জাতীয় রাজনীতিতে বঙ্গকন্যাদের বেশ দাপট বিরাজ করছে।এইবেলায় চারজনই নারী সাংসদ বৃটিশ জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন আমাদের।বৃটিশ জাতীয় সংসদে তারা সকলেই বিরোধী দলীয় সাংসদ।আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে এই সংখা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার বেশ সম্ভাবনা রয়েছে।বৃটেনের সকল রাজনৈতিক দলের ভেতরে রয়েছে বাঙ্গালীর অবাধ বিচরণ।

বর্তমান সাংসদদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ আপসানা বেগম।তবে আপসানার ভাবনা জগৎ অন্য সকলের থেকে আলাদা।সে সকল সময়ই সোচ্চার সকল জাতির সকল জাতীয় বিষয় নিয়ে।তার অগ্রণী ভূমিকা সকল সময় চোখে পড়ার মতন।অন্য কোনো বাঙ্গালী নেতা নেত্রীর তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়েনা।বৃটিশ সংসদে আরো বাঙ্গালী সাংসদ আছেন।
সকল জাতির সকল মানুষের সকল বিষয়ে সকল সারিতে আপসানার দাড়িয়ে থাকা সত্যি প্রসংশার দাবি রাখে।

বিশ্ব বিরাজিত সকল জাতির মধ্যে একটি মাত্র জাতি হচ্ছে বাঙালী,যাদের আবেগ আছে,ভালোবাসা আছে, যাদের মা মাতৃভাষা ও মাতৃভূমির প্রতি রয়েছে অটুট প্রেমের বন্ধন।সেই সাহসী জাতি হচ্ছে বাঙ্গালী,যারা বুকের তাজা রক্ত দিতে পিছুপা হয়না।তারা সন্তানের নাম মির জাফর রাখেনা।সেই বাঙ্গালীর নেতা হওয়াও চাই তেমন ধাঁচের মানুষের।যার বুকে সৎ সাহস আছে।বুক ধড়পর করে না,হাত পা কাপেনা এমন।

আপসানা বেগম এমপি

বৃটিশ সাংসদ আপসানার বাবা ছিলেন একজন বাঙ্গালী।তিনিও ছিলেন বৃটেনে বাঙ্গালী সমাজের প্রথম সারিতে থাকা নেতাদের একজন।তিনি ছিলেন টাওয়ার হেমলেট কাউন্সিলের কাউন্সিলর।এমনি এক রাজনৈতিক বর্ণাঢ্য কুলীন পরিবারে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা আপসানার। বাবার হাত ধরে রাজনীতির পথে হাঁটা শুরু করেছিলেন তিনি।আজ তার সে পথ শত কাটায় কণ্টকিত হলেও শক্ত ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি।

বৃটিশ সংসদের বিরোধি দলীয় সাংসদ আপসানার জন্মদিন আজ। তার জন্মদিনে অফুরান ভালোবাসা ও শুভকামনা।

তার আগামীর দিনগুলো হউক সুন্দর।দিনগুলো কাটুক সুখের ভেলায় চড়ে অবিরাম অন্তহীন পথে।তার জীবন আকাশে ভাসুক সাদা মেঘের ভেলা।ডানা মেলে উড়ে যাক সাদা বকের ঝাঁক।

হে মহীয়সী তুমার জন্মদিনে জোনাকি ফোটা রাতের চাঁদ,জোৎছনা ভরা রাত,তারা ভরা আকাশ,ভোরের সূর্যোদয়,দোবরা ঘাসে জমে উঠা শরতের শিশির বিন্দু,পদ্মবিলের জলে খেলা করা জলের কিরণ,পদ্ম শালিক শাপলা ফুলে সাপ ব্যাঙ আর ঘাস ফড়িংযের মেলা,ধুধু সবুজ মাঠে দূপুরের খাঁ খাঁ রোদে চরা গাংচিল সকলি শঙ্খচিল সকলি,তুমায় দিলাম।তুমার নগ্ন পায়ে কালিমা ছড়ানো আঁধার মাড়িয়ে ভোরের সোনালী আলোটুকু ছড়াবে এই টুকু আশা শুধু তুমার কাছে চেয়ে নিলাম আমার জাতির জন্য।

শুভ জন্মদিন।

লেখক
এস এম শামসুর সুমেল
সাংবাদিক
সাংস্কৃতি কর্মী
লন্ডন
ইমেইল ঃ shamsursumel@yahoo.com