শুকতারা

প্রকাশিত: ২:৫৬ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২০ 454 views
শেয়ার করুন

শুকতারাটা নিভে যাওয়ার অনেক আগেই
বিভাবরী জাগা সুরের আবেশে,
তোমার কন্ঠের মোহমাখা রেশ নিয়ে,
ভেসে আসা ভৈরব তান
শ্রুতিতে বিভোর আমার মনের ভেতরে
যে অনুরণন তৈরি করেছে-
তা আমার খুব পরিচিত,
আগেও আমি মুগ্ধ হয়েছি বহুবার।

উদাসী মনের খেয়ালগুলো
ঘুম কেড়ে নিয়ে জাগিয়ে রাখে সারারাত।
মনোনিবেশ করার চিরাচরিত অভ্যাস না থাকলেও
বেশ অনেকটা জোর করে
“শেষের কবিতা ” নিয়ে বসেছিলাম।
সময়ের জটিলতা আর বয়স বিবেচনায় কিছুই মনে রাখতে পারিনি তার!
অবশ্য,পড়াশোনার সবটুকু মনে রাখবার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি নি কখনও।
ঠিক তেমনটাই ঘটেছে বিগত রাতের বিদ্যাচর্চায়!
পরীক্ষাভীতি না থাকার কারনে
মনে রাখার প্রয়াস মোটেও কাজ করেনি!
কিন্তু যা কিছু পড়েছি তা এতটা সহজে রাত্রি পার করে দেবে ভাবতে পারিনি!

কখন যে রাত শেষ হয়ে গেল
আযানের ধ্বনি কানে এলো,
প্রার্থনা শেষ করেই ঝিরিঝিরি বাতাসে
নিজেকে মেলে ধরবার নেশা পেয়ে বসলো!
বারান্দায় ঝুলানো দোলনায় দোল খেতে বসে
মৃদু সমীরণ ক্ষণে ক্ষণে ছুঁয়ে যাচ্ছিল আমার সবটুকু অস্তিত্ব!
হঠাৎ আনমনে “হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে কুড়াই ঝরা ফুল ” গুনগুন করতেই-
নিখুঁত শুদ্ধ ভৈরবী রাগের সুরের মূর্ছনা
আমাকে স্তব্ধ করে শ্রবণ ইন্দ্রিয়কে জাগ্রত করে দিল অকস্মাৎ!
সুললিত কন্ঠে অনুশীলন আমাকে বিমোহিত করলো
যেন সুরে সুরে সে কন্ঠ আমাকে সুপ্রভাত জানালো!
আমার হৃদয় গহীনে কোমল স্পর্শ অনুভব করালো
নির্ঘুম রাতের সমস্ত ক্লান্তি নিমিষেই দূর হয়ে গেলো!
মন কানায় কানায় ভরে উঠল সুরের প্রশান্তিতে।
যেন নব প্রেম সুধায় সমস্ত মনোজগৎ তৃষিত হলো
তুমি তো জানো এ কন্ঠের সুর আমার হৃদ স্পন্দনের সাথে মিশে একাকার হয়ে আছে!
যা শুনে আমি মুগ্ধ হয়ে বিস্মিত হয়ে
আকুতি রেখেছিলাম ভালবাসার!
সেদিনও তুমি বুঝতে চাওনি-
সিন্ধুর মাঝে বিন্দুর হারাতে চাওয়া ইচ্ছের হাহাকার!
এতদিন পর কি মনে করে বাতাসে ভাসালে
চিরচেনা সেই সুরের মায়াজাল?
জীবনানন্দ হয়ে প্রতিক্ষার প্রহর গুনে
কাটিয়ে দিয়েছি আমি জীবনের মহাকাল!