এ্যাড. আব্দুস সালামের নামে রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্স’র নামকরণ
আমানউল্লাহ আমান আমানউল্লাহ আমান
রাজশাহী প্রতিনিধি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, উত্তরবঙ্গে টেনিস বিভাগের অগ্রনায়ক প্রয়াত এ্যাডভোকেট আব্দুস সালামের নামে রাজশাহী টেনিস কমপ্লেক্সের নামকরণ করা হয়েছে। বুধবার (২৬ আগস্ট) রাতে টেনিস কমপ্লেক্সের কার্যনিবাহী কমিটির এক সভায় এমনটা চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়।
এসময় টেনিস কমপ্লেক্সের সভাপতি গোলাম সাব্বির সাত্তার তপু, সাধারণ সম্পাদক এহসানুল হুদা দুলুসহ সংশ্লিষ্ট আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে আব্দুস সালামের নামে নামকরণের দাবি নিয়ে শহীদ পরিবারের সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধারা জনমত গঠন করেন। জনপ্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিকসহ সচেতন মহল এর পক্ষে মত ব্যক্ত করেন।
এদিকে ১৯৮১ সালে রাজশাহীতে আব্দুস সালামের হাতে গড়ে ওঠে এ টেনিস কমপ্লেক্স। ২০০৪ সালে স্বাধীনতা বিরোধী আইয়ুব খানের এনএসএফ’র পেটোয়া বাহিনীর অন্যতম সদস্য রাজাকার জাফর ইমামের মৃত্যুর পর চারদলীয় জোট সরকার ২০০৫ সালে জাফর ইমাম টেনিস কমপ্লেক্স নামকরণ করে। যেটি কখনো প্রত্যাশা করেননি শহীদ পরিবারের সদস্যরা। লম্বা সময় ধরে তীব্র প্রতিবাদের পর অবশেষে গত ২৩ আগস্ট রাজাকার জাফর ইমামের নাম সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। সেসময় তার বড় ছেলে শহীদ আবু সেলিম শহিদুজ্জামান বাবু বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষে এবং কনিষ্ঠ ছেলে শহীদ ওয়াসিমুজ্জামান ওয়াসিম রাজশাহী কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে অধ্যয়নরত ছিল। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কাল রাতে পাক হানাদার বাহিনী তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে না পেয়ে তাঁর দুই মেধাবী সন্তানকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে।
একই রাতে পাক-বাহিনী তার ছোট ভাই তৎকালীন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামানের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। সেখানেও তাদেরকে না পেয়ে তার আরেক ছোট ভাই শহীদ হাসানুজ্জামান খোকা, তার ভগ্নীপতি শিল্প ব্যাংকের রিসার্চ অফিসার শহীদ সাইদুর রহমান মিনা, আব্দুস সালামের ভাগ্নী-জামাই তৎকালীন এম.এন.এ এবং জেলা আওয়ামী লীগ নেতা শহীদ নজমুল হককে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ফলে মহান এ নেতার সম্মানে তার নামেই টেনিস কমপেক্সের নাম রাখার দাবির প্রেক্ষিতে এমনটা নামকরণ করা হলো।