আজকের শিশুঃপ্রযুক্তির ক্রীতদাস

প্রকাশিত: ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৪, ২০২০ 556 views
শেয়ার করুন
“আজ যে শিশু পৃথিবীর আলোয় এসেছে, আমরা তার তরে একটি সাজানো বাগান চাই”। পৃথিবীর আলোয় প্রতিটি শিশুই আসে সত্য ও সুন্দর জীবনের প্রত্যাশায়। সুন্দর জীবন গঠনের পথ সৃষ্টি করার মাধ্যমেই সাজানো যাবে কোমলমতি শিশুর জীবন।  শিশুদের সাজানো বাগানেই গড়ে ওঠে লাল সবুজের বাংলাদেশ। শিশুরা বেড়ে ওঠে যার যার পরিবেশ ও  পরিবারে। শৈশব হতেই দেখা যায় অধিকাংশ শিশুরা প্রযুক্তিপণ্যের প্রতি অধিকমাত্রায় আসক্ত। মা-বাবা শিশুদের ভাত খাওয়াতে, মান ভাঙাতে কিংবা যখন তারা ব্যস্ত থাকেন শিশুদেরকে বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকেন। মা-বাবার কর্মব্যস্ততা কিংবা শিশুর মান অভিমানের সমাধান হিসেবে যখন প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহারের সুযোগ পায় শিশুরা। একসময় দেখা যায় আজকের শিশুরাই সময়স্রোতে হয়ে ওঠে প্রযুক্তির ক্রীতদাস।
বর্তমান সময় তথ্যপ্রযুক্তি আর গ্লোবাল ভিলেজের যুগ। আমাদের জীবনের অন্যতম অনুষঙ্গ হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের প্রযুক্তিপণ্য। প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহারের কল্যাণে বর্তমান প্রজন্মের মানুষজনের নিত্য জীবনযাপন হয়ে ওঠেছে সহজ কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে এসব প্রযুক্তিপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারে নানা ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে আমাদের সমাজ জীবনে। শিশুরা প্রযুক্তিপণ্যে (স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, ট্যাব ইত্যাদি ) সবচেয়ে বেশি আসক্ত। শিশুরা যে প্রযুক্তিপণ্যে সবথেকে বেশি আসক্ত এর পিছনে নানাবিধ কারণে জড়িয়ে আছে। কেঁচো খুঁড়তে গেলে যেমন সাপ বের হয়ে আসে তেমন করে বর্তমান সময়ের শিশুরা কেন প্রযুক্তির ক্রীতদাস হয়ে ওঠেছে তার অনেকগুলো কারণ বের করা যাবে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- খেলাধুলা করার মাঠ ও পর্যাপ্ত সময়-সুযোগ না থাকা, সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের সময় না দেয়া কেননা বাবা-মায়ের দুজনেই ব্যস্ত কর্মক্ষেত্রে কিংবা ব্যবসায়িক কাজ-কর্মে।  বিগত কয়েকবছর যাবত দেখা যায় অধিকাংশ পরিবারের যেসব শিশু খাবার খেতে চায় না তাদেরকে মোবাইল কিংবা কম্পিউটারসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবহারের মাধ্যমে গান কার্টুন দেখিয়ে খাবার খাওয়ানোর পর্বটা শেষ করেন। শৈশবের সময় যে অভ্যাসটি করা হয় সেটি আরো স্থায়ীরূপ লাভ করে যখন শিশুরা আরেকটু বড় হয়।
অভিভাবকগণ দারুণ খুশি হন যে তাদের সন্তানেরা খাবার খাচ্ছে, একটু আধটু মোবাইল ব্যবহার করলে তেমন ক্ষতি হচ্ছে না বরং শিশুরা খাবার খেতে আর কোন জ্বালা যন্ত্রনা করছেনা। এইভাবেই বাংলাদেশের কোমলমতি শিশুর হাতে ওঠে নামিদামি স্মার্টফোনসহ নানা ধরনের নতুন নতুন স্মার্ট গ্যাজেট। শিশুদের মোবাইল প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহারে অভিভাবকদের আনন্দের শেষসীমা যেন নেই; সেই আনন্দের সাথে যোগ দিয়েছে তাদের অর্থ বৈভব আভিজাত্য। কোমলমতি শিশুদের অভিভাবকরা আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলেন যে এত অল্প বয়স হতেই তাদের সন্তানেরা সব শিখে নিয়েছে অথচ তারা এখনও অনেক কিছুই জানেন না এই হলো প্রযুক্তি দাসের নেপথ্য কথা। “বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ কেড়ে নিয়েছে আবেগ”। বিজ্ঞান আমাদের বেগ দিয়েছে ঠিকই কিন্তু আবেগ কেড়ে নেয়নি । আমি এখানে বহুল প্রচলিত কথাটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বললাম এই জন্যে যে আবেগের বশীভূত হয়ে অধিকাংশ বাবা-মা খেয়ালে বেখেয়ালে প্রযুক্তির নানা ধরনের পণ্য তুলে দিচ্ছেন কোমলমতি শিশুদের হাতে। আমরা সবাই কমবেশি জানি চিকিৎসা বিজ্ঞান সম্পর্কে।বিজ্ঞান বলে শিশুদের হাতে যেকোনো ধরনের প্রযুক্তিপণ্য দেয়া অনুচিত।
শিশুরা যে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় এর অন্যতম কারণ প্রযুক্তিপণ্যের ব্যবহার। নাক,কান ও গলা রোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন “মোবাইল ফোন শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মোবাইল ফোন থেকে নির্গত রশ্নি শিশুদের দৃষ্টিশক্তির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেসব শিশু দৈনিক ৫ থেকে ৬ ঘন্টা মোবাইল ফোনে ভিডিও গেম খেলে খুব অল্প বয়সে তারা চোখের সমস্যায় পড়বে। সেদিন খুব বেশি দূরে নয় যেদিন মোবাইল ফোনকে সিগারেটের চেয়েও বেশি ক্ষতিকর হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।” বিশ্বের আধুনিক উন্নত রাষ্ট্রে প্রযুক্তিপণ্যের বিপুল ব্যবহার ডেকে এনেছে অভিশাপ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক গবেষণায় দেখা যায় ১১ বছর বয়সী শিশুদের প্রতি ১০০ জনে ৭০জন পর্যন্ত নিয়মিত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।মোবাইল ফোনের  ব্যালেন্স যত বেড়েছে ততই বেড়েছে মানুষের মাঝে দূরত্ব। মানুষ দিন দিন একা হয়ে গিয়েছে, নিজের মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে। We are social ও Hut suit নামক প্রতিষ্ঠান গবেষণায় ফুটে উঠেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশসমূহের চিত্র।এদের গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় “ভারত ও এর আশেপাশের দেশগুলোতে মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রবণতা সবচাইতে বেশি।
চীনের মতো প্রযুক্তিবান্ধব দেশে শিশুরা দৈনিক দুই ঘন্টা মোবাইল ব্যবহার করে। যেখানে ভারতের আশেপাশের দেশগুলোতে শিশুরা গড়ে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। ” শিশুরা কেন প্রযুক্তির এত ভক্ত হয়ে ওঠেছে ? আমরা অল্প বয়সী শিশুদের হাতে প্রযুক্তিপণ্য তুলে দিয়ে তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছি নিজেদের সাময়িক লাভের জন্য। শিশুদের কোমল মাটির মতো মন। এসময় তারা যা দেখে তাই শিখে এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয় । শিশুর চিন্তার জগতে প্রভাব ফেলে দারুণভাবে। একেক শিশুর রয়েছে একেক ধরনের চিন্তাশক্তি। নিজ হাতেই শিশুদের ধ্বংস করার পথে নামিয়ে দিছি।  শিশুদের অতিরিক্ত প্রযুক্তি আসক্তির কারণে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে সামাজিক যোগাযোগ দক্ষতা অর্জন করতে পারছেনা। শহরাঞ্চল কিংবা গ্রামাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় এখন শিশুরা প্রযুক্তির ক্রীতদাস। আমরা প্রযুক্তিপণ্য কষ্টের টাকায় ক্রয় করি কিন্তু এখান দেখা যাচ্ছে প্রযুক্তিই শিশুদের ক্রয় করে নিচ্ছে।
শহরাঞ্চলে শিশুরা মজে থাকে ইন্টারনেট, অনলাইন গেমসে আর গ্রামের শিশুরা ইন্টারনেট ব্যবহারে একটু কমই সুযোগ পায় যার ফলে তারা মোবাইল অনবরত ঘন্টার পর ঘন্টা গান শুনে,নাটক ছবি দেখে, কার্টুন কিংবা এনিমেশন দেখে। প্রযুক্তির সহজলভ্যতা আর বিজ্ঞানের আশীর্বাদই যেন এখন অভিশাপ হচ্ছে কোমলমতি শিশুদের জীবনে। বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের আলাদা একটা জগত তৈরি হচ্ছে প্রযুক্তিপণ্যের ক্রীতদাস হয়ে শিশুরা সমাজে থেকেও তাদের মাঝে দেখা যায় একঘেয়েমি, কোন কিছুই ভাল না লাগা এবং সামাজিক বন্ধন সম্পর্কে একদম ভিন্নমুখী।আজকের শিশু আগামীর কর্ণধার।
শিশুদের কাজ হচ্ছে খেলাধুলা করা আর আনন্দের সাথে পড়াশোনা করা। খেলাধুলা আর আনন্দময়পড়ালেখার  সুবর্ণ সুযোগে শিশুদের ইতিবাচক বিকাশ ঘটে, সৃজনশীলতার বহিঃপ্রকাশ হবে, শিশুর কল্পনা শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং সমাজে মানুষের সাথে কাজ করার দক্ষতা অর্জন করবে।  আমাদের শিশুদের সুস্থ বিকাশের সুযোগ করে দিতে হবে। বাবা-মায়ের কর্মব্যস্ততা যেন শিশুদের প্রযুক্তিপণ্যের ক্রীতদাস না বানায়। আমাদের দেশের সিংহভাগ মা-বাবা কিংবা কাছের আত্মীয় স্বজনরাই শিশুদের হাতে তুলে দেন দামী দামী প্রযুক্তিপণ্য। আমাদের দেশের অভিভাবকদের সময় নেই সন্তানদের সময় দেয়ার। এবার বিশ্বের নামি-দামি সব ব্যক্তিদের দিকে দৃষ্টিপাত করা যাক। শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার স্টিভ জবস একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন “আমার সন্তানেরা কখনো আইপ্যাড ব্যবহার করেনি। কতটুকু প্রযুক্তি তারা ব্যবহার করবে সেই মাত্রা আমি ঠিক করে দিয়েছি।”( নিউইয়র্ক টাইমস সেপ্টম্বর 2014) তথ্যপ্রযুক্তির যুগে সবথেকে বড় আবিষ্কার হলো কম্পিউটার। বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার জগতে একচ্ছত্র অধিপতি মাইক্রোসফট।
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তার সন্তানদের বয়স ১৪ হওয়ার আগে মোবাইল কিনে দেননি, এমনকি তিনি নিয়ম করে দিয়েছিলেন ৪৫ মিনিটের বেশি কম্পিউটার ব্যবহার করা যাবে না এবং খাবার টেবিলে মোবাইল ফোন আনা নিষেধ। (দ্যা ইন্ডিপেনডেন্ট, ২১ এপ্রিল ২০১৭)। আমাদের দেশের কথা ভেবে দেখুন সবার হাতেই মোবাইল,ট্যাবসহ নানা প্রযুক্তিপণ্য।বিছানা থেকে শুরু করে খাবার টেবিল ও বাদ যায়না। প্রযুক্তিপণ্যের দাস হয়ে মানুষ হারিয়ে ফেলেছে মানসিক সুস্থতা। আমাদের অভিভাবক মহলে এখন প্রযুক্তি প্রীতির আকর্ষণ। কোমলমতি শিশুরা যদি মোবাইলফোনসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার করে তখন তারা গর্ব করে বলেন আমরা তো ছোট্ট বয়সে এইসব ব্যবহার করতে জানতাম না আর এই বয়সে বাচ্চারা কত দক্ষ। ইউনিসেফ রিপোর্ট জানুয়ারি, ২০১৬ তে বলা হয় ” ভার্চুয়াল ভাইরাসের সবচেয়ে বড় শিকার শিশুরা।
  • বর্তমান বিশ্বে প্রতি তিনজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে একজন শিশু।  ২০১৬ সাল পেরিয়ে এখন চলছে ২০২০…. আপনারাই বুঝে নিন বর্তমানে কতজন শিশু প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার করছে।প্রযুক্তির ব্যবহারে আমার কোনো বিরোধিতা নেই কিন্তু আমাদের দেশের কোমলমতি শিশুরা যেভাবে প্রযুক্তি পণ্যের প্রতি আসক্ত যেন তারা প্রযুক্তিকে ক্রয় করেনি বরং প্রযুক্তিপণ্য তাদের ক্রয় করে নিয়েছে।পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের গবেষণা অনুযায়ী যেসব শিশুরা কম্পিউটার, টিভি ভিডিও শো নিয়ে দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকে তারা একসহয় হয়ে পড়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এবং হীনমন্যতার শিকার হয়।এছাড়া আমেরিকার কলেজ অব পেডিয়াট্রিশিয়ানস এল ভাষ্যমতে “শিশুদের অনিদ্রা, মেদস্থুলতা, আগ্রাসী মনোভাব, আত্মবিশ্বাসহীনতার অন্যতম কারণ স্ক্রীন আসক্তি। (দ্যা গার্ডিয়ান, ২৬ জানুয়ারি,২০১৮)। বর্তমান সময়ে দেশের অধিকাংশ শিশুরা প্রযুক্তিপণ্য ছাড়া কিছুই বুঝেনা। একদিকে বাবা-মায়ের কর্মব্যস্ততা অন্যদিকে নেই খেলার মুক্ত মাঠ। নগরায়ন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ভূমির পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে, শিশুদের খেলাধুলার জায়গা বলতে গেলে এখন কমই আছে। যার কারণে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিতে আসক্তি।  প্রযুক্তির আসক্তিতে বিরাট ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। এদের চিন্তা শক্তির বিকাশ ক্ষমতার মাত্রা হ্রাস পেয়েছে।
শিশুরা হারিয়ে ফেলেছে সুন্দর জীবন, শিশুসূলভ সরলতা তাদের জীবনজুড়ে ভর করেছে প্রযুক্তির দাসত্ববৃত্তি। প্রথিতযশা মনোচিকিৎসক আনোয়ারা সৈয়দ হক বলেন “আমাদের জীবন এখন হয়ে পড়েছে প্রযুক্তিনির্ভর। সবাই মিলে ঢুকে পড়েছি উৎকট হাস্যকর বাস্তবতার যুগে।  ইদানিং সামাজিক অস্থিরতা ও অসহিষ্ণুতার একটি বড় কারণ ফেসবুক।ব্যক্তিগত সম্পর্কের জটিলতা ও টানপোড়েনের পূরণের জন্যেও এটিও দায়ি। বুঝে না বুঝে আমরা প্রযুক্তির অপরিণামদর্শী ব্যবহার করছি দিনের পর দিন। তাতে বাড়ছে প্রতারণা, অবিশ্বাস, প্রতিহিংসা। আমাদের স্বাধীনতা বেড়েছে কিন্তু সচেতনতা বাড়েনি। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করব ঠিকই তবে তা যেন হয় যতটুকু প্রয়োজন কেবল ততটুকুই।” জ্ঞানী মানুষের জ্ঞানগর্ভ কথা। এখন প্রশ্ন হলো দেশের শিক্ষিত মহলে এসব জ্ঞানের চর্চা কি করে ?  প্রযুক্তির কল্যাণ-অকল্যাণ দুটোই আছে, এই দুটোর মধ্যে অদৃশ্য প্রতিযোগিতা চলে। এখন অল্প সময়ে অল্প খরচে দেশে বিদেশে যোগাযোগ করা যাচ্ছে, কথা বলা যাচ্ছে, প্রিয়জনের মুখ দেখা যাচ্ছে এগুলো সহ আরো কতকিছু সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির কল্যাণে ।
বিপরীত দৃশ্যপটে অকল্যাণ তখনই হয় যখন কোন কিছু তার নির্দিষ্ট সীমারেখা অতিক্রম করা হয়।  ২০১৭ সালে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল বলেন ” মস্তিককে তোমরা কিভাবে ব্যবহার করবে তার উপর নির্ভর করে তোমার এবং দেশ ও  পৃথিবীর ভবিষ্যত।” মাদকাসক্ত একজন মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে মাদক না পেলে অস্থির হয়ে যায় তার মস্তিকে বিশেষ ধরনের কেমিক্যাল নির্গত হতে শুরু করে। বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আসক্ত একজন মানুষ নির্দিষ্ট সময়ে তার সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সময় অপচয় না করতে পারলে সে অস্থির হয়ে যায় তার মস্তিকেও বিশেষ ধরণের কেমিকাল নির্গত শুরু হয়। সহজ ভাষায় বলা যায় সত্তিকারের মাদকাসক্তির সাথে সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আসক্তির কোনো পার্থক্য নেই। আপদকালীন মহাসংকটের এরূপ পরিস্থিতিতে সর্বত্র মহাশ্মশানের মহা নিরবতা।প্রযুক্তি আমাদের জীবন যাত্রার মান বদলে দিয়েছে সম্পূর্ণরূপে। করোনাকালে প্রযুক্তির ব্যবহার চোখে পড়ার মতো।প্রযুক্তির ক্রীতদাস নয় বরং প্রযুক্তির যথাযথ ব্যবহার করে দেশের উন্নয়ন ভবিষ্যত সেনানায়ক হয়ে বেড়ে ওঠুক প্রজন্মের কান্ডারীরা। প্রযুক্তির যথাযথ ও যৌক্তিক ব্যবহারেই এগিয়ে চলুক আমাদের দেশ ও জাতি শান্তি, সম্প্রীতি,উন্নয়নের পথে।