বঙ্গমাতা চিরায়ত বাংলার প্রতিচ্ছবি এবং বাঙ্গালির প্রেরণার উৎস

প্রকাশিত: ১০:০২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২০ 602 views
শেয়ার করুন

 

‘বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৮ আগস্ট মালয়েশিয়াস্হ বাংলাদেশ হাইকমিশন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ দিবস উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে ডিফেন্স এডভাইজার কমোডর মুশতাক আহমেদ এবং ডেপুটি হাইকমিশনার ওয়াহিদা আহমেদ।

অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বঙ্গমাতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এ দিনের তাৎপর্য ও গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিব বঙ্গবন্ধুর সমগ্র জীবনে প্রেরণা ও সাহস দিয়েছেন। তিনি একদিকে সংসার ও সন্তানদের লালন-পালন করেছেন অন্যদিকে স্বাধীনতা ও মুক্তির সংগ্রামে প্রেরণা দিয়েছেন। স্বাধীনতার পর নির্যাতিত অসহায় নারীদের পুনর্বাসন করেছেন। তিনি চিরায়ত বাংলার প্রতিচ্ছবি এবং বাঙ্গালির প্রেরণার উৎস।

 

দেশের স্বার্থে বঙ্গবন্ধুকে অসংখ্যবার কারাবরণ করতে হয়েছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব সেই কঠিন দিনগুলো ধৈর্য ও দৃঢ়তার সাথে মোকাবিলা করেছেন। সেই উত্তাল দিনগুলোতে স্বামীর মুক্তির জন্য মামলা পরিচালনা এবং দলের সাংগঠনিক কাজে পরামর্শ ও সহযোগিতা দান সবই তাঁকে করতে হয়েছে। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অনুপ্রেরণায় বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছেন যা ছিল স্বাধীনতার ডাক এবং বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ। দেশ ও জাতির জন্য অপরিসীম ত্যাগ, সহমর্মিতা ও সহযোগিতা তাকে বঙ্গমাতায় অভিষিক্ত করেছে।

হাইকমিশনার বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা, নিজে বন্দী এবং দুই ছেলে যুদ্ধের ময়দানে এমন কঠোর পরিস্থিতি তিনি মোকাবিলা করেছেন। আমাদের মুক্তির সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, এমন মহিয়সী নারীকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিজ বাসভবনে ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হতে হয়েছে যা জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলতুন নেসা মুজিবের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে এবং জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার কাজ করছে। বিশেষ করে বর্তমানে নারীদের জীবন মানের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে যা বিশ্বের স্বীকৃত লাভ করেছে। বঙ্গমাতার জীবন ও কর্মের অনুপ্রেরণায় উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদেরকে নি:স্বার্থ ভাবে আত্মনিয়োগ করতে হবে তবেই তাঁকে স্মরণ করা ও শ্রদ্ধা জানানো স্বার্থক হবে। তিনি ইতিহাসের সঠিক চর্চার উপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানে আরো আলোচনা করেন লেবার কাউন্সেলর মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেসা মুজিবের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত, ১৫ আগস্টের সকল শহীদ এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত করা হয়। বঙ্গমাতার জীবন সম্পর্কিত প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন লেবার কাউন্সলের (শ্রম-২) মো: হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল। করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে এসওপি মেনে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।