সিলেটের উপশহরে দিনে-রাতে সমান তালে কামড়াচ্ছে মশা আতংকে নগরবাসী

প্রকাশিত: ১২:৪২ অপরাহ্ণ, মার্চ ৭, ২০২১ 763 views
শেয়ার করুন

 

সিলেট নগরে বেড়েছে মশার উৎপাত। দিনে-রাতে বাসায় কিংবা খোলা জায়গায় সমান তালে কামড়াচ্ছে মশা। বিশেষ করে খাল-নালার আশপাশে যাদের আবাসস্থল; তাদের বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে । পাশাপাশি নগরের বিভিন্ন এলাকার মানুষ মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই বছর আগে মশার উৎপাতে ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সিলেট সিটি করপোরেশন থেকে মশার আবাসস্থল ধ্বংসের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আপাতত ওষুধ ছিটিয়ে মশার উৎপাত কমানোর চেষ্টা করছে সিসিক।

নগরবাসীর অভিযোগ, সিলেট নগরে হঠাৎ বেড়েছে মশার উৎপাত। সিটি করপোরেশন ওষুধ ছিটালেও মশার উপদ্রব কমাতে স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ওষুধ দিলে সাময়িক মশার উৎপাত কমে, ওষুধের কার্যকারিতা কমে গেলে আবারও উপদ্রব বেড়ে যায়।

তবে মশা নির্মূলে চলতি মাসের শুরু থেকে ওষুধ ছিটানোর উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ।

সিসিক জানায়, আপাতত নগরের পাঁচ ওয়ার্ডে একসঙ্গে ওষুধ ছিটানো হবে। এরপর অন্য পাঁচ ওয়ার্ডে একসঙ্গে ওষুধ ছিটানো হবে। এভাবে সিলেট সিটি করপোরেশনের আওতায় সকল ওয়ার্ডে মশা নির্মূল কার্যক্রম চলবে। আপাতত সিলেট নগরে তিন হাজার লিটার মশার ওষুধ ছিটানো হবে। বর্তমানে ১২, ১৩, ৭, ১৭ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে মশার ওষুধ ছিটানোর কাজ চলছে।

সিলেট নগরের উপশহর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, বর্তমানে মশা অনেক বেড়েছে। রাতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দিনেরাতে ২৪ ঘণ্টা দরজা-জানালা বন্ধ রেখেও কাজ হচ্ছে না। এখন পর্যন্ত মশার ওষুধ ছিটাতে আমরা দেখিনি।

মশার উৎপাত কমাতে পরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন:  আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা,আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন সিলেট বিভাগীয় -সভাপতি, রকিব আল- মাহমুদ।

 

তিনি বলেন, বিশেষ করে এ সময়ে মশার উৎপাত বেশিই বাড়ে। যেহেতু প্রতি বছর একই সময়ে মশার উৎপাত বাড়ে; এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষকে নির্দিষ্ট করে একটি তালিকা তৈরি করে পরিকল্পনা মাফিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী । পাশাপাশি মশার বংশবিস্তার নির্মূলেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
শহরের বাসা বাড়ির প্রতিদিনের ময়লা আবর্জনা স্তূপ হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মোড়ে, যদিও সিসিক এর ময়লাবাহী গাড়ী এসে বাসা বাড়ির সামনে থেকে ময়লা গুলো তুলে নেয়।

কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ড্রেনে চলে যায়, হাটা চলার সময়ে অনেকে বোতল, কোমল পানীয়,জুস,চিপস, চানাচুর ইত্যাদির মাধ্যমে ড্রেনে ময়লার স্তূপের সূষ্টি হয়। যে কারণে ড্রেন, নালা-নর্দমার ময়লা-আবর্জনাগুলোর কারণে পানি চলাচলের বাধা হয়ে। এতে করেই শহরের অলিগলিতে অসচেতনতার কারণেই আজ এই মশার উপদ্রব এর কারণ। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আপনার উচিৎ আপনার বাসা বাড়ির পরিস্কার পরিছন্নতার দায়িত্ব পালন করা। তাহলে সিলেটকে একটি “স্বপ্নের ক্লিন সিটি” হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবো আমরা।

এ ব্যাপারে সিলেট, সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে পাঁচ ওয়ার্ডের ড্রেন, নালা-নর্দমার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে। রোববার থেকে মশক নিধন অভিযান শুরু হবে। এরপর চলতি মাসেই ওষুধ ছিটানোর কাজ শুরু হবে।

শুধু মশার ওষুধ ছিটালেই হবে না জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, একই সঙ্গে নগরের খাল-নালা পরিষ্কার করতে হবে। কারণ একটি মশা পাঁচদিন বাঁচে; পাঁচদিনে মশা প্রচুর পরিমাণে বংশ বৃদ্ধি করে। সেজন্য নগর পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এতে করে মশার বংশ বৃদ্ধি রোধ হবে।