সৎ মানুষের ১০ গুণ

প্রকাশিত: ২:১১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২০ 563 views
শেয়ার করুন

বিশ্বের প্রতিটি ধর্মগ্রন্থই মানুষকে সৎ ও সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার জন্য উপদেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ সব জেনেও অনেকেই অসৎ ও অন্যায় পথে পা বাড়ায়। আর তাতে ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার প্রবণতা থেকেও ক্রমে দূরে সরে যায় সেই মানুষ। মানুষ জন্মগতভাবে কখনই খারাপ থাকে না। জন্মের পর পরিবেশগত কারণে বা অন্য কোনো বাস্তব কারণে খারাপের পথে অগ্রসর হয়। তবু সব মানুষের ভেতরেই একটি পবিত্র সত্ত্বা রয়েছে। পৃথিবীটিতে অনেক খারাপ কাজের মাঝে নিজেকে ভালো রাখাও অনেক কঠিন একটি কাজ। একজন সৎ, নিষ্ঠাবান হওয়া জন্য আপনি যদি কটুর পরিশ্রম করেন আর মনের মধ্যে প্রবল আত্মবিশ্বাস থাকে। যে আমার যতই কঠিন সময় আসুক না কেন জীবনে,আমায় সৎ থাকতেই হবে।

১. ইচ্ছা : ‘ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়’।
ভালো মানুষ হয়ে ওঠার জন্য সবার প্রথমে যে বিষয়টি থাকতে হবে সেটি হলো ইচ্ছাশক্তি। যত খারাপ পরিবেশেই আপনি বসবাস করেন না কেন আপনি একজন ভালো মানুষ হয়েই বেঁচে থাকবেন এমন ধরনের ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। ইচ্ছা থাকলেই আপনি পারবেন একজন ভালো মানুষ হতে।

২. বাস্তব হতে হবে : যদিও বাস্তবতা অনেক বেশি কঠিন। তারপরও ভালো মানুষ হয়ে উঠতে বাস্তবতাকে বুঝতে হবে। ধরুন একজন ছিনতাইকারী যদি বুঝতে শেখে যে সে যার ছিনতাই করতে যাচ্ছে সেটি নিশ্চয় তার জীবনের সঞ্চয়। এটিকে ঘিরে তার অনেক স্বপ্ন গড়ে উঠেছে। তাহলে আর খারাপ কাজটি ঘটে না। বাস্তবিকভাবে চিন্তা করলে একজন ছিনতাইকারীও হয়ে উঠতে পারে একজন ভালো মানুষ। তবে এটা ঠিক যে ছিনতাইকারীরও প্রয়োজন থাকতে পারে। কিন্তু উপার্জনের বহু সৎ পথ তার সামনে খোলা পড়ে রয়েছে।

৩. পরীক্ষা চালাতে হবে : ভালো মানুষ হয়ে টিকে থাকতে অনেক ধরনের পরীক্ষা চালাতে হবে। যেমন ধরুন গরীবদের সাহায্য করা, ভালো কাজ করা ইত্যাদি। আপনি ভালো থাকবেন তখনই যখন আপনি পাশের মানুষটিকে ভালো পথের নির্দেশনা দিবেন। এভাবে নানা ধরনের পরীক্ষা চালিয়ে নিজেকে ভালো রাখুন।

৪. শারীরিক ভঙ্গিতে এবং কথায় ভদ্রতা আনতে হবে : আপনি ভালো মানুষ হতে চাইলে স্বাভাবিকভাবে আপনার কথা এবং শারীরিক ভঙ্গিতে ভদ্রতাসুলভ আচরণ আনতে হবে। আপনার ব্যবহারই অন্যদের বলে দেবে আপনি কতটা ভালো মানুষ। যতটা সম্ভব চেষ্টা করুন ভালো ভাষায় কথা বলতে, সবার সঙ্গে ভালো আচরণ করতে। তাহলে আপনার মাঝে খারাপ ধরনের কোনো চিন্তা আসবে না। ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারবেন।

৫. সহযোগিতা করতে হবে : অসহায়দের নানা ধরনের সহযোগিতা করার মত মনোভাব আপনার মাঝে থাকতে হবে। আপনার মন কতটা উদার তা নির্ভর করবে অসহায়দের পাশে আপনি কতটা থাকতে পারছেন। শুধু একা একা ভালো থেকে ভালো মানুষ হয়ে ওঠা যায় না। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে হয়।

৬. ভালো কাজ করুন : সারাদিনে অনেকগুলো ভালো কাজ করার চেষ্টা করুন। খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকুন। এতে করে নিজে ভালো থাকবেন এবং অন্যরাও আপনার কাছ থেকে ভালো কাজ শিখে নিতে পারবে।

৭. সহজভাবে নিন : আপনি ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করবেন বা আপনার পাশের মানুষটি নিজেকে ভালো মানুষ হিসেবে তৈরি করছেন এই বিষয়টিকে সহজভাবে নিন। কোনোভাবেই এটিকে বাড়াবাড়ি বা দেখানো মনে করবেন না। এসব নেতিবাচক ধারণা মনে রাখলে আপনি কোনোদিনও ভালো মানুষ হয়ে উঠতে পারবেন না।

৮. শারীরিক কসরত শিখুন : শারীরিক কসরত একজন মানুষকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। বিভিন্ন ধরনের ঝামেলায় আপনি থাকতে পারেন যেমন ধরুন সমাজের কোনো খারাপ কাজে আপনি মানসিকভাবে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারেন। এমতাবস্থায় যদি শারীরিক কসরতগুলো করতে থাকেন আপনি মানসিকভাবে প্রফুল্ল থাকবেন। কোনো ধরনের সমস্যা আপনার হবে না।

৯. ডায়েরি লিখুন : অনেকেই বলেন ডায়েরি লেখা জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল কাজ। কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন এমন অনেক বিষয়ই সব বন্ধু বা আপনদেরও বলা যায় না। ফলে ডায়েরিতে লিখলে তা মানসিক প্রশান্তি দিয়ে থাকে। ভালো মানুষ হয়ে ওঠার আরেকটি পদ্ধতি হলো আপনি ডায়েরি লিখতে পারেন। এতে করে আপনি চাইলেও কোনো খারাপ কাজ করতে পারবেন না।

১০. ধন্যবাদ বলুন : যেকোনো বিষয়েই ধন্যবাদ বলার চেষ্টা করুন। ধন্যবাদ এমন একটি শব্দ যা আপনাকে অন্যের কাছে ভালো এবং সৎ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। এ কারণে ছোট ছোট বিষয়গুলো থেকে বড় বিষয়গুলোতেও ধন্যবাদ বলার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
আর একটি নৈতিকতার কাজ হলো, মানুষকে কথা দিয়ে কথা রাখা, যে কোন জিনিস আদান প্রদানের ক্ষেত্রে কাহারও সাথে যে ব্যক্তি ওয়াদা ভঙ্গ করে, তাহাকে যেমন আপনি/আমি বিশ্বাসঘাতক বলে পছন্দ করি না, আর এক বার মানুষের কাছে খারাপ হয়ে গেলে বিশ্বাস স্থাপন করাটাই খুবই দুরূহ ব্যাপার। তাই জীবনে চলার পথে মানুষের সৎ থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।