আজ রুটি পড়ে থাকলেও, বেঁচে নেই সেই অভিবাসী শ্রমিকেরা

নিউজ ডেস্ক নিউজ ডেস্ক

বায়ান্ন টিভি

প্রকাশিত: ৫:২১ অপরাহ্ণ, মে ১০, ২০২০ 921 views
শেয়ার করুন

৮ই মে, শুক্রবার সকালে মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গবাদ শহরে ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারায় ১৬ জন অভিবাসী কর্মী। তারা লকডাউনের কারণে মহারাষ্ট্র থেকে মধ্যপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলে নিজ-নিজ ঘরে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। যেই রুটি ও রোজির কারণে গ্রাম ছেড়ে এতদূর এসেছিলেন, সেই রুটি আজ ট্র্যাকে পড়ে থাকলেও, বেঁচে নেই ২০ জনের মধ্যে ১৬ জন অভাগা অভিবাসী শ্রমিক।

গ্রামে ফিরে যাওয়ার ট্রেনটি ধরতে ১৫০ কি.মি. পথ পাড়ি দিতে হবে। তাই রেলপথ ধরে হাঁটা শুরু করেন এবং ৪৫ কি.মি. পথ পাড়ি দেয়া শেষে ক্লান্তির কারণে সেখানে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর ৫.১৫ টায় জলনা ও আওরঙ্গাবাদের মাঝামাঝি চলমান একটি মালবাহী ট্রেনের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারায়।

দুর্ঘটনায় একজন আহত হয়েছেন এবং তাকে সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া চারজনকে পুলিশ থেকে কাউন্সেলিং দেয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

শ্রমিক এবং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকলেই জলনার একটি লোহার কারখানায় কাজ করতেন এবং করোনাভাইরাস লকডাউনের মাঝে মধ্যপ্রদেশে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন।

পুলিশ কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন। তাই ট্রেন ধরতে প্রায় ১৭০ কি.মি. দূরে জলনা থেকে ভুভসাল পায়ে হেঁটে যাচ্ছিল। প্রায় ৪৫ কি.মি. দূরত্ব কাটিয়ে বিশ্রাম নিতে তারা ট্র্যাকের কাছে এসে থামে।

রেল‌ওয়ে থেকে জানানো হয়েছে যে ড্রাইভার ঘুমন্ত অভিবাসীদের সতর্ক করার এবং ট্রেন থামানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু ব্যর্থ হয়। দুর্ঘটনার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রেল মন্ত্রণালয়ের এক টুইট বার্তায় বলা হয়েছে, “ভোরের দিকে কিছু শ্রমিকদের ট্র্যাকে মাঝে দেখার পরে, মালবাহী ট্রেনটির লোকো পাইলট, ট্রেনটি থামানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। শ্রমিকদের সাথে বদনাপুর ও করমাদ স্টেশনের পারভানী-মনমাদ বিভাগে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।”

লকডাউনের কারণে আটকা পড়া অভিবাসী শ্রমিক এবং অন্যদের জন্য প্রয়োজনীয় ই-পাসগুলি সমস্যার কারণ হয়ে পড়েছে কারণ অনলাইন পোর্টালটি কোনও প্রতিক্রিয়া সরবরাহ করে না, আবার কিছু কিছু সময় ভুল পাস দেয়, এমন একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

কেন্দ্রীয় সরকার গত সপ্তাহে অভিবাসীদের জন্য “শ্রমিক” বিশেষ ট্রেন চালু করতে সম্মতি ব্যক্ত করেছিল কিছু লোকের জন্য যারা লকডাউনের ৪০ দিন পর কোন জরুরি কারণে বাড়ি ফিরতে চায়। তবে ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে নানা সমস্যাগুলির কারণে অনেকে নিজেরাই হেঁটে নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়া শুরু করেছেন।

এ নিয়ে সরকারের কাছে সমস্যাটি সমাধানের আবেদন জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।